Featured Post

ছড়া ।। বর্ষবরণ ।। দীনেশ সরকার

বর্ষবরণ দীনেশ সরকার   পুরানো দিনের কালিমা কলুষ থাক সব পিছে পড়ে মনের কোণেতে বেদনার ডালি রাখবো না আর ভ'রে।   দুঃখ-আঘাত যত জমা আছে আছে যত শোক-তাপ বর্ষ শেষের বিদায় লগ্নে ধুয়ে-মুছে হোক সাফ।   ধর্মের নামে হানাহানি যত রক্তের হোলি খেলা শেষ হয়ে যাক বর্ষশেষের   শেষ প্রহরের বেলায়।   এসো-এসো-এসো, নতুন বছর তোমারে বরণ করি নতুন ঊষার নবীন কিরণে জীবনের গান ধরি।   বন্ধুর পথ হোক মসৃণ বিচ্ছেদ যাক দূরে নতুন বছরে এসো সবে আজ গাই গান একসুরে।   নতুন বছর ক'রো না ক্ষমা দুর্নীতিবাজ যারা সুস্থ সমাজ দাও ফিরিয়ে সুস্থ জীবনধারা।   নতুন বছর সবার হৃদয়ে দাও ভরে ভালোবাসা নবীন আলোকে নবউচ্ছ্বাসে জাগাও নতুন আশা।   ************************** দীনেশ সরকার ১৪০ ডি, হিজলি কো-অপারেটিভ সোসাইটি, প্রেমবাজার, খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর---- ৭২১৩০৬

গদ্য ।। কবিতার কথা ।। সুবীর ঘোষ


কবিতার কথা

 

সুবীর ঘোষ

 

   একজন মা যেমন নিজের সন্তানকে কারো সঙ্গে তুলনা করে দেখতে চান না , তেমনি আমার কবিতার গায়ে আমি তত্ত্বায়নের লেবেল আঁটা পছন্দ করি না । ফলে কবিতার ক্রিয়াকরম রীতিপ্রণীতি ব্যাকরণ কিছুই জানা নেই আমার । জানি না কবিতার সংজ্ঞা ও ভূমিকা কুশল ও কৌশল । কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে কবিতা লিখি না , কোনো প্রাপ্তির জন্যও নয় , কোনো বার্তা দেবার জন্য তো নয়ই । কবিতায় আমি নিজের সঙ্গেই কথা বলি , এ আমার অফুরন্ত আনন্দের স্বরালাপ খেলা । কখনো চোখের আলোয় কোনো রৌদ্রপ্রতিমাকে দেখা যায় , যার সঙ্গে কথাও বলা যায় । কবিতা তখন কিছুটা দ্বিরালাপ হয়ে যায় ঠিকই তবে প্রকৃত দ্বিরালাপ তো কবির সঙ্গে পাঠকের কথা বলা ।

 

অনেকে অনেক কথা বলেছেন ---কবিতা হয়ে ওঠে , বেজে ওঠে । কেউ কেউ নির্মাণ – বিনির্মাণের কথাও বলেছেন । আমি মনে করি কবিতা এসে ওঠে । আমরা যেমন বেড়াতে গেলে কোনো হোটেলে গিয়ে উঠি তেমনি কবিতা অজানা কোনো স্বপ্নলোক থেকে এসে ওঠে সাদা কাগজের চৌকো ঘরটিতে । সেটিকেও সে শব্দে বর্ণে অর্থে ব্যঞ্জনায় আলোকিত করে তোলে ।

 

যদিও বাংলাভাষায় আদিকাব্যগুলো সবই গল্প বলেছে , আমি কবিতায় গল্প বলা পছন্দ করি না । সংবাদ মূলত কাব্য কী না জানি না কিন্তু কাব্য মূলত সংবাদ কখনই নয় । কাজেই সংবাদপত্রের তাজা খবরকে কবিতায় অনুবাদ করে দেব এটা চাই না । কবিতা ভ্রমণবৃত্তান্ত নয় যে তাকে খুব বেশি স্মৃতি ভারাক্রান্ত হতে হবে । কবিতা কবির জীবনচরিত নয় যে তাকে নিজের অভিজ্ঞতা লিখে যেতে হবে কবিতায় । কবিতা প্রাকৃতিক বর্ণনা বা দৈনন্দিন যাপনের ঘটনাবলি বলারও জায়গা নয় । অর্থাৎ কবিতা আখ্যান নয় , রিপোর্টাজ নয় , স্মৃতিকথা নয় , আত্মজৈবনিক নামচা নয় , ফোটোগ্রাফ নয় , বিবৃতি নয় , বায়োপিক নয় । তাহলে এগুলো কি কিছুই থাকবে না ? আমার উত্তর ---- সব থাকবে কিন্তু যেভাবে চায়ের ব্লেন্ডিং হয় সেভাবে । কবিতার সত্যের সঙ্গে জড়জগতের সত্য মিশে যাবে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে । কবির স্মৃতি অভিজ্ঞতা সব থাকবে এত খন্ড খন্ড আকারে যে তা দিয়ে কারো পক্ষে কবির জীবনী লেখা সম্ভব নয় । কবিতার মধ্যে মনন দর্শন বিশুদ্ধতার ঝোঁক কবিতাকে গরিমা দেয় । কবিতা নিয়ে আসবে পাঠকের কাছে বচনাতীতের আনন্দ । কবিতা কবির কাছে সব থেকে নিরাপদ সেই লকার যেখানে কবি তাঁর গোপন কথা লুকিয়ে রাখতে পারেন । সে পাসওয়ার্ড ভেঙে ব্যাখ্যা বের করে নেওয়ার দায়িত্ব পাঠকের । আমি মনে করি নদীর বহতা জলে যেমন দুবার হাত ডোবানো যায় না তেমনি কবির অনুভবকে পুরোপুরি ছুঁতে পারা পাঠকের কেন , পরবর্তীকালে কবির নিজের পক্ষেই দুষ্কর হয়ে ওঠে । কবির অনুভব কতখানি পাঠকের উপলব্ধির কাছাকাছি যেতে পারছে , কবির প্রকাশ পাঠকের ভাবনার সমর্থন কতখানি পাচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে কবিতার সার্থকতা ।

 

আমি এসব দর্শনকে বিশ্বাস করে কবিতা লেখার চেষ্টা করি । কবিতা আমার কাছে কোনো টাস্ক বা টার্গেট নয় , কবিতা আমার একান্ত নিজস্ব প্রয়োজনীয়তা ।

 

__________________________________________________________


 


 


 

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল