যা চলে যায়, ফেরে না কখনো আর
দিলীপ কুমার দাস
নতুন রোদ্দুর সুপারি গাছের পাতার ভিতর দিয়ে
উঠানে পড়ত যখন, সেখানে তখন আঁকা হয়ে গেছে
আবাহন আলপনা - বছরের প্রথম দিনে ।
এখন তো উঠানই নেই, জানালার পর্দায়
নতুন বছর এলে, কি আর পড়বে মনে ?
চোখে পড়ে গেছে ছানি, মন জুড়ে ক্লান্তি ।
অতীতে ছিল নববর্ষে আমপাতা দরজায়
মা-কাকি-জ্যেঠি-পিসিদের সব মঠ-মন্দিরে
নিয়মের কত ইতিহাস ।
বিশেষ স্মৃতি মুদির দোকানে , মহাজনের গদীঘরে
বরফের শরবত, ফেরার সময় হাতে হাতে সবার
মিষ্টির বাক্স, নতুন ক্যালেন্ডার ।
নিজের রাজ্যেই নববর্ষ আজ বিবর্ণ বিস্মৃত
প্রবাসে কি আর নতুন হবে সহৃদয় উৎসব ?
নাভিমূল থেকেই ছিড়ে গেছে যে হ্যারিকেন-লন্ঠন।
নববর্ষ নতুনই ছিল প্রতিটি হাস্নুহানায়,
ভাঁটফুলে কিংবা সন্ধ্যামালতীর সৌরভ সংজ্ঞায় ।
এখন কিছুই নেই, টেরাকোটা আঁকা মন্দিরে এখন সাপ ।
ধর্মের ভেদ সেখানে ছিল না অমারাত্রির মন্দ
ইতিহাস ছিল বাঙালির ঘরে শিল্পীর আঁচড়ে
ঐতিহ্যের ভালো লাগা বিস্ময় ।
শৈশবে দেখা লাউমাচাটায় নতুন বর্ষ ঘিরে
যা ছিল সে কি আর ফিরে আসবে
আশির মধ্য-পর্বে ?
সম্ভব নয় হারিয়ে যাওয়া নদীকে ফিরিয়ে আনা
লোকায়ত সব ইতিহাসও আর
আসে না নতুন ছায়ায় ।
এটাই সত্য, যা চলে যায়, ফেরে না কখনো আর।
***************
দিলীপ কুমার দাস
ডি - 83 , লীলা মজুমদার পথ
সেক্টর -2A , বিধাননগর
দুর্গাপুর - 713212
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন