Featured Post
গল্প।। মিথ্যে বসত ।। আবদুস সালাম
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মিথ্যে বসত
আবদুস সালাম
একটা বোমা যেমন নিমেষে বদলে দিয়েছিল হিরো সীমার মানচিত্র ।
সরাসরিভাবে সরকারি আ্যকাউন্ট থেকে নাকি টাকা উধাও।
তিনি নাকি টাকা তশ্রুপ করেছেন।
তেমনি নবীন বাবুর তিরিশ বছরের চাকরি জীবনের সব সুনাম যেন ধুলায় মিশে গিয়েছে।সবার মুখে তুবড়ি র মতো ফুটে চলেছে একথা সেকথা ।উথাল পাথাল ঝড়। সারা শরীর বেয়ে নেমে আসছে ঘাম। মাথা ঝিমঝিম করছে। ভরা শীতের দিনে যখন সবাই দুটো করে সোয়েটার পড়তে চাইছে তখন নবীন বাবুর এক নাগাড়ে ঘেমে চলেছেন। চোখ মুখ দিয়ে ধোঁয়া বেরুচ্ছে।
" দীর্ঘ বিশ বছর যাদের সাথে ঘর করলাম।যারা আমার সব সময়ের ঝড়ঝঞ্ঝা র সঙ্গী, তাদের মুখে এই কথা । তাহলে কি ওদের সাথে মিথ্যের দেওয়াল সাজিয়ে বসত গড়লাম ।"
কিছুতেই বুঝে আনতে পারছিলেন না নবীন বাবুর। মনে হচ্ছিল মাটি ফাঁক হয়ে গেলে এক্ষুনি ঢুকে পড়বেন।
কয়েক জন সহকর্মী আর গ্রামের কিছু লোকদের জড়ো করে চলছে তার শ্রাদ্ধ পর্ব। বসেছে বিচার সভা। লোকের মুখে তো আর লাগাম নেই ।যে নেতারা এতদিন ধারে কাছে আসতে পারতো না তারা আজ সুযোগ পেয়ে গেছে। বিভিন্ন জন ছুঁড়ে দিচ্ছে বিষাক্ত মন্তব্য। তুবড়ির আলোয় ঝলসে যাচ্ছে মুখ।
নবীন বাবু কাকুতি মিনতি করে বলছেন দেখুন আপনাদের কোথায়ও ভুল হচ্ছে। টাকা পয়সার ব্যাপার ।অযথা এভাবে আমাকে আপনারা হেনস্থা করতে পারেন না ।
"আর অমনি তীর্যক বান ছুটে আসছে , বেটা চোর। বেটা এতোদিন ডুবে ডুবে জল খাচ্ছিল। আমরা কেউ টের পাচ্ছিলাম না। বেটা ধড়িবাজ। বেটার মিষ্টি মিষ্টি কথা,আর তলে তলে টাকা লোপাটের ওস্তাদ।মার বেটাকে। মাথা ন্যাড়া করে ,চুন কালি মাখিয়ে , জুতার মালা পরিয়ে ঘোরা গোটা গ্রাম ।"
ব্যাঙ্কের প্রিন্ট সব সময় ঠিক আসেনা। মেশিনের ব্্যাপার । হয়তোবা কার বোঝা কার ঘাড়ে এসে পড়েছে। আপনারা শান্ত হোন একটা গন্ডগোল তো কোথাও হচ্ছেই।
শোভান মোড়ল কথা প্রসঙ্গে বলেন উনি যখন বলছেন তখন যান না ব্যালান্স চেক করতে কেউ। হয়তো শহরে যেতে সময় লাগবে। ততক্ষণে উনাকে আমরা কোথাও যেতে দিবো না।থানায় খবর দিয়ে দেয় মিডিয়া কে ডেকে আনুন ।।গ্রামের মাঝে থৈ থৈ করছে লোক। নবীন বাবু কেমন যেন কালো হয়ে গেছেন। আজ যেন তার কাছে রোজকিয়ামত নেমে এসেছে । এতোদিন যাদের সাথে একই ছাদের তলায় সংসার পাতলাম, হাতে ধরে যাদের কে কাজ শেখালাম তাদের এমনতর আচরণ ?বিষ্ময়ে তিনি হতবাক হয়ে পড়েছেন ।
শোভান মোড়লের কথায় সবাই একটু থেমে বললেন যাও না হে সুধীর মেম্বার। তোমরাই তো এখন দন্ডমুন্ডের বিধাতা।আর না হয় বেয়ারার চেক নিয়ে যাও । টাকা থাকলে অবশ্যই টাকা দিবে। এক্ষুনি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
কথাটা মন্দ নয় বলে সবাই রাজি হয়ে গেল। পাঠানো হলো বাইক নিয়ে ব্যাঙ্কে।আধ ঘন্টার ভিতর টাকা নিয়ে হাজির হলো সুধীর মেম্বার।
নদী দিয়ে তখন অনেক জল গড়িয়ে গেছে।
###
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন