Featured Post
মুক্তগদ্য ।। রুচিরা দাস
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মানদণ্ড Vs.রাজদণ্ড
অপরাধ ততটাই সমানুপাতিক যতটা শৈশবপ্রসূত একটা ইচ্ছে, যতক্ষণ না অদৃশ্য একটা বারণ অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। সমস্ত খেয়ালের উৎসকেন্দ্র একই হওয়া সত্ত্বেও তা সামাজিকভাবে আলাদা। অথচ, কে যে একটা একটা করে দাঁড়ি টানে তা অজানাই থেকে যায় মাঝে মাঝে। কোথায় শিকল আর কোথায় দিতে হবে শিরস্ত্রাণ তার মানদণ্ড কার হাতে? মনে আছে হীরক রাজার সেই অকপট শিকারোক্তি?
ভাল মন্দের বিচার করে কে?
-রাজা।
এবার প্রশ্ন হলো রাজাটি কে? যার হাতে মানদন্ড, সেই রাজা। আশ্চর্য ব্যাপার হল এই- যে সব রাজারা একই ছাঁচে গড়া। অথবা মানদণ্ড হাতে এলেই সব জল গড়িয়ে এক ঘটিতে গিয়ে পরে। রাজা হওয়া আর বিচারেরর মান তৈরীর মধ্যে একটা দারুন মজা আছে। কিছু বিচার হবে জনস্বার্থে আবার কিছু তাঁর ইচ্ছায়। এই যেমন চুরি ডাকাতি রাহাজানি খুনেতে যে বিচার তা সবার জন্য সমান। যদিও স্থান কাল পাত্র হিসেবে তা এদিক ওদিক হলেও হতে পারে। মানে ধরুন আপনি যদি হাড়হাভাতে ফুটপাতবাসী হন, আর বড়লোকের চাকার তলায় আসেন আপনি আহাম্মক। কে বলেছিল রাস্তাঘাটে পরে থাকতে? আবার এই আপনিই যদি বড়লোকের ব্যাটা হন আর কোন সাইকেলওয়ালা আপনার নুনছালও উঠিয়ে দেয় সেই আপনিই গর্জে উঠবেন- ধর, শালা শুয়োরেরর বাচ্চাটাকে।
এবার আাসা যাক বিচার অযোগ্য সেই সব অপরাধ যাদের অন-স্পট বিচার হয়।ফার্স্টট্র্যাক কোর্টের চেয়েও ফার্স্ট। এই যেমন ধরুন আপনি মেয়ে আর রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছেন মনের সুখে। আপনি বিপথগামী, অর্থাৎ ভ্রু কোঁচকানো চোখগুলো নিঃশব্দে আপনাকে বলতেই পারে গিল্টি গিল্টি, গিল্টি। আপনার শাড়ীর ফাঁক দিয়ে কটিদেশ দেখা যেতেই পারে, তা বলে জিন্সের ফাঁক দিয়ে দেখা যাবে কেন? অতএব, গিল্টি।
আপনি যদি ছেলে হন আর বৌ মরলে কাঁদেন, এটা আপনার মেয়েছেলেমি। বৌয়ের পয়সায় বসে খেলে ঢ়্যামনা, আর চাউমিন খেলে রেপিস্ট। পাড়ার বিল্টু, পল্টুদের সাথে মদ গিললে স্টাড আর মেয়ে বন্ধুরা থাকলে আপনি মাগিবাজ। অতএব- গিল্টি গিল্টি গিল্টি।
এবার ধরুন, সমুদ্রতটের গরম বালির ওপর শীতল সাগরকে গোড়ালি দিয়ে স্পর্শ করছেন, অথবা পাহাড়ের নরম কুয়াশায় শরীর ডুবিয়ে দিচ্ছেন। এ আপনার ইচ্ছা। আহা মনোরম সব ইচ্ছা।সেই আপনিই আর আপনার বান্ধবী আপনাদের সমস্ত মান্যতা নিয়ে আবিস্কার করতে চান একে অপরকে। এও তো আপনাদেরই ইচ্ছে। অথচ,কান পাতুন। এবারও উড়ে আসছে গিল্টি গিল্টি গিল্টি।
এবার এক ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিন দেখি রাজাটাকে। মানদণ্ড গলিয়ে জাদুলাঠি বানিয়ে তুলে নিন হাতে হাতে। বলছেন জঙ্গলেরর রাজত্ব চলবে এবার? সেখানে বন্যতা থাকতে পারে, নৃশংসতা নেই। একই নদীতে ওরা জলও খায়, ঘাড়ও মটকায়। সুযোগই তো বাঁচতে সেখায় ওদের। সুযোগের সৎ ব্যবহার বলতে আপনি যা বোঝেন তা আসলে অসৎ ব্যাবহার। একটু ঢিল দিলে ভোকাট্টা হবার চান্স অনেক কম। একবার ইচ্ছের ভেতর সামাজিকতা বের করে ব্যক্তিত্ব ঢুকিয়ে দেখুনই না। অপরাধের পারদ নামলেও নামতে পারে।
আর না নামলে? "থোর বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোর" জীবনই তো বেঁচে এসেছেনই তাই বাঁচুন। অন্যকেউ এসে আপনার রাজার গলা টিপে ধরলে কমপ্লেক্সে কাটাবেন বাকিটা জীবন। এটাকেই তো আপনারা আদর করে নস্টালজিক বলে ডাকেন।
=============
রুচিরা দাস
১০১। কানাগড়, আদর্শনগর
পোস্ট অফিসঃ ব্যান্ডেল
জিলাঃ হুগলী
পিন নং- ৭১২৩১২৩
সহযোগিতা
কাম্য এই সংখ্যার সমস্ত লেখা একত্রিত করে একটি
সুসজ্জিত ইবুক তৈরি করা হয়েছে। আপনি যদি সংগ্রহ করতে আগ্রহী হন তাহলে ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬
নম্বরে ন্যুনতম ১০ টাকা google pay, phonepe, paytm, freecharge বা amazon pay করতে
পারেন। প্রদানের স্ক্রীনশট ওই নম্বরে whatsapp করলেই ইবুকটি পেয়ে যাবেন। সহযোগিতা
কাম্য। |
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন