Featured Post

কবিতা ।। লোকউৎসব নববর্ষ ।। মো. নজরুল ইসলাম

ছবি
লোকউৎসব নববর্ষ  মো. নজরুল ইসলাম চৈত্রের শেষে পয়লা বৈশাখ  ফিরে যখন আসে,  ধনী গরীব সকল লোকের  মন খুশিতে ভাসে।  সারা বাংলা উৎসব মুখর  খুশির দোলা জাগে,  সবাই মিলে পয়লা বৈশাখ  মনের তৃপ্তি লাগে।  পুরাতনের জীর্ণতা আজ  আমরা যাবো ভুলে,  নববর্ষের বার্তায় জীবন  সত্য ন্যায়ের কূলে।  মানবতার আবাদ করতে  দৃঢ়তার বল মুখে,  মিলেমিশে সোনার বাংলার  সবাই থাকব সুখে।  সার্বজনীন লোক উৎসবে  অশান্তি যাক দূরে,  বাংলার প্রতি ঘরে বৈশাখ  আসুক বছর ঘুরে।  #. কাব্যশ্রী মো. নজরুল ইসলাম  গ্রাম - তিনচৌদিয়া  ডাকঘর - পোমরা - ৪৩৬০  উপজেলা - রাঙ্গুনিয়া  জেলা - চট্টগ্রাম  বাংলাদেশ  মোবাইল - 01743789740 

মানসী বিশ্বাসের মুক্তকথা




"আ মরি বাংলা ভাষা"




খাবার টেবিলে পাঁউরুটিতে বাটার মাখাতে মাখাতে চিন্তার পাহাড় জমেছে সুধার।আজ গোগোলের রেজাল্ট। মাধ্যমিকের রেজাল্ট আজ।গোগোলের রেজাল্ট নিয়ে চিন্তা বলা ভুল, কোন পজিশন–কত র‍্যাঙ্ক এসব মাথায় ঘুরছে সুধার।একমাত্র ছেলে কিনা। একটু কিছুতেই চক্ষু চড়ক গাছ হয় ওর।দেখা যাক...এই ভেবে মনে মনে 'জয় মা তারা'বলে উঠল সুধা।

বাথরুম থেকে স্নান সেরে এসেছে গোগোলের বাবা নিলয়।খুব টেনশনে আছে সেও।সুধার দিকে তাকিয়ে বলল —"এখনো ঘুম থেকে ওঠেনি তো?তোমার ওই বাঁদর ছেলে?পড়ে পড়ে বেলা ৯টা অব্ধি ঘুমোক। আজ রেজাল্ট কোন ভ্রুক্ষেপ আছে? কী জানি!...

"আ!তুমি টেনশন করো না।গোগোল তো স্কুলে ফার্স্ট হয়।এবারেও..." কথাটা থামিয়ে দেয় নিলয়।বলে,"এটা স্কুল নয়,রাজ্য।রাজ্যতে ওকে ফার্স্ট হতে হবে।"

সকাল দশটা।বারোটায় রেজাল্ট হাতে এলেও,অনলাইনে ছেড়ে দিয়েছে রেজাল্ট। এই সময় নেটওয়ার্ক সার্ভিসেরও কিছু সমস্যা দেখা হয়।"ঠিক সময়েই কেন যে টাওয়ার পাই না,বুঝি না"—বল্র গটগট করে ছাদে চলে যায় নিলয় টাওয়ারের আশায়।অগত্যা সুধা টিভি খুলে বসে।আনন্দ সংবাদ চোখে ভেসে ওঠে। চোখ জুড়িয়ে যায় ওর।একছুটে ছাদে গিয়ে জানায় সুখবরটা। 

আজ অনেক সকালেই গোগোল উঠে পড়েছে টেনশনে।র‍্যাঙ্ক কত হবে,এই ভেবে সারারাত ঘুমই আসেনি ওর।ভোরের দিকে যদিও আসে, তা পরক্ষণেই ভেঙে যায়।যা হোক, পা টিপে টিপে ছাদে উঠে শুনতে পায় মায়ের দেওয়া সুসংবা। বাবা শুনল।দুচোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে আনন্দে,আহ্লাদে।

তিনটে চ্যানেল, সংবাদ মাধ্যম ইতিমধ্যে এসে গেছে রাজ্যের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানাধীকার আবাহন বসুর বাড়িতে।আবাহন বসু।যার বাড়ির ডাক নাম গোগোল।সুধা,নিলয় আর গোগোলের সাক্ষাৎকার নেওয়া হল।মুখে হাসি এনে দাঁতে দাঁত চেপে নিলয় ছবি দিল সাক্ষাৎকারে। গোগোল এখনও বুঝে উঠতে পারে না ওর বাবার রাগ কিসে! সুধাও বোঝেনা।

মাধ্যমিকএর রেজাল্ট বেরনোর দুমাস আগে থেকেই সায়েন্স নিয়ে পড়া চালু করে দিয়েছে গোগোল।অঙ্কের স্যারের কাছ থেকে ফিরতে আজ একটু রাতই হউ। স্যর গোগোলের তরফ থেকে সকলকে বেশ ভালোই খাওয়ায়।রাতে বাড়ির দরজা খুলে ঢুকতে ঢুকতে শুনতে পায়, শোয়ার ঘর থেকে বাবা মায়ের চিৎকার আসছে। পা টিপে টিপে যায় ওদিকে। কথা শুনে অবাক হয়ে যায়।বাবা বলছে—"অঙ্কে হান্ড্রেড, ফিজিক্সে হান্ড্রেড, লাইফ সায়েন্সে হান্ড্রেড, ইংরেজি,ইতিহাস, ভূগোলে হায়েস্ট মার্কস... শুধু এই ছাঁই পাঁশ সাবজেক্টএর জন্য আজ ও র‍্যাঙ্ক টু করল।না হলে আদিত্য কে হারাত।ফার্স্ট পজিশন ও নিজেই পেত।কথা শেষ হবার সাথে সাথে মুখে একটা চুক চুক শব্দ করে নিলয়।

ওদিক থেকে সুধা বলে,"তুমি এমন কেন বলছ।সাবজেক্টতো।খুবই ভাল।মাতৃভাষা,মাতৃদুগ্ধ সম আমাদের কাছে।এ নিয়ে কত লড়াই,কত সংগ্রাম,কত বীরগাথাও আছে...
ডান হাত দেখিয়ে সুধাকে থামিয়ে দেয় নিলয়।বলে,"রাখ তো তোমার ওই জ্ঞান।বাংলাটা গুলিয়ে যেত গোগোলের। আর বাই দ্যা ওয়ে বাংলা জেনে কিই না হবে?প্রফেস, ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার...হবে?বাংলা জেনে কিচ্ছু হবে না।আমি ফার্স্ট র‍্যাঙ্কএর জন্যে বাংলা টাকে মুখস্থ করতে বলেছিলাম।তুমি ওকে একটু গুরুত্ব দিতে পারতে বাংলাটায়।

সুধা বলে,"তুমি বাংলা কে নিয়ে এমন কেন বলছ?অপমান কেন করছ?আরে,আইন্সটাই, স্টিফেনহকিং শুধু না...রবি–নজরুল–শরৎ  এঁনারাও আছেন।"

"ওই ওরা? তুমি ওদের উদাহরণ দিচ্ছ? কি হবে? সেই এক গাওনা? তুমি খুব ভাল করে জান আজকাল এই সাবজেক্ট টাকে কেউ গুরুত্ব দেয় না।বাংলার গুরুত্ব কে দেয়?সায়েন্সের একজন লেকচারার কে যা সম্মান দেওয়া হয়, বাংলার লেকচারার, শিক্ষককে কিছুই দেওয়া হয়। এতো সিম্পল,সহজ,জানা কথা।"

তর্কযুদ্ধ চলতেই থাকে।

এক বুক দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে গোগোল বোঝে, র‍্যাঙ্ক এক হোক বা দুই এ যুদ্ধ ছিল, আছে, থাকবে।

"বাংলা আজ ধরনীর মাটিতে লুটিত
তাকে নিজের পায়ে দাঁড় করানো যথেষ্ট কষ্ট।
দুখিনি আমরা সবাই,দুখিনি আমার বাংলা মা
দুখিনি আমি কারণ তার জন্য কিছু করছি না।।"             
                                                                    
========================================


©মানসী বিশ্বাস। 
জলাঘাটা,সিঙ্গুর, হুগলী। 
পিন:৭১২৪০৯

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল