google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re স্মৃতি ।। অঙ্কিতা পাল - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

স্মৃতি ।। অঙ্কিতা পাল


আমার জীবনে বাবা ও মায়ের পরেই যাদের স্থান তারা হলেন আমার ঠাকুমা ও দাদু। মাকে প্রতিদিন স্কুলের জন্য বেরোতে হতো এবং বাবাকে ব্যবসার কাজে। তারা আমাদের দুই ভাই-বোনকে খুব যত্ন সহকারে পালন করতেন।সকালে আমাদের খাইয়ে পোশাক পরিয়ে সঠিক সময় স্কুলে পাঠাতেন এবং ছুটির পর আমাদের জন্য রাস্তায় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতেন। শনিবার ও রবিবার ছুটির দিনে দাদু আমাদের সাথে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলাকরতেন। শীতকালে দাদুভাই কে নিয়ে রোদে বসে থাকত এবং বসে বসে খেলা করতেন।  আমি দাদু ও ভাই একসাথে উঠানে বসে রান্না বাটি খেলতাম। কখনো কখনো দুপুর বেলা ও রাত্রিবেলা দাদু আমাদের ঠাকুরমার ঝুলি গল্প বই পড়ে শোনাতেন।
এভাবে দাদু ঠাকুমা ও বাবা-মায়ের মধ্যে দিয়ে আমরা ছোট থেকে বড়ো হলাম।ঠাকুরমা তখনও আমাদের যত্ন করে খাইয়ে দিতেন। তিনি আমাদের জন্য নানান রকম পিঠেপুলি, মালপোয়া, নাড়ু ও পায়েস তৈরি করতেন। তার মধ্যে আমার সবচেয়ে যেটা বেশী ভালো লাগত ক্ষীরের সন্দেশ। তার হাতের কাজ ছিলো অসাধারণ এত সুন্দর সুন্দর নকশী কাঁথা ও আসন তৈরি করতে পারতেন, যা আমাদের কাছে আজ ও অতীব যত্ন সহকারে রাখা আছে।
তারপর আমার বিয়ে হয়ে গেলো, ঠাকুরমা কখনও কখনও বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করে আমার শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে আসতেন আবার কখনও আমরা গেলে বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করতেন। আমরা গেলে দাদু ঠাকুমা আমাদের সাথে অনেক অনেক গল্প করতেন।
এমন একটা সময় এলো, যখন ঠাকুমার স্মৃতি বিভ্রাট ও দাদু দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে গেলো। এমত অবস্থায় ঠাকুরমা আমার দুই মেয়ের সাথে শিশুদের মতো খেলা করতেন।
তারপর বছর এক বছরের মধ্যেই একে একে দুজনেই আমাদের কাঁদিয়ে চলে গেলেন। তারা আমাদেরকে খুব ভালোবাসতো, তাই আজও তাদের কথা মনে পড়লে চোখে জল আসে। 

===============

 
অঙ্কিতা পাল
ভাঙ্গড় দক্ষিণ ২৪ পরগনা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন