প্রাণের ঠাকুর শিল্পী রবীন্দ্রনাথ
নিবেদিতা দে
আমরা সকলেই কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার, গীতিকার, সুরকার রবীন্দ্রনাথকেই বরাবর জেনে আসলেও শিল্পী বা চিত্রকর হিসেবে তাঁকে ততটাও চিনি না। অথচ গান, কবিতা, সাহিত্যের পাশাপাশি তাঁর আঁকা ছবির ভান্ডার বিশাল। তিনি ষাট বছর বয়েসে ছবি আঁকা শুরু করেন। তাঁর ছবি গুলো সমসাময়িক শিল্পীদের থেকে ভাবনায় ও চেতনায় সম্পূর্ণ আলাদা। তাঁর পুঁথিগত শিক্ষা বা প্রথাগত
শিল্প শিক্ষা কখনোই ছিল না। এইখানেই তিনি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর সময়কালে শৈল্পিক ভাবনা তাঁর জীবন যাত্রায় অনেকটাই ছোঁয়া লেগেছিল।
তিনি যে ভাবে সাজ পোশাক পরিধান করতেন। যে সুন্দর ভাবে গায়ে উত্তরীয় বা শাল নিতেন, সেই সময় তা সকলেই গ্রহণ করতেন বা তাকে অনুসরণ করতেন। রঙ ছিল তাঁর ভীষণ প্রিয়। বর্ষাকালে তাঁর পছন্দের পোশাক ছিল গাঢ় নীল রঙের জোব্বা। শান্তিনিকেতনে বসন্তের আগমনে হলুদ রঙের জোব্বা পড়তেন। প্রখর গ্রীষ্মে জোব্বা পড়ে লেখালেখি করতেন। গরম তাঁকে একটুও কাবু করতে পারত না।
সেই সময়কার ঠাকুর বাড়ির পোষাক ছিল কোলকাতায় ভীষণ জনপ্রিয়। কবিগুরু চায়ের ভীষণ ভক্ত ছিলেন। সুগন্ধি দার্জিলিং লিকার চা ছিল ওনার অত্যন্ত প্রিয়। পড়ার টেবিলে চা সবসময় রাখাই থাকতো। লেখার সময় অল্প করে চা আস্বাদন করা ছিল তাঁর খুব পছন্দের।
কবি গুরুর পোষাক বিলাসিতা নিয়ে, চারিদিকে যে সমালোচনার ঝড় বয়ে যেতো, তা তিনি ভালোই জানতে।
তিনি যে শিল্পী মানুষ। তাঁর শৈল্পিক মন ছুঁয়ে থাকতো নতুন সৃষ্টির উল্লাসে, নতুন ভাবনায়, নতুন চেতনায়। সৃষ্টির কখনো মৃত্যু হয় না। তাই তিনি মানুষের চিন্তনে মননে অমর হয়ে রয়ে আছেন আর থাকবেন।
=============
নিবেদিতা দে
নতুন গঞ্জ বাজার, পূর্ব বর্ধমান
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন