হৈমন্তী জ্যোৎস্নার আবেশে
সোমা মজুমদার
ধোঁয়া ধোঁয়া কুয়াশার রঙে লেপ্টে থাকা হৈমন্তী জ্যোৎস্না... ফিকে হয়ে যাওয়া কাশের বনে এখনও ছড়িয়ে যাচ্ছে বন্য মাদকতা...
চরাচর জুড়ে এক অপার্থিব নৈঃশব্দ্য জাগতিক সব নিয়মের কুচকুচে শরীর যেন ডেকে দিয়েছে স্বর্গীয় মখমলি চাদরে। এখন আমি আপন খেয়ালে ইচ্ছে নদী আঁকতে পারি চলাৎ চলাৎ জলের উচ্ছ্বাস মিশিয়ে...
যে অর্কিড গুচ্ছ খোঁপায় পরা হয়নি তাদের দিয়ে অবাক সুখের আহ্লাদে সাজাতে পারি স্বপ্নীল বাসর।
দরজার পাল্লা এমনই হাটহয়েই থাক্, আমার রঙচঙে যন্ত্রণায় সাজানো চিলেকোঠায় রাতভর হাঁড়ি উপুড় করে সুখ ঢালুক হৈমন্তী জোছনা
সে এক অপার্থিব অবিশ্বাস্য সুখের আখ্যান।
দিগন্ত তখন নুইয়ে আসে শিয়রের কাছে
ফিনফিনে ঠোঁটের আবেদনে নরম আলোর টকটকে সূর্য টাও নিজেকে সমর্পণ করেছে অনায়াসে
আমার এক মুঠোয় রোদ্দুর এখন, অন্য মুঠোয় নক্ষত্রের কোলাহল আর আঁচলে বৃষ্টির গন্ধ শরীর জুড়ে নতুনের উচ্ছ্বাস....।
এই রাতের মাদকতা না কাটুক, সকালের আলোয় অসহ্য বাস্তবতায় ও না ভাঙতে পারুক অরণ্যের কপালে মেঘের তিলক পুরানোর সেই বল্গাহীন সুখের থোকা থোকা আবেশ।
যে ফিঙে টি কাকতাড়ুয়ার গায়ে বসে পার করতো বিপন্ন সময় তারজন্যেও সন্ধ্যা হাওয়া বয়ে আনুক সুদিনের ঠিকানা। হৈমন্তী আহবানে সাড়া দিয়ে যে সব পাতারা নিজেদের সবটাই বিলিয়ে দিয়ে পড়ে থাকে পথে প্রান্তে তাদের মাড়িয়ে যাওয়া খড়খড় শব্দের হা-হুতাশ থেকেও চলকে পড়ুক প্রজাপতি রঙ ছড়ানো নুতন জীবনের উদ্দাম উল্লাস...।
এমন অপার্থিব সুখের আবেশ নিয়ে এই আধোআধো হিমের রাত আমায় আচ্ছন্ন করে রাখুক তার চিবুকে জড়িয়ে। এই মেঠো গন্ধের রাত আমার স্বেচ্ছা নির্বাসন গ্রহণ করুক।
================
সোমা মজুমদার
আসাম হাইলাকান্দি
খুব ভালো লাগলো ভালো থাকুন এগিয়ে চলুক কলম।
উত্তরমুছুন