Featured Post

কবিতা ।। অন্তরঙ্গ ।। বন্দনা পাত্র

ছবি
 অন্তরঙ্গ   বন্দনা পাত্র  দেখেছি আমি চৈত মাসের থমকে যাওয়া চোখ   এসো আমার অন্তরঙ্গ সাতমহলী বৈশাখ.... যন্ত্রণারা বিবর্তনে নতুন করে বৈশাখে ঘনিষ্ঠ সেই মুহূর্তগুলো আমের শাখে শাখে  বসে আমি প্রতিকূল বাতাসের ডাকে..., বৈশাখী মহলে ভীড় করে আমার রবীন্দ্রনাথ  যন্ত্রণা উপশমে বসায় প্রকৃতি চাঁদের হাট... যত কথা বলে যায় ঈশ্বরী কলস কাঁখে.... সৃজনে আমি ধ্রুপদী বেলা 'পঁচিশে বৈশাখে' , পরবাসী বাতাস এসে বৈশাখের ঘরে  অনন্ত স্মৃতি জাগায় হৃদয়ের অভ্যন্তরে,  স্বতন্ত্র চোরাবালি দোর খোলে চিরতরে  এই হৃদয়ে, বৈশাখী চাঁদে দেখি ভীড়  কত কবি এঁকেছেন ছবি প্রতিটি সত্যের।।

উৎসব ও আমরা ।। শেফালী সর


উৎসব ও আমরা

শেফালী সর

আমরা মানুষেরা তো যান্ত্রিক জীব নয়। একঘেয়েমি জীবন থেকে মুক্তি পেতে আমাদের জীবনে উৎসবের প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই উপলব্ধি করি। উৎসবের মূল উৎস হলো প্রাচীন গ্রাম বাংলা। আমাদের গ্রাম বাংলার উৎসব সাধারনত কোনো না কোনো ধর্মকে কেন্দ্র করেই হয়। উৎসবে  হৃদয়ের স্বতঃস্ফূর্ততার প্রকাশ হয়। আমাদের বাংলার ঘরে ঘরে বারোমাসে তেরো পার্বণ তো লেগেই আছে। হোলি অর্থাৎ বসন্ত উৎসব, জন্মাষ্টমী, নবান্ন,গাজন, ঈদ মহরম,গুডফ্রাইডে, বড়দিন, বৃক্ষ রোপন, বিবাহ উৎসব প্রভৃতি উৎসব তো আমাদের সমাজ-জীবনের অঙ্গ। আমাদের বাঙালি জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব হলো দুর্গোৎসব ও আলোর উৎসব দীপাবলী।

              উৎসব হল আমাদের মানব জীবনের আনন্দ মুখর অভিব্যক্তি। মানুষের উৎসব কবে? মানুষ যেদিন নিজের মনুষ্যত্বকে মর্যাদা দান করে। উৎসব আমাদের অন্তরের উচ্ছ্বাস। উৎসব হল আমাদের আনন্দ সঙ্গীত, প্রাণের প্রবাহ। আমাদের অনুভবে ধরা পড়ে প্রতিদিন মানুষ ক্ষুদ্র,দীন,একাকী-কিন্তু উৎসবের দিন বৃহৎ এবং মহৎ।

              প্রাচীন বাংলায় উৎসব ছিল আন্তরিকতায় ও আত্মিকতার  মোড়কে মোড়া। উৎসবের মধ্যে ছিল ব্যাপক সার্বজনীনতা।একের উৎসব হ'ত দলের উৎসব।দেনা পাওনা , হিসাব নিকাশের সম্বন্ধ ছিল গৌণ। নতুন পোশাক পরিচ্ছদ পরিধানের ধারা কিন্তু সেই উৎসবের প্রথম দিন থেকেই ছিল মা আজ ও প্রচলিত আমাদের মাঝে।   

                                    বর্তমানের উৎসবে আছে হুজুক প্রিয়তা ও উচ্ছৃঙ্খলতা। চাঁদার দাবিতে প্রাণ ওষ্ঠাগত। রুচিহীন নৃত্য গীতের উন্মাদনা।যাদের জীবনে ভক্তি নিষ্ঠার কোনো শুচিতা নেই তারাই উৎসবের পান্ডা।বিদ্যার সঙ্গে যাদের বিন্দুমাত্র যোগাযোগ নেই তারাই বিদ্যা দেবীর প্রধান উদ্যোক্তা। উৎসব কে ঘিরে সমাজ বিরোধীদের দৌরাত্ম্য তুঙ্গে। যারা চোরা কারবার ও কালোবাজারির সাথে যুক্ত তারা দেশের স্বাধীনতাকে করছে নিত্য কলঙ্কিত,তারাই  আবার স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের প্রধান পুরোহিত। উৎসব স্বল্পবিত্ত মানুষের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি করে।

             আমাদের দেশের উৎসব সাধারনত চারভাগে বিভক্ত। ধর্মীয়, ঋতু, সামাজিক ও জাতীয় উৎসব। গণেশ চতুর্থী থেকেই শুরু উৎসবের মিছিল।দশহরা, রথযাত্রা,রাখী বন্ধন,মনসা , বিশ্বকর্মা, দুর্গোৎসব ও দীপাবলী, তারপর শুরু হয়  জাতীয় উৎসব-স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস,২৫শে বৈশাখ রবীন্দ্র জয়ন্তী,২৩শে জানুয়ারি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিন ইত্যাদি উৎসব গুলির মধ্যে আছে জাতীয়তাবোধ ও সংহতি চেতনা।          

                            একসময় উৎসবের স্রোতে যখন ভাঁটা পড়ে তখনই মনটা  খোঁজে  উৎসবের উৎস কোথায়? খুঁজতে খুঁজতে মনটা চলে যায় আদিম যুগের সেই প্রথম মানবীর কাছে যাদের রক্ত আমাদের শিরায় শিরায় প্রবাহিত। তাদের মিলনে যে আনন্দ উৎসারিত হয়েছিল তার থেকেই উৎসবের সৃষ্টি হয়েছে।তারা বুঝেছিল মিলনের আর এক নাম উৎসব। সেই উৎস থেকেই উৎসবের ধারা আজ পর্যন্ত বয়ে চলেছে। বর্তমানে উৎসবের রূপান্তর ঘটেছে। তাদের অনাড়ম্বর উৎসবে আন্তরিকতা ছিল প্রচুর পরিমাণে মা আজকের উৎসবে অন্তর্হিত।  

                   ----------------------:------------------

শেফালি সর, জনাদাড়ি, গোপীনাথপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, ৭২১৬৩৩

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল