google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ

হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ


জন্মদিনে


পায়ে পায়ে অনেক দূর হেঁটে আসা হলো
চারিদিকে ইলেকট্রন কণা অমোঘ নিউক্লিয়াস
কত কত অমরকাহিনী নদী উপকূল আসমুদ্রহিমাচল
এবারো এই অতিমারির কালেও বন্দনা জেঠিমা
পাঠিয়েছেন মুগসামালি
আমাদের পাড়ার মজুমদার কাকীমার হাতে
যে না কচুর শাক খেয়েছে
তার জীবন ই  বৃথা,তিনিও পাঠিয়েছেন গরম গরম
আর চন্দননগর থেকে রাঙাপিসিমা পাঠিয়েছেন
এক টুকরি গোপালভোগ...
...
যার যেমন সামর্থ্য ,কেউ কাঁচা লঙ্কা
কেউ গন্ধরাজ লেবুর চারা
কেউ আবার সারপ্রাইজ, মেঝেতে শোয়ানো হাতপাখা
নীহারিকালোক থেকে মেজো মাসি পাঠিয়ে দিয়েছেন
আমার সবচেয়ে ফেভারিট পাটিসাপটা ..
...
খুব হালকা করে গান বাজছে আজ 
রবীন্দ্রনাথের গান
তুমি ডাক দিয়েছো কোন সকালে
কেউ তা জানে না ...
আমার শরীর উড়ে যাচ্ছে, পালকে ভর করে
ভালবাসার মতো হাওয়া আর মেঘ
আমার জীবনকে অশেষ করেছে
পর জন্ম বলে কিছু আছে অনিমেষ...



ফুটলো ছাতিম


অবিরল বৃষ্টির ধারায় মেঘ ভেসে যাচ্ছে
কে তুমি দীপাধার
শোনাও এখনও মেঘবালিকার গান
প্রতিবেশীর প্রতিবেশিনী ,ভাইয়ের বান্ধবী...প্রেমিকা

কে তুমি মহাকাল ?
সূর্যাস্ত থেকে কথা বলো 
চিবুকে জ্বলন্ত সূর্য, পোড়া ছাই
বুকে বাদামি তিলের আভা ...
...
আমাকে  ঘুমন্ত দেখে তুমিও কি ঘুমিয়ে পড়েছো শোকাকূলা ...সকাল সকাল...
দিশাহীন আমার ভেতরে তাই
ফুটলো ছাতিম ...
অবিকল মানুষের ভাষায় কথা বলে গেল
বোধ হলো আনন্দ ক্ষণিকমাত্র
তারপর দু:খের ছায়া
সেই ছায়া অন্ধকারে যদি মুখে এসে পড়ে
এইসব চিরকাল, অনন্ত গোধুলী তবে ...



শেকল বেঁধোনা


আমরা যখন লিখতে এসেছিলাম তখন
কেউ এসেছিল গ্রাম গঞ্জ থেকে পায়ে হেঁটে
কেউ বা এসেছিল সাইরেন বাজার পরপরই
কেউ এসেছিল সুরম্য রাজপ্রাসাদ ছেড়ে
কেউ এসেছিল চাকরি বাকরির অদম্য 
সুরক্ষাকে  লাথি মেরে
কখনো প্রেমিক
কখনো প্রেমিকাকে ছেড়ে গেছে একে অপরের
আজ এতদিন পরেও মনে হয়
কবিতা লিখতে এসে
সেই চায়ের টেবিলে গোল হয়ে বসা 
রাতের পর রাত,দিনের পর দিন
ঢেউ এসে মুছে দিয়ে গেছে বালিতে লেখা নাম
একথা জেনেও আমরা বলেছিলাম
আমাদের হাতে শেকল বেঁধোনা,প্লিজ ...


প্রেমিক প্রেমিকা


ভালবাসা ঠায় বসে থাকে প্রেমিকার অগম্য সিথিতে,প্রেমিক বোঝেনা
সে খোঁজে দেহ মন আশরীর একসঙ্গে অকুন্ঠ ভ্রমর
আর ঠিক তখনই নৌকা থেকে বৈঠা পড়ে যায়

আশেপাশে যারা থাকে তারা দেখে অন্ধকারে
জ্বলন্ত ফসফরাস...
ভালোবাসা ঠায় বসে থাকে
সিংহাসন থেকে একটু নিচে পাথরের উপর
করমচা রঙের হাত মেলে সে চায়
শুশ্রষা, লোকচক্ষু থেকে দূরে

এসব প্রেমিক বোঝেনা
সে শুধু চায় সর্বস্বত্ব, সসাগরা রসাতলে যাক
আদম ইভ রতিসুখে চূড়ান্ত আশ্লেষ ...


উৎকন্ঠা


সমতলে পাহাড়ে লোকালয়ে কঁাধে হাত রেখে
যদি কেউ বলে হয়তো‌ বাতাস কিংবা
পাহাড়ের রডোডেনড্রন
দেরি হলো কেন এত ?
কী জবাব দেবো,বলো _তখন থিরথির করে কাঁপে জল ও...পুরনো বেদনা ভুলিয়ে দেওয়া আরেক
বেদনার মতোই ছবি ও আয়নার মধ্যে তখন
উত্তাল সমুদ্র ঠিকই
বস্তুতঃ যা শরীরের, নগ্ন স্ফিত এবং মেকী...
রঙিন উৎকন্ঠা নিয়ে তবু জেগে উঠতে হয় প্রতিদিনই
দর্শন ও বিতর্কের মধ্যে
সমতলে পাহাড়ে লোকালয়ে
কাঁধে হাত রেখে আজীবন
...ফিরেছিস খোকন ?
 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন