google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re অণুগল্প ।। সেবা ধর্ম ।। বীরেন্দ্র নাথ মহাপাত্র - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৪

অণুগল্প ।। সেবা ধর্ম ।। বীরেন্দ্র নাথ মহাপাত্র

 

সেবা ধর্ম

বীরেন্দ্র নাথ মহাপাত্র 


আজকে সুহাস দাদু ও ঠাকুরমা (সতীশ, সরমা)-কে ফোনে প্যারিস থেকে খুশী মনে জানাল যে তোমাদের সকলের আশীর্বাদে আমি পদার্থ বিদ্যার উপরে PH.D  ডিগ্রী নিয়ে গবেষণা করার কৃতিত্ব অর্জন করেছি, তাই আমি বেছে নিয়েছি আমার স্বদেশ ভূমি I.I .T খড়গপুরে গবেষণা করব, বাবা ও মা (সুকেশ, সুষমা ) ওরা নিউইয়র্কে থাকছে,ওরা আর হয়তো ফিরে যাবে না,যদি ও ওরা দুইজন অবসরপ্রাপ্ত। আমি কিন্তু প্রথমে তোমাদের সঙ্গে দেখা করব, দেখা করে তোমাদের আশীর্বাদ নিব, খুব ইচ্ছা আছে ঠাকুরমার হাতে সেই দুধের ক্ষীর করে খাওয়ানো, সেই ওনার হাতের খাওয়ানো কোন মতে ভুলতে পারি না, পরে সেই বিপ্লবী ক্ষুদিরামের মর্মর মূর্তিকে প্রনাম জানিয়ে তবে স্বদেশ ভূমি অর্থাৎ মেদিনীপুরে তে ফিরব ।
                                     যথা সময়ে সুহাস স্বদেশে ফিরল, তবে তিনটি ফুলের মালা নিয়ে একটি শহীদ ক্ষুদিরামকে গলায় পরিয়ে এবং প্রনাম করে পরে আর দুটি মালা দাদু ওঠাকুরমাকে গলায় পরিয়ে আনন্দমনে প্রনাম করল । সত্যি সত্যি ওর ঠাকুরমা সরমা কাঁপা হাতে বাড়ির কাজের লোক হরিকে এক কেজি দুধ আনিয়ে ক্ষীর করে নিজের হাতে নাতিকে খাওয়ালেন ।
             এবার দেশের খাওয়া ডাল, ভাত, মাছ ভাজা,চাটনি ও একটি মুড়া দিয়ে বৈতালের ঘন্ট হরিদার হাতে রান্না করা খাওয়ার তৃপ্তি ভরা মনে খেয়ে রাতে ঘুমিয়ে পড়ল । পর্ দিন সকালে বাসে করে খড়গপুর বোগদায় এসে ওখানে টোটো ধরে I.I.T তে পৌঁছলাম । সেখানে এসে ওই প্যারিসের ডিপ্লোমা ও নিজ ইচ্ছায় এখানে গবেষণা করার অনুমতি দেখাতেই ওখানে ঊর্ধ্বতম কর্তৃপক্ষ গণ সবাই আনন্দ মনে গ্রহণ করলেন এবং ওখানে কাজ করার সমস্ত কার্যালয় দেখিয়ে খুব শীঘ্র জয়েন যাতে করতে পারে তার অনুমতি পত্র এবং থাকবার বিশেষ ব্যবস্থাদি সম্পন্ন  করে দিলেন ।
                          তবে সুহাস একটু হাতে সময় নিল,কারণ ও - জানে কলেজ থেকে গাড়ি মেদিনীপুর যাতায়াত করে, তাই বেশ কিছুদিন দাদু ও ঠাকুরমার সেবাধর্ম করা থেকে বঞ্চিত যাতে না হয়, কারণ ওনাদের ছেলে অর্থাৎ বাবা সুকেশ বাইরে চাকুরী করলে ও বাবা ও মায়ের প্রতি সেবাধর্মতে বিরাট অবহেলা করেছেন, মাঝে মাঝে ছুটি পেলে ও ওনার দেখা করা তার সঙ্গে সহানুভুতি দেখানোর বিরাট অভাব ছিল, সেইটাকে নাতি হয়ে ওনাদের শেষ বয়সে সেবাধর্ম যাতে কোন প্রকার অসুবিধা না হয়,সেটাই সুহাস মনে প্রানে চাইল ।
                           দাদুভাইয়ের এই সহানুভূতি তাঁরা খুশী মনে গ্রহণ করলেন এবং আশীর্বাদ করতে করতে কেঁদেও ফেললেন ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন