পশ্চিমের আকাশ থেকে এক ঝাঁক পাখি
উড়ে যায় ক্লান্ত দেহে, দূর সীমান্তের দিকে।
ক্রমশ ঝাপসা হয়ে আসে তাদের উপস্থিতি।
বাতাসে ভেসে আসে শঙ্খ ও আজানের ধ্বনি।
বিষন্ন দৃষ্টিতে আকাশের দিকে চেয়ে,
কেবলই দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে প্রেমিক পুরুষ।
সন্ধ্যে নামে প্রেমিকের দু'চোখে,
প্রিয় মানুষটিকে ছুঁতে না পারার যন্ত্রণা
তাঁকে হতাশ করে তোলে ।।
নতুন বসন্তের আগমনের সাথে সাথে
সদ্য ফোটা পলাশ ও শিমুলের মধ্যে
যে ছেলেটা সারাদিন কবিত্ব খুঁজে বেড়াতো।
সেও আজ নিস্তব্ধ- নিঝুম।
কেবলই অপেক্ষারত আরো এক
নতুন বসন্তের ছায়া ভরা বিকেলের।।
প্রতিদিন কলেজ শেষে প্রিয় মানুষটির
স্পর্শ না পেলে যে মেয়েটা অভিমান করে থাকতো।
তারপর সে অভিমান ভাঙানোর জন্য
চলতো, প্রেমিকের কতো নিরাপরাধ পাগলামি ,
কতো ছেলেমানুষি।
অবশেষে অভিমান ভেঙে একসাথে হাত ধরাধরি করে পথ চলা।
বাসের শেষ সিটে ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে চলতো জীবনানন্দের কবিতা আবৃত্তি
কিংবা স্বর্ণালী যুগের সুমধুর গান ।
সে মেয়েটাও আজ স্পর্শহীন ভাবে দিব্যি আছে গৃহবন্দি হয়ে।
কেবল অভিমানগুলো জমিয়ে রেখেছে কোনো এক নতুন সকালের আশায়।
না না আজ প্রেমিকের বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ নেই,
নেই কোন অভিমান।
আছে কেবল একগুচ্ছ ভালোবাসা।।
সদ্য বিবাহিত যে ছেলেটা অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার জন্য আকুল হয়ে থাকতো,
শুধুমাত্র তার প্রিয়তমাকে একটুখানি
জড়িয়ে ধরার আকাঙ্ক্ষায়।
সেও এখন সারাদিন বাড়িতে থাকে
শুধু অকারণে স্পর্শকাতরতা যেন নিমেষে বিলীন হয়েছে।।
এখন শুধুই তাঁরা সেই দিনের
অপেক্ষায় আছে ।
যেদিন এই মৃত্যুভয় ,মহামারীর আকাল ফুরিয়ে গেলে
কোনো এক নতুন ভোরে প্রেমিক তাঁর মনের মানুষটিকে ছুঁতে পারবে।
আবারও কেউ একজন নতুন বসন্তে শিমুল, পলাশ ছাড়াও
কোকিলের কুঞ্জনের মধ্যে তাঁর না পাওয়া কবিত্বকে খুঁজে পাবে।
বাসের শেষ সিটগুলো আবারও পরিপূর্ণ হবে প্রেমিক-প্রেমিকার কোলাহলে।
হাসি ফুটবে আবারও নব্য বিবাহিত দম্পতির মুখে।
প্রেমিকার ভালবাসার বারান্দায় আবারও রোদ এসে নামবে।
সময় আবারও এগিয়ে চলবে তাঁর নির্দিষ্ট গতিতে........
----------------------------------
মধুসূদন দাস
গ্রাম- বহড়ু কামদেব নগর।
পোষ্ট-বহড়ু
থানা- জয়নগর
জেলা -দক্ষিণ 2৪ পরগনা।
মোবাইল-9641569090
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন