google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re দুর্গোৎসব সম্প্রীতির উৎসব ।। রতন বসাক - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

বুধবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২৪

দুর্গোৎসব সম্প্রীতির উৎসব ।। রতন বসাক



 সমস্ত রকম বিভেদ ভুলেই একালের মানুষ পুজোতে শামিল হয়

রতন বসাক


প্রকৃতির নিয়ম মেনেই বর্ষা ঋতুর শেষ হতে না হতেই শরৎ ঋতুটা এসে যায় আমাদের দেশে। যদিও ঝড় বৃষ্টির তাণ্ডব পুরোপুরি যায় না। শরৎ ঋতু মানেই নীল আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘের ভেসে চলা। পথে, ঘাটে, জমির আলে কাশফুলের মেলা। মন মাতানো শিউলি ফুলের গন্ধ বাতাসে। আর শিশিরের পরশ গাছের পাতা ও সবুজ ঘাসে। এই সবই আমাদের মনে করিয়ে দেয়, মায়ের আগমনের কথা মানে পুজো আসছে।

পুজো মানেই একটা বছর অপেক্ষার পর আবার এক বিশাল উৎসবের আয়োজন। যেখানে ধনী-গরিব ও ধর্ম বিভেদের বেড়াজাল টপকে এক মহামিলন দেখা যায়। মায়ের পুজোর ক'টাদিন সবকিছু ভুলে শুধুই আনন্দ আর মজা করা। দুর্গা মায়ের পুজো হিন্দুদের হলেও, বিশ্বজুড়ে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মানাতে দেখা যায়।
আসলে একঘেয়েমি জীবন থেকে একটু সরে এসে, আনন্দে মনকে হালকা করে নিতে সবাই চায়। 

প্রায় প্রত্যেকটি মানুষই তাঁর ক্ষমতা অনুযায়ী পুজোর সময় নতুন কিছু কিনবেই। নতুন জামা, কাপড়, জুতো, কিংবা ঘরের কিছু না কিনলে মনে হয় না যে পুজো-পুজো ভাব। তাই পুজোর আগে থেকেই হাট-বাজারে প্রত্যেকটা দোকানে নতুন-নতুন জিনিসের দেখা পাওয়া যায়। বোনাস কিংবা সারাবছরের জমানো অর্থ দিয়েই মানুষ কেনাকাটা করে এইসময়। ব্যবসায়ীরা নানা রকম উপহারও দিয়ে থাকে যাঁরা ক্রয় করে তাঁদের।
 
বেশ কয়েক মাস আগের থেকেই পাড়ার ক্লাবের মাঠে প্যান্ডেল তৈরি শুরু হয়ে যায় মায়ের পুজোর জন্য। কে কতটা সুন্দর প্যান্ডেল তৈরি করে দেখাতে পারে, তার একটা প্রতিযোগিতা চলে এরিয়া অনুযায়ী। পুজোর ক'টাদিন এত সুন্দর পরিবেশ হয়ে যায় যে, মানুষ দুঃখ ও কষ্ট সব ভুলে যায়। সবাই এই ক'টাদিনে মজা আর আনন্দের স্রোতে ভেসে চলে।

একটা খুব ভালো কথা হলো যে, গরিব ও দুখী যাঁদের আর্থিক সম্বল নেই। তাঁদের বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠনের থেকে জামা, কাপড়, ফল ও মিষ্টি দেওয়া হয়। যাতে করে তাঁরাও এই পুজোর সময় আনন্দে শামিল হতে পারে আমাদের সবার সঙ্গে। এ ছাড়াও পাড়া ও গ্রামের আশেপাশে উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন রকম সেবামূলক প্রকল্পও করে থাকে। মায়ের পুজো সার্বজনীন উৎসব হিসেবে পালন করা হয় প্রত্যেক বছর।
    
তাই একালে পুজো দেখা যাচ্ছে নির্দিষ্ট একটা ধর্মাবলম্বীদের জন্য নয়। যে কোনো বিভেদ ভুলেই উৎসব সবাই মিলে মানানো হয়। এই শারদ উৎসবকে ঘিরেই অসংগঠিত ক্ষেত্রে মানুষদের নানা রকম আয়ের ব্যবস্থাও হয়ে থাকে। অল্প আয়ের মানুষদের এই সময় কিছুটা বেশি আয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পুজো ব্যাপারটাই শ্রদ্ধা, ভক্তি ও আস্থার উপর নির্ভর করে চলে। একালের পুজো প্রত্যেকটা মানুষের মনের মধ্যে এক বিশাল আকারে রূপ নিয়ে নিয়েছে।
          


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন