google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re বাংলা সাহিত্যে চির দীপ্তিমান হাসির রাজা সুকুমার রায় ।। পাভেল আমান - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২২

বাংলা সাহিত্যে চির দীপ্তিমান হাসির রাজা সুকুমার রায় ।। পাভেল আমান


 

 বাংলা সাহিত্যে চির দীপ্তিমান হাসির রাজা সুকুমার রায়

 পাভেল আমান


            শিশু-কিশোর সাহিত্যে যে কজন বাঙ্গালী এখনো সাহিত্যাকাশে উজ্জ্বল নক্ষত্র তন্মধ্যে সুকুমার রায় অন্যতম। শিশু-কিশোর মনোযোগী সাহিত্য রচনা করে সাহিত্যকে সর্ব জনপ্রিয় তথাপি পাঠকের সমীপে সুষ্ঠু ও সাবলীলভাবে সৃজনশীলতার পরাকাষ্ঠায় পৌঁছে দিয়েছিলেন সুকুমার রায়। পাশাপাশি বাংলা সাহিত্যে তিনি এক অন্য বিশেষনেও মহিমান্বিত পরিচিত হাসির রাজা হিসেবে হাস্যরসাত্মক সাহিত্য রচনার মধ্যে দিয়ে। ৮ থেকে ৮০ আম বাঙালি তার সাহিত্য সৃজনে মুগ্ধ আল্লাদীত প্রফুল্লিত। স্বল্প জীবনের পরিসরে বাংলা সাহিত্য কে পরিপুষ্ট করেছিলেন তার সৃষ্টী সম্ভারে। সাহিত্য বাঙালির সংস্কৃতির অন্যতম ধারক ও বাহক বাঙালিরা সাহিত্যকে কদর করে ভালবাসে বেঁচে থাকার রসদ হিসাবে মনে প্রানে আত্তীকরণ করে। বিশেষ করে নির্ভেজাল পরিতৃপ্ত হাসির খোরাক সৃষ্টিতে সুকুমার রায়ের জুড়ী মেলা ভার বাংলা সাহিত্যে। 
 
        সুকুমার রায়ের জন্ম ১৮৮৭ সালের ৩০শে অক্টোবর কলকাতার এক দক্ষিণ রাঢ়ীয় কায়স্থ বংশীয় ব্রাহ্ম পরিবারে।সুকুমার রায় ছিলেন বাংলা শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর পুত্র।তাঁর মা বিধুমুখীদেবী ছিলেন ব্রাহ্মসমাজের দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের মেয়ে। তাঁর আদিনিবাস ছিল অবিভক্ত বাংলার বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জ মহকুমার কটিয়াদি উপজেলার মসূয়া গ্রামে। সুবিনয় রায় ও সুবিমল রায় তার দুই ভাই। এ ছাড়াও তার তিন বোন ছিল, তারা হলেন সুখলতা, পুণ্যলতা ও শান্তিলতা।তিনি জন্মেছিলেন বাঙলার  নবজাগরণের স্বর্ণযুগে। তাঁর পারিবারিক পরিবেশ ছিল সাহিত্যানুরাগী, সাহিত্যিক প্রতিভা বিকাশে সহায়ক হয়। পিতা উপেন্দ্রকিশোর ছিলেন শিশুতোষ গল্প ও জনপ্রিয়-বিজ্ঞান লেখক,চিত্রশিল্পী,সুরকার ও শৌখিন জ্যোতির্বিদ। উপেন্দ্রকিশোরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, যিনি সুকুমার রায়কে সরাসরি প্রভাবিত করেছিলেন। এছাড়াও রায় পরিবারের সাথে জগদীশ চন্দ্র বসু, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রমুখ কীর্তিমান ব্যক্তিদেরও সম্পর্ক ছিল।উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছাপার ব্লক তৈরির কৌশল নিয়ে গবেষণার কাজ করেছিলেন, এ নিয়ে নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছিলেন এবং মানসম্পন্ন ব্লক তৈরির একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। মেসার্স ইউ. রয় এন্ড সন্স নামে ঐ প্রতিষ্ঠানের সাথে সুকুমার রায় যুক্তও ছিলেন। 
        সুকুমার রায় হলেন একজন বাঙালি শিশুসাহিত্যিক ও ভারতীয় সাহিত্যে "ননসেন্স রাইমের" প্রবর্তক। তিনি একাধারে লেখক, ছড়াকার, শিশুসাহিত্যিক, রম্যরচনাকার, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার ও সম্পাদক। তিনি ছিলেন জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর সন্তান এবং তাঁর পুত্র খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়। তাঁর লেখা কবিতার বই আবোল তাবোল, গল্প হ-য-ব-র-ল,গল্প সংকলন পাগলা দাশু, এবং নাটক চলচ্চিত্তচঞ্চরী বিশ্বসাহিত্যে সর্বযুগের সেরা "ননসেন্স" ধরণের ব্যঙ্গাত্মক শিশুসাহিত্যের অন্যতম বলে মনে করা হয়। ১৯২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর  মাত্র ৩৬ বছর বয়সে এই হাসির রাজা সুকুমার রায়ের জীবনাবাসন হয় । তিনিই বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয়তম শিশুসাহিত্যিকদের একজন। এবছর একপ্রকার নিরবে নির্লিতে কেটে গেল এই প্রথিতযশা বরণীয় সাহিত্যিকের ১৩৬তম জন্মদিন। 
        আপামর বাঙালি পাঠকের মননে রয়ে যাবে এই বরেণ্য বহুমুখীন সাহিত্যিক সুকুমার রায়ের সৃষ্টি সম্ভার যায় এখনো সমৃদ্ধ করে চলেছে বাংলা সাহিত্য কে। এখানেই সাহিত্যের প্রাসঙ্গিকতা গুরুত্ব ও তাৎপর্য। বিশেষ করে সুকুমার রায় বাংলা সাহিত্যে তার নিজস্ব স্বতন্ত্রতা মুন্সিয়ানা স্বকীয়তায় ছাপ রেখে গেছেন। এখনো পাঠকেরা মননের হতাশা দৈনতা চাপ শূন্যতা নিমিষে দূর করতে হাস্যরসের জালে অন্তঃস্থ মননকে বেঁধে রাখতে সর্বোপরি একটু মানসিক খোরাক যোগাড় করতে অনায়াসে শরণাগত হন সুকুমার রায়ের সাহিত্য সম্ভারে। পরিশেষে একটি কথা যখনই আমাদের অবচেতন মননে একরাশ রুদ্ধতা হতাশা  কালো মেঘের মতো আচ্ছা দিতে হয় ঠিক সেই মুহূর্তে প্রাণবন্ত চাঙ্গা স্থিতিশীল স্বাভাবিক করে তুলতে এখনো সুকুমার রায়ের সৃষ্টিশীলতা আমাদের জিয়নকাঠি  । 
 
=========================

পাভেল আমান- হরিহরপাড়া- মুর্শিদাবাদ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন