"আজি হতে শতবর্ষ পরে
কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি
কৌতূহলভরে,
আজি হতে শতবর্ষ পরে!"
হ্যাঁ,বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গান, কবিতা, উপন্যাস, গল্প ও বহুবিচিত্র রচনা- সম্ভার আমরা শতবর্ষ নয়, শত শত বর্ষ ধরে পড়তে থাকবো,আগলে রাখবো। যতদিন পৃথিবীতে মানব সভ্যতা থাকবে ততদিন কবি থাকবেন সমহিমায় তাঁর সৃষ্টির মাঝে। কারণ তিনি শুধু বাঙালীর কবি নন, সমগ্র মানবজাতির কাছেই অনুপ্রেরণাস্বরূপ। সুখ,দুঃখ, প্রেম,ভালোবাসা প্রভৃতি মানবিক অনুভূতিতে যে কোনো মানুষ আশ্রয় পেতে পারেন তাঁর সৃষ্টির মাঝে। তাই বুঝি তাঁর সঙ্গে আমাদের এমন আত্মিক সম্পর্ক;এমন অন্তরের টান। কবি বিশ্বাস করতেন মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক প্রেমের। তাই মহামানবের সাগরতীরে তিনি বারবার মানুষে মানুষে মিলনের ধ্বনি উচ্চারণ করেছেন।
রবীন্দ্রনাথ নারী জীবন ও নারীমুক্তির নানা প্রেক্ষিত নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন তাঁর লেখনির মাধ্যমে।আমি তাঁর বিস্তীর্ণ ও বর্ণময় সাহিত্যউদ্যান থেকে দু-একটি কুসুম চয়ন করেছি তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য।
কবি রবীন্দ্রনাথ তাঁর বিভিন্ন রচনায় তৎকালীন সমাজে নারীর বিচিত্র অবস্থানকে ফুটিয়ে তুলেছেন।নারী এখানে এককেন্দ্রিক নয়, ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণীতে তার ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান। তিনি বলেছেন---"মানুষের সৃষ্টিতে নারী পুরাতনী।নরসমাজে নারীশক্তিকে বলা যেতে পারে আদ্যাশক্তি।এই সেই শক্তি যা জীবলোকে প্রাণকে বহন করে, প্রাণকে পোষণ করে।
পৃথিবীকে জীবের বাসযোগ্য করবার জন্য অনেক যুগ কেটে গেছে ঢালাই পেটাই করা মিস্ত্রীর কাজে। সেটা আধখানা শেষ হতে না হতেই প্রকৃতি শুরু করলেন জীবসৃষ্টি,পৃথিবীতে এলো বেদনা। প্রাণ সাধনার সেই আদিম বেদনা প্রকৃতি দিয়েছেন নারীর রক্তে,নারীর হৃদয়ে। জীবপালনের সমস্ত প্রবৃত্তিজাল প্রবল করে জড়িত করেছেন নারীর দেহ-মনের তন্তুতে তন্তুতে। এই সেই প্রবৃত্তি নারীর মধ্যে যা বন্ধনজাল গাঁথছে নিজেকে ও অন্যকে ধরে রাখবার জন্যে---প্রেমে, স্নেহে, সকরুণ ধৈর্যে। সংসারের এই গোড়াকার বাঁধন না থাকলে মানুষ ছড়িয়ে পড়ত আকার-প্রকারহীন বাষ্পের মতো;সংহত হয়ে কোথাও মিলনকেন্দ্র স্থাপন করতে পারত না।সমাজ বন্ধনের এই প্রথম কাজটি মেয়েরাই করে আসছে।"
মেয়েদের প্রতি ছিল রবীন্দ্রনাথের অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।তাই তাঁর লেখনির আঁচড়ে বাংলার ঘরের সাধারণ মেয়ে মালতীরা পায় সমাজে মর্যাদার স্থান,সম্মানের স্থান। আর এই মালতীদের ভালোবাসাকে যারা অবহেলা করে,অমর্যাদা করে, সেই সব নরেশদের চরম দুর্দশা কামনা করেছেন কবি-------
"এমন অনেক মালতী আছে বাংলাদেশে,
তারা সবাই সামান্য মেয়ে,
তারা ফরাসি জর্মান জানে না,
কাঁদতে জানে।। .............
.....তুমিতো কৃপণ নও বিধাতার মতো। মেয়েটাকে দাও পাঠিয়ে য়ুরোপে।
সেখানে যারা জ্ঞানী, যারা বিদ্বান,যারা বীর,যারা কবি,যারা শিল্পী, যারা রাজা
দল বেঁধে আসুক ওর চারদিকে।
জ্যোতির্বিদের মতো আবিষ্কার করুক ওকে----
শুধু বিদূষী বলে নয়,নারী বলে;
ওর মধ্যে যে বিশ্ববিজয়ী জাদু আছে
ধরা পড়ুক তার রহস্য,...................
মালতীর সম্মানের জন্য সভা ডাকা হোক না--
বড়ো বড়ো নামজাদার সভা।...................
....... নরেশ এসে দাঁড়াক সেই কোণে,
আর তার সেই অসামান্য মেয়ের দল।"
রবীন্দ্রনাথের গল্পে মেয়েরা পণপ্রথা-বহুবিবাহ- কৌলিন্য প্রথা প্রভৃতি সামাজিক বিধানের দ্বারা বিশেষভাবে পীড়িত হয়েছে,লাঞ্চিত হয়েছে অকাল বৈধব্যের কারণে।সংসারে তারা নিত্য অবহেলা ও অত্যাচারের শিকার হয়েছে।সামাজিক বঞ্চনার কারণে কখনও নীতিহীনতার পঙ্কে নিক্ষিপ্ত হয়েছে,কখনও কখনও প্রতিবাদও করেছে। এই অকাল বৈধব্যের এক বাস্তব চিত্র আমরা খুঁজে পাই কবির 'নিষ্কৃতি' কবিতায়---------
" মা কেঁদে কয়,'মঞ্জুলী মোর ওই তো কচি মেয়ে, ওরই সঙ্গে বিয়ে দেবে, বয়সে ওর চেয়ে
পাঁচগুণো সে বড়ো------
তাকে দেখে বাছা আমার ভয়েই জড়োসড়ো। এমন বিয়ে ঘটতে দেব নাকো।'
বাপ বললে, 'কান্না তোমার রাখো।
পঞ্চাননকে পাওয়া গেছে অনেক দিনের খোঁজে--
জান না কি মস্ত কুলীন ও যে!' ..........
....মঞ্জুলিকার বিয়ে হল পঞ্চাননের সাথে। বিদায়-বেলায় মেয়েকে বাপ বলে দিলেন মাথায় হস্ত ধরি,
'হও তুমি সাবিত্রীর মতো এই কামনা করি'।..................
.... আশীর্বাদের প্রথম অংশ দু-মাস যেতেই ফলল কেমন করে--
পঞ্চাননকে ধরল এসে যমে;
কিন্তু মেয়ের কপালক্রমে
ফলল না তার শেষের দিকটা,দিলে না যম ফিরে;
মঞ্জুলিকা বাপের ঘরে ফিরে এল সিঁদুর মুছে শিরে।।"
দেখতে দেখতে মঞ্জুলিকার বয়স হলো ষোলো।সে নিজেকে চিনতে শিখেছে। মাঝে মাঝে সে জানালা ধরে চুপ করে বাইরে চেয়ে থাকে। সমস্ত হৃদয়খানি জুড়ে থাকে তার ছেলেবেলার খেলার সাথী পুলিন। কিন্তু সে মুখে কিছু বলেনা। মেয়ের এই নীরবতা দেখে মায়ের খুব কষ্ট হয়। একদিন তিনি মেয়ের দ্বিতীয়বার বিয়ের কথা তার স্বামীর কাছে রাখলেন-------
" একদা বাপ দুপুরবেলায় ভোজন সাঙ্গ করে
গুড়গুড়িটার নলটা মুখে ধরে
ঘুমের আগে যেমন চিরাভ্যাস
পড়তেছিলেন ইংরেজি এক প্রেমের উপন্যাস। মা বললেন বাতাস করে গায়ে,
কখনো বা হাত বুলিয়ে পায়ে,
যার খুশি সে নিন্দে করুক, মরুক বিষে জরে;
আমি কিন্তু পারি যেমন করে
মঞ্জুলিকার দেবই দেব বিয়ে!
বাপ বললেন, কঠিন হেসে, তোমরা মায়ে ঝিয়ে
এক লগ্নেই বিয়ে কোরো আমার মরার পরে;
সেই কটা দিন থাকো ধৈর্য ধরে।"
এই বলে তিনি আবার তার গুড়গুড়িতে টান দিলেন।এদিকে সংসারের দুঃখে,তাপে,জ্বলে পুড়ে একদিন মঞ্জুলিকার মা এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন।সংসারের সমস্ত দায়িত্ব এসে পড়ল মঞ্জুলিকার উপর।মায়ের মৃত্যুর কয়েক মাস পরেই সে জানতে পারলো যে তার বাবা আবার বিয়ের উদ্দ্যোগ করছে। সে প্রতিবাদ করেছে কিন্তু লাভ কিছু হয় নি। তাই অবশেষে সে নিজেই নিজের ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে ঘর বাঁধার সিদ্ধান্ত নিয়েছে----------
"বাখরগঞ্জে মেয়ের বাপের ঘর;
সেথায় গেলেন বর
বিয়ের কদিন আগে। বউকে নিয়ে শেষে
যখন ফিরে এলেন দেশে,
ঘরেতে নেই মঞ্জুলিকা। খবর পেলেন চিঠি পড়ে
পুলিন তাকে বিয়ে করে
গেছে দোঁহে ফরাক্কাবাদ চলে
সেইখানেতেই ঘর পাতবে বলে।
আগুন হয়ে বাপ
বারে বারে দিলেন অভিশাপ। "
কৌলিন্য প্রথার কথা বলতে গেলে মনে ভেসে আসে আর এক ভয়াবহ বিভীষিকা--সতীদাহ প্রথা।এই সতীদাহ, বাল্যবিবাহ প্রভৃতি ছিল অষ্টাদশ শতাব্দীর বঙ্গ নারীর অগ্রগমনের পথে সারিবদ্ধ কালাপাহাড়। বঙ্গনারীর সেই নিদারুণ জীবন আমরা উপলব্ধি করতে পারি রবীন্দ্রসাহিত্য থেকে। যেমন তাঁর 'দেনাপাওনা' গল্পের নিরুপমা পণপ্রথার বলি হয়েছে।হৈমন্তীও পতিগৃহে একইরকমভাবে পীড়িত হয়েছে কারণ পিতার গৃহের ভিন্ন সংস্কৃতি তার শ্বশুর বাড়ির লোক গ্রহণ করতে অক্ষম ছিল। 'মহামায়া'গল্পে কৌলিন্য প্রথা ও সহমরণের ঘটনা ঘটেছে। 'দৃষ্টিদানে' তিনি দেখিয়েছেন অন্ধস্ত্রীকে ভুলে স্বামী আর একটা বিয়ের উদ্যোগ করলো। 'শাস্তি' গল্পে ছিদাম অনায়াসে ভাইয়ের অপরাধ বউ-এর ঘাড়ে চাপিয়ে তাকে ফাঁসি কাঠের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
অথচ এই মেয়েরাই তাদের জীবনকে সংসারের জন্য উৎসর্গ করে দেয়। সংসার জীবনের দীর্ঘ গলি বেয়ে তার জীবনটাকে টেনে টেনে শেষে যখন পথের প্রান্তে এসে পৌঁছায় তখন তার মনে হয়-----
"সুখের দুখের কথা
একটুখানি ভাবব এমন সময় ছিল কোথা।"
কারণ------
"রাঁধার পরে খাওয়া আবার খাওয়ার পরে রাঁধা।
বাইশ বছর একচাকাতেই বাঁধা"।
সারা জীবন ধরে সে শুধু সংসারে সকলের ইচ্ছা পূরণ করে এসেছে অথচ তার ইচ্ছার কথা কেউ ভাবেনি। জীবন সায়াহ্নে দাঁড়িয়ে তার এই জীবনকে ব্যর্থ মনে হয়েছে। সেজন্য সে তার ব্যর্থ জীবন থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছে-----------
"মধুর ভুবন মধুর আমি নারী,
মধুর মরণ, ওগো আমার অনন্ত ভিখারি।
দাও খুলে দাও দ্বার---
ব্যর্থ বাইশ বছর হতে পার করে দাও কালের পারাবার।।"
রবীন্দ্রনাথ যেমন নারীর যন্ত্রণা, লাঞ্ছনার কথা বলেছেন তেমনি নারী বিদ্রোহের ছবিও তাঁর রচনায় ধরা পড়েছে বারে বারে। বিদ্রোহের ও প্রতিবাদের স্পষ্ট চিত্র 'স্ত্রীরপত্র'-এর মৃণাল।
বিন্দুর কারণে মৃণাল সংসারে তার অবস্থানের প্রকৃত স্বরূপ অনুভব করে।উনবিংশ শতাব্দীর যে সামন্ততান্ত্রিক সমাজ ও শহর কোলকাতার যে বাবুসংস্কৃতি তারই মধ্যে নিদারুণভাবে নিপীড়িত ও অপমানিত হল মৃণালের আত্মচেতনা। অসহায় বিন্দুর জন্য সে মরণপণ লড়াই করেছিল।বিন্দুর মৃত্যুতে সে হেরে গিয়েও হারেনি।বরং মৃণাল ঐ পরিবারের গণ্ডি ভেঙে বৃহত্তর পৃথিবীর মুখোমুখি হয়েছে।
বিয়ের পনেরো বছর পর সংসারের প্রতি বীতশ্রদ্ধ মৃণাল সংসার ছেড়ে যখন শ্রীক্ষেত্রে এসেছে তীর্থ করতে তখন সংসার জীবনের অভিজ্ঞতা ও অভিযোগ জানিয়ে স্বামীকে চিঠি লেখে।সেই চিঠির শেষে এই বলে সে স্বামীকে আশ্বস্থ করেছে------"তুমি ভাবছো আমি মরতে যাচ্ছি--ভয় নেই,অমন পুরোনো ঠাট্টা তোমাদের সঙ্গে আমি করব না। মীরাবাঈ ও তো আমারই মতো মেয়েমানুষ ছিল--তার শিকল তো কম ভারী ছিল না। তাকে তো বাঁচবার জন্যে মরতে হয়নি। মীরাবাঈ তার গানে বলেছিল,'ছাড়ুক বাপ, ছাড়ুক মা, ছাড়ুক যে যেখানে আছে, মীরা কিন্তু লেগেই রইল প্রভু--তাতে তার যা হবার তা হোক।'
এই লেগে থাকাই তো বেঁচে থাকা। আমিও বাঁচব। আমি বাঁচলুম। "
হ্যাঁ,একথা শুধু মৃণালের নয়। একথা হবে প্রত্যেক নারীর।
কবি নারী চরিত্রের বলিষ্ঠতা ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর 'চিত্রাঙ্গদা' চরিত্রে।সেখানে চিত্রাঙ্গদা জানাচ্ছে-------
"আমি চিত্রাঙ্গদা, আমি রাজেন্দ্রনন্দিনী।
নহি দেবী, নহি সামান্য নারী।
পূজা করি মোরে রাখিবে উর্ধ্বে সে নহি নহি।
হেলা করি মোরে রাখিবে পিছে সে নহি নহি।
যদি পার্শ্বে রাখ মোরে সঙ্কটে সম্পদে সম্মতি দাও যদি কঠিন ব্রতে সহায় হতে
পাবে তবে তুমি চিনিতে মোরে।"
নারী জীবনের কষ্ট,বেদনা কবি অন্তর দিয়ে অনুভব করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন মেয়েরা ঘরের চৌকাঠ পেরিয়ে বিশ্বের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে এসে দাঁড়াক। তাই নারীকে আপন ভাগ্য জয় করার অধিকার দাবি করেছেন তিনি-------------
" নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার কেন নাহি দিবে অধিকার
হে বিধাতা?
নত করি মাথা
পথপ্রান্তে কেন রব জাগি
ক্লান্তধৈর্য প্রত্যাশার পূরণের লাগি
দৈবাগত দিনে?
শুধু শূন্যে চেয়ে রব? কেন নিজে নাহি লব চিনে
সার্থকের পথ?"
অতি দীর্ঘকাল থেকে মানব সভ্যতার ব্যবস্থাভার পুরুষের হাতে। এই সভ্যতার রাষ্ট্রতন্ত্র, অর্থনীতি, সমাজ শাসনতন্ত্র গড়েছিল পুরুষ। মেয়েরা তার পিছনে প্রকাশহীন অন্তরালে থেকে কেবল করেছিল ঘরের কাজ।
ধনিকের ধন উৎপন্ন হয়েছে শ্রমিক শোষণ করে; প্রতাপশালীর প্রতাপের আগুন জ্বালানো হয়েছে অসংখ্য দুর্বলের রক্তের আহুতি দিয়ে। এসভ্যতা ক্ষমতার দ্বারা চালিত, এতে মমতার স্থান অল্প।এসভ্যতা জীবজগতে মানুষকে সকলের চেয়ে নিদারুণ করে তুলেছে মানুষের পক্ষে এবং অন্য জীবের পক্ষেও। বাঘের ভয়ে বাঘ উদ্বিগ্ন হয় না কিন্তু এ সভ্যতায় পৃথিবী জুড়ে মানুষের ভয়ে মানুষ কম্পান্বিত। কবি বলেছেন ব্যক্তি হননকারী এই সভ্যতা কখনো টিকতে পারেনা।
কবি নতুন যুগের প্রত্যাশা করেছেন। এই নবযুগে নারীদের উদ্দেশ্যে কবি বলেছেন----- "তারা যেন মুক্ত করেন হৃদয়কে, উজ্জ্বল করেন বুদ্ধিকে, নিষ্ঠা প্রয়োগ করেন জ্ঞানের তপস্যায়। মনে রাখেন নির্বিচার,অন্ধ রক্ষণশীলতা সৃষ্টিশীলতার বিরোধী। এই নতুন যুগের অধিকার লাভ করতে হলে মোহমুক্ত মনকে সর্বতোভাবে শ্রদ্ধার যোগ্য করতে হবে, অজ্ঞানের জড়তা এবং সকল প্রকার কাল্পনিক ও বাস্তবিক ভয়ের নিম্নগামী আকর্ষণ থেকে টেনে আপনাকে উপরের দিকে তুলতে হবে। ফললাভের কথা পরে আসবে--এমনকি না আসতেও পারে কিন্তু যোগ্যতা লাভের কথা সর্বাগ্রে।"
কবির এই প্রত্যাশাকে আমরা যেন প্রতিষ্ঠিত করতে পারি এই কামনা করে ঈশ্বরের কাছে আমাদের প্রার্থনা-----
"হে বিধাতা
দাও দাও মোদের গৌরব দাও
দুঃসাধ্যের নিমন্ত্রনে
দুঃসহ দুঃখের গর্বে।
টেনে তোলো রসাক্ত ভাবের মোহ হতে। সবলে ধিক্কৃত করো দীনতার ধুলায় লুণ্ঠন।
দূর করো চিত্তের দাসত্ববন্ধ,
ভাগ্যের নিয়ত অক্ষমতা,
দূর করো মূঢ়তায় অযোগ্যের পদে
মানবমর্যাদা বিসর্জন,
চূর্ণ করো যুগে যুগে স্তূপীকৃত লজ্জারাশি
নিষ্ঠুর আঘাতে।
নিঃসংকোচে
মস্তক তুলিতে দাও--অনন্ত আকাশে উদাত্ত আলোকে---মুক্তির বাতাসে। "
------------&&&---------------
তপতী মণ্ডল।
রহড়া, উঃ২৪ পরগণা
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন