অনিলদা স্টেশনে দারুণ ঝালমুড়ি বানায়।অফিস থেকে ফেরার পথে ট্রেন থেকে নেমেই এক ঠোঙা সঙ্গে একটার জায়গায় দুটো নারকেলের ফ্ল্যাগ।আর এক ঠোঙা রিতিশার।ভিড়ে প্রথমে তো নাগালই পাওয়া যায় না।বাঁধা ডেলিপ্যাসেঞ্জারের জানলা থেকে হাঁক।বৃষ্টি,শীত,ঝড় তোয়াক্কা না করেই শাটার, কাচের ফাঁক দিয়ে লেনদেন।নাইলনের ব্যাগে রেডি ঠোঙা আর দামের হাতবদল।বারোমাস মাথায় গামছা জড়িয়ে বিকেল থেকে রাত অব্দি অনিলদা সকলের টক-ঝাল-মিস্টি হিরো।শুধু মুড়ি বিক্রি নয়, হেসে প্রত্যেকের ফেরার সময়ের গরমিল আর মনের খবরের খোঁজ নেয়।এবারে ডিসেম্বরে শীতের দেখা নেই।এসে জুটেছে নিম্নচাপের আপদ।সকালে মেঘলা,দুপুর থেকে ভীষণ ঝড়,বিকেলে চারিদিক কালো আর তুমুল বৃষ্টি।রাস্তায় জল।কোন রকমে স্টেশনে ঢুকেই দেখি ভিড়।ঝড়ে তার ছিঁড়ে ট্রেন বাতিল।যাহোক মালতিপুর স্টেশনে পৌঁছুলাম রাত এগারোটা নাগাদ।দু একজন নেমেছে।প্ল্যাটফর্মের আলো সব জ্বলছে না।অন্ধকারে একপাশে হাসিমুখে অনিলদা দাঁড়িয়ে।বিশেষ বাক্সটা নেই।হাতে সেই নাইলনের ব্যাগ।ভিজে গা,পায়ে যেন কাদা,মাথার গামছা কেমন এলোমেলো।দুটো ঠোঙা এগিয়ে ভাঙ্গা স্বরে বলল-কিরে অংশু,নিম্নচাপের তোড়ে ভেসে এলি?মন্ডলপাড়া দিয়ে ন্য়,গয়লাগলি ধরে বাড়ি ঢুকে বউমার সঙ্গে খাস।দরজায় রিতিশা।ঝালমুড়ির ঠোঙা দিতেই ছুঁড়ে ফেলে ককিয়ে কেঁদে ওঠে আর চমকে বলল-বিকেলে মন্ডলপাড়ার রাস্তায় গাছ পড়ে,ইলেকট্রিক শক লেগে অনিলদা আর নেই।
=============
সৌমিক ঘোষ
৬৭/জি;জি.টি.রোড(পশ্চিম)
শ্রীরামপুর – ৭১২ ২০৩,হুগলী ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন