কবিতা ।। মোঃ আব্দুল রহমান
১. সম্পর্ক
চুড়ির কনকন আওয়াজ
আর নূপুরের ছন্দ
ঝুমকোর আলতো ঝলকানি
ভাঙা ঠোঁটের লিপিস্টিক
কেবল সম্পর্ক ধরে রাখতে পারেনি
আজো সেই গলি পথে
ডাকে মেঘের ভেলায় চড়ে
নিশীথে একাকি
নিষিদ্ধ রাত জাগা পাখির কোলাহলে
এক ফালি চাঁদের আলো
কলঙ্কিত করে জগতের মোহের সম্পর্ক
তার চেয়েও বেশি
ওপারের সম্পর্ক যা আলতো করে
ডাকে প্রকৃতির সমপৃক্তে মৃত্যুকে হাতছানি দিয়ে।
২. বেমানান
অভিধানে এখন পুরো অচল, একেবারে ব্যবহার নেই
ছেলেরা মেয়ের বেশভূষা, মেয়েরা ছেলের
একদিন এই শব্দের গুঞ্জনে ঢ্যাঁড়া পেটানো হত গ্রাম হতে শহর---
ঢাক ঢোল পড়ে যেত
নাম ছিল তখন পুরুষতান্ত্রিক কণ্ঠরোধী সমাজ,
হঠাৎ সমাজ পাল্টালো
আধুনিক সভ্যতার আবিষ্কার হল
এখন সবটাই মানানসই আর অধিকার সমান সমান, কোনো বৈষম্য নেই
আধুনিকতার বাজারে কফিনে সভ্যতার বিবর্তন
নাম পেল বাঁচার --- স্কোপোফিলিয়া,
যা কিছুই হোক সবটাই নিজস্ব ইচ্ছেই হতে পারে
এখন কিছুই আর বেমানান নয়, কেবল শব্দটাই নিজে নিজের বেমানান।
৩. আবর্জনা সাফাই
ডুকরে ডুকরে কাঁদছে ইছামতি
তার হৃদয় কেউ চিনলো না। আধুনিক মানব সভ্যতার কাছে সে পরাজিত। তার রূপ রঙ গন্ধ ছিনিয়ে নিলো আধুনিক সভ্য সমাজ,
ইছামতি অচল হয়ে পড়ে, গতিধারা স্তব্ধ হয়ে যায়,
যদিও সে একটি সুন্দর পৃথিবী বানাতে চেয়েছিলো।
কেন কাঁদছো বসুবতী?
এ চরম অভিশাপ, কিভাবে সইবে ইছামতি
নগর হতে শহর, শহর হতে দেশ
জঞ্জাল আর আবর্জনা ভরাট করে দিল তার হৃদয়!
বিনা শিল্পে শিল্পীর মৃত্যু হল পরিশেষে
যে প্রাণ দিল --- যে বাঁচালো --- যে ছায়া দিল, তাকেই এভাবে মরতে হল
মানবের মনের আবর্জনা সাফাই হবে কবে...
==================
মোঃ আব্দুল রহমান ( শিক্ষক )
বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিমবঙ্গ
পিনকোড - ৭৪২১৬৫
No comments:
Post a Comment