কবিতা চর্চা
রবিবার সকালে বাজার করে ফিরছি আমাদের আবাসনের পরিচালক সমিতির সদস্য রবিশংকর বাবুর সাথে দেখা ।
মশাই আমাদের আবাসন থেকে এবার পুজোয় পত্রিকা বার করার কথা ভাবছি ।
তা ভালো তো ।
সে বললে তো হবেনা আপনার লেখা চাই।
এই মরেছে আমি লিখতে পারিনা যে ।
যা পারেন তাই লিখুন এখানে কে আর রবীন্দ্রনাথ ।
সকালে কাজের মেয়ে এক কাপ চা দিয়ে গেছে । খবরের কাগজ পড়া হয়ে গেছে । এখন মনের খাতায় লেখার খসরা চলছে।
র্গোল ফুটবল কুমরোপটাশ
আর কি নামে ডাকি
আর এক কাপ চা দাও তো ।
এখন চা হবে না রান্না হচ্ছে ।
গুষ্টির পিণ্ডি হচ্ছে ! (অবশ্যই স্বগতোক্তি)
আমি আবার পদ্য লেখার চেষ্টা শুরু করি;
মনের খাতা থেকে মুখে এসে গেছে;
র্গোল ফুটবল কুমরোপটাশ
আর কি নামে ডাকি
আর কি নামে ডাকি
কোথায় গেল সেই প্যাঁচাটা
আমায় দিয়ে ফাঁ....
বলি আর কত নীচে নামবে ।গিন্নীর কণ্ঠ কানে এল ।
মানে !আমি হতবাক্ ।
মানে বুঝতে পারছনা ? আর কত ঢং করবে
বয়সের তো গাছ পাথর নেই । ছিঃ তোমার সংগে আর থাকা যায় না । এক কাপ চা দিতে দেরী তার জন্য এ ভাবে অপমান করবে ?
কি জ্বালা রে বাবা ; কখন আবার তোমাকে অপমান করলাম ।
ন্যাকা সেজোনা বলছি - কুমর পটাস ডাকি , বলছিলে এক্ষুনি ;দিন কে রাত করে ছাড়বে!
আমাকে পছন্দ নয় তো দেখো না কোনো কলকাতা সুন্দরী পাও কি না।
আরে বাবা আমি কবিতা লিখছি !
আমাকে বোকা বুঝিও না ।তুমি আর কবিতা!
কাক কোকিলের মত
কুহু ডাকতে চায়
কর্কশ ডাক শুনে
পিলে চমকায় !
পাশের ফ্ল্যাট এর বারান্দা থেকে বিভুতি ডাক দিল- ও দাদা ও বৌদি ঝগড়া করছেন কেন ।
আরে নানা আমরা কবিতার প্রতিযোগিতা করছি ।
তাই না কি! আমাদের পত্রিকায় সে সব চাই কিন্তু । আপনাদের যুগল পদে্যর শীষর্ক কি ?
কত্তা বনাম গিন্নী ।
চালিয়ে যান দাদা বেশ লাগছে ।
দুর বাবা নিজের বাড়িতে বসে কবিতা লেখা যাবেনা ! কিন্তু অবাক কান্ড গিন্নী তো মুখেমুখে দিব্যি কবিতার ভাষায় গাল দিয়ে দিল ।
ফুটবল বা কুমরোপটাশ কোন নামে যে ডাকি
কোথায় গেল সেই প্যাঁচাটা
আমায় দিয়ে ফাঁকি !
আনন্দে লাফিয়ে উঠলাম , বাঃ দারুন ছন্দমিলে পদ্য ।
আহ কী জ্বালাতন থামতে চায়না
ডেকেই চলে কাক;
থামো এবার নয়তো ভাংব
তোমার চক চকে ঐ টাক ।
আমি তো কবিতা লিখছি কিন্তু তুমি বকে চলেছ কেন বলো তো । যাও না রান্না কর ।
না যাব না; তুমি দুটো লাইন লিখলে আমি চারটে লিখব । শুনে রাখ তুমি যা কিছুই করতে গারো সেটা আমি আরো চারগুন ভালো করতে পারি ।
বটে !
নিশ্চয় কিছু বলিনা বলে আমাকে অবলা ভেবনা ।
তুমি আর অবলা ! যে বলে সে আহাম্মক । এতো বছর ঘর করছি হাড়ে হাড় টের পাচ্ছি ।
যাক সে কথা;
আমি মনে করছি এক জোরা পালোয়ানি গোঁফ আর চাপ দাড়ি রাখব ।
চোখ দিয়ে যদি ভষ্ম করা যেতো তাহলে আমি এতোক্ষনে পুড়ে ছাই ।
সেদিনের মতো কবিতা চর্চার ইতি ।।
==========================
সান্ত্বনা চ্যাটার্জী
এ১৬৬ লেক গার্ডেন্স
কলকাতা ৭০০০৪৫
৯৮৩০৩২২৬০১