Featured Post

ছড়া ।। বর্ষবরণ ।। দীনেশ সরকার

বর্ষবরণ দীনেশ সরকার   পুরানো দিনের কালিমা কলুষ থাক সব পিছে পড়ে মনের কোণেতে বেদনার ডালি রাখবো না আর ভ'রে।   দুঃখ-আঘাত যত জমা আছে আছে যত শোক-তাপ বর্ষ শেষের বিদায় লগ্নে ধুয়ে-মুছে হোক সাফ।   ধর্মের নামে হানাহানি যত রক্তের হোলি খেলা শেষ হয়ে যাক বর্ষশেষের   শেষ প্রহরের বেলায়।   এসো-এসো-এসো, নতুন বছর তোমারে বরণ করি নতুন ঊষার নবীন কিরণে জীবনের গান ধরি।   বন্ধুর পথ হোক মসৃণ বিচ্ছেদ যাক দূরে নতুন বছরে এসো সবে আজ গাই গান একসুরে।   নতুন বছর ক'রো না ক্ষমা দুর্নীতিবাজ যারা সুস্থ সমাজ দাও ফিরিয়ে সুস্থ জীবনধারা।   নতুন বছর সবার হৃদয়ে দাও ভরে ভালোবাসা নবীন আলোকে নবউচ্ছ্বাসে জাগাও নতুন আশা।   ************************** দীনেশ সরকার ১৪০ ডি, হিজলি কো-অপারেটিভ সোসাইটি, প্রেমবাজার, খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর---- ৭২১৩০৬

মুক্তগদ্য ।। রবীন্দ্রনাথ ও আমি ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

                                     ধর্ম' প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ

 

  রবীন্দ্রনাথ ও আমি

পার্থ সারথি চক্রবর্তী 


   রবীন্দ্রনাথ আমাদের মনে, মননে,রন্ধ্রে রন্ধ্রে। শৈশব থেকে শুরু করে জীবনের শেষ সময়েও আমাদের ঘিরে রেখেছে রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর সৃষ্টি। তাই তো তিনি আবহমান, সদাবিচরণকারী। 'সহজ পাঠ ' নিয়ে জীবন শুরু করে 'শেষের কবিতা ' অবধি তিনিই তিনি। জুড়ে আছেন জীবনে ও যাপনে। এককথায় বলতে গেলে 'আমার পরাণ যাহা চায়, তুমি তাই '। কীটসের প্রেম, ওয়ার্ডসওয়ার্থের প্রকৃতি, কালিদাস, শেক্সপিয়রের মানবিক সম্পর্কের আখ্যান- সব পাই তাঁর লেখায়। খুব ছোটবেলায় হাতে পাওয়া 'সঞ্চয়িতা' কবে যে সবার অলক্ষ্যে পরম বন্ধু হয়ে উঠেছে, টেরও পাইনি। শৈশবে 'দামোদর শেঠ' পড়ে যখন বিয়েবাড়িতে গিয়ে  'ভেটকি ফ্রাই' খাই; তখন তাঁকে দূরে দাঁড়িয়ে মুচকি হাসতে দেখেছিলাম। আবার যখন 'বীরপুরুষ' আবৃত্তি করে মায়ের চোখ ভিজিয়ে দিয়েছি; তখন যেন তাঁকে হাততালি দিতেও দেখেছিলাম। এভাবে কৈশোর পেরিয়ে 'যে রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাঙল ঝড়ে '; সেদিন যেন হঠাৎ বড় হয়ে গেলাম। প্রেম, দেশপ্রেম, মানবপ্রেম, বিশ্বপ্রেম। সব মিলিয়ে যেন এক ভেসে যাওয়ার জোগাড়। সেখানেও আবার তিনিই বেঁধে রাখেন দু'হাতে জড়িয়ে। আসলে সর্বত্র আলোকবিন্দু হয়ে পথ দেখান তিনি। আজ এই সময়ে এসে যে তুমুল অনিশ্চয়তার ঘেরাটোপে পড়ে আছি, সেখানেও তিনি আশার আলো। 

       'আমি ভয় করব না ভয় করব না-
        দু বেলা মরার আগে মরব না ভাই 
        মরব না'।

 আসলে আত্মশক্তি অর্জন করা, আত্মোপলব্ধি করা জীবনের উদ্দেশ্য। রবীন্দ্রনাথ এটা শিখিয়েছেন। তাই তিনি আশ্রয়। আমার, আপনার হয়তো বা সবার।

আসলে সাহিত্যসৃষ্টি দিয়ে শুধু নয়; মানবতাবাদ, দেশাত্মবোধক ভাবনা, সমাজের সম্প্রীতির ভাবনা ইত্যাদি তাঁর চরিত্র ও কর্মধারার মাপকাঠি। ভাবা যায়, ওই সময়ে বসে তিনি 'সমবায়ের ভাবনা' ভেবেছিলেন! নিজের জীবন অতীব দুঃখ, যন্ত্রণা, প্রিয়জনদের বিয়োগ দিয়ে কণ্টকাকীর্ণ ছিল; তবু তিনি ভেঙে পড়েন নি। অন্ততঃ বাইরে থেকে!  একের পর এক লিখে গেছেন কালজয়ী সৃষ্টি।
মংপুই হোক আর জোড়াসাঁকো; আজো তিনি যেন হেঁটে বেড়ান। শান্তিনিকেতন গেলে তো তাঁকে অনুভব করা যায়। আসলে ঠিক তা নয়, জীবনের প্রতি মুহূর্তেই তাঁকে দেখা যায়। অন্তরে তাঁকে অনুভব করা যায়।
একজন মানুষ কিভাবে একটি জাতির জীবনে, শয়নে, জাগরণে মূর্ত হয়ে উঠতে পারেন, তাঁর এক ও একমাত্র নিদর্শন বোধহয় শুধু তিনিই।
তাই তিনি ছড়িয়ে ও জড়িয়ে আছেন আমাদের সবার সাথে। এই জন্যই তিনি দেবতা, প্রাণের ঠাকুর।

       'আমি মৃত্যু চেয়ে বড়ো এই শেষ কথা ব'লে/ যাব আমি চলে'।
      - এই ছিল যার মৃত্যুদর্শন, তার কি আর মৃত্যু হতে পারে!
হয়ও নি, তিনি তাই আছেন আমাদের সাথেই, আমাদের পাশেই।


.....................

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল