google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত

 

                ভালোবাসার বাসা     



   আমার নিজের জীবনে বাসাবদলের অভিজ্ঞতা অনেকবার ঘটেছে। দেশভাগের পর ওপার বাংলা থেকে আমার পূর্ব পুরুষেরা দমদমে এক উদ্বাস্তু কলোনিতে আশ্রয় নিলেন। আমার জন্ম সেই টিনের চালা, বেড়া আর মাটির মেঝে যুক্ত বাসায়। যৌথ পরিবারের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা অনেক কষ্টের মাঝে। তবে সেই সংসারে মনের দৈন্যতা বা মালিন্য কাউকে স্পর্শ করেনি। বাবা পরিবারে পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় এবং একমাত্র রোজগেরে মানুষ। তখন দশম শ্রেনীতে পড়ি , বাবা সিদ্ধান্ত নিলেন পাকা বাড়ি তৈরি করবেন। আমাদের ভাই, বোনেদের মনে অপার আনন্দ। প্রথম বাসাবদল করে উঠলাম ভাড়াটে হয়ে এক দোতলা পাকা বাড়ির একতলায়। বাড়িওয়ালার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় ছিল। দুবছর পর আবার চলে এলাম চালাঘর ভেঙে গড়ে তোলা একতলা দালান বা পাকা বাড়িতে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কাকাদের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে আমাদের যৌথ পরিবার গেল ভেঙে। বাবা আমাদের ভাই-বোন এবং ঠাকুরদা -ঠাকুমাকে নিয়ে তুললেন আবার এক ভাড়াবাড়িতেই। দীর্ঘ চল্লিশ বছর সেই বাসাতেই আমদের জীবন কেটেছে। ঠাকুরদা, -ঠাকুমা এবং বাবা দেহ রেখেছেন এই বাসাতেই। আমাদের ভাই ,  বোনেদের বিয়ে এখানেই। আমার একমাত্র পুত্র সন্তানের জন্ম,‌ স্কুল জীবন কেটেছে এই বাসাতেই। কালের নিয়মে সে বাড়ি বা বাসা আজ বহুতল। তিনটি বছর আমার স্ত্রী, পুত্র এবং বর্ষীয়ান মাকে নিয়ে কাটালাম আর এক ভাড়াবাড়িতে। সেখানেই আমার পুত্রের কলেজ জীবন। এরপর আবার ফিরে আসা সেই বহুতলের একতলায় হাজার স্কোয়্যার ফিটের গন্ডী বদ্ধ আস্তানায়। এখানে এসেই আমার ছেলের কর্ম প্রাপ্তি। দীর্ঘ রোগভোগের পর মায়ের মৃত্যুও সম্প্রতি ঘটে গেল। সত্যিই জানিনা এই বাসাতেই আমার বাকি জীবন কাটবে কিনা ? আরও কি পরিনতি জীবনদেবতা আমার জন্য সাজিয়ে রেখেছেন তা ভবিষৎই বলবে। সকলের বাসা ভরা থাক চিরন্তন ‌ভালবাসায়।

 =====================

           মানস কূমার সেনগুপ্ত, ১৭/৮, আনন্দ মোহন বসু রোড , দমদম, কলকাতা ৭০০০৭৪

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন