হিসাবে গরমিল
মেঘা চ্যাটার্জ্জী
রাত পোহালেই বড়দিন। ২৫-শে ডিসেম্বর। সমগ্ৰ বিশ্বব্যাপী চ'লছে শুভ বড়দিন উদযাপনের প্রস্তুতি। এই আনন্দমুখর দিনে একমাত্র মেয়ে মিঠির শারীরিক অসুস্থতার খবর পেয়ে বাবা বীরেন্দ্রবাবু মালিকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে, শীঘ্রই বাড়ি ফিরে এলেন। বাবাকে দেখে শয্যাশায়ী মিঠি বলে উঠল....
--- বাবা, আগামীকাল আমার জন্যে কেক আনবে তো? আমি যে কেক খেতে বড্ড ভালোবাসি।
সজল নয়নে বীরেন্দ্রবাবু জবাব দিলেন...
--- তা আনবো বৈকি, তোর জন্যে সবচেয়ে ভালো কেকটা আনবো রে মা!
অসুস্থ মিঠির শুষ্ক ঠোঁটের কোণে দেখা গেল এক টুকরো হাসি।
পরদিন সকালবেলায় যথাসময়ে দোকানের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন বীরেন্দ্রবাবু। দোকানে ঢুকতে যাবেন ঠিক এমন সময়ে এক রূঢ় কণ্ঠস্বর শুনে পিছনে ফিরে তাকালেন। দোকানের মালিক রবীনবাবু চিৎকার করে বললেন....
--- দাঁড়াও! আর এক পা এগোবে না তুমি। বিশ্বাসঘাতক! বেরিয়ে যাও এখান থেকে।
দোকানের হিসাবরক্ষক বীরেন্দ্রবাবু এরূপ অপবাদের কারণ জিজ্ঞাসা করায় মালিক বললেন....
--- তুমি গতকাল দোকান থেকে পাঁচশ টাকা চুরি করে, শীঘ্রই বাড়ি চলে গিয়েছিলে। কিন্তু, আমার শ্যালক হিসাব করার সময় হিসাবে গরমিলটা সহজেই ধরতে পেরেছে। আর তুমি এই দোকানমুখী হবেনা কখনো। তোমার বেতনের এক টাকাও তুমি পাবেনা।
নিরপরাধ বীরেন্দ্রবাবু শূন্য হাতে চোখ মুছতে মুছতে দোকান থেকে চলে গেলেন। মনে মনে ভাবতে লাগলেন, এ-সবই রবীনবাবুর ওই ধূর্ত শ্যালকের চক্রান্ত। কিন্তু, আজ তাঁর পকেট যে গড়ের মাঠ! খালি হাতে কোন মুখে তিনি মেয়ের সামনে গিয়ে দাঁড়াবেন! ভাবতে ভাবতে পথ চলতে শুরু করলেন বীরেন্দ্রবাবু।
=====================
মেঘা চ্যাটার্জ্জী
দক্ষিণ বেহালা রোড, সত্যনারায়ণ পল্লী, ঠাকুর পুকুর, কলকাতা:৭০০০৬১
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন