চিরসখা হে....
অমিতাভ
একটা খাদের দিকে ঢলে পড়েছি সব্বাই। শুধু একটা টোকার অপেক্ষা, তারপরই তলিয়ে যাব এক অতলান্ত গভীরতায়। হয়তো এতটাই গভীরে তলিয়ে যাব যে হাজার চেষ্টা করেও একচিলতে আলোরও দেখা পাওয়া যাবে না।
তবুও একটা টান, একটা গান এখনো তিল তিল করে গড়ে তোলা সভ্যতার মধ্যে আটকে রেখেছে আমাদের। প্রাগৈতিহাসিক যুগের দিকে যদি আমরা চোখ রাখি তাহলে দেখবো মানুষ ভাষা শেখার আগে শিখে গেছিল সুর। সভ্যতার বিবর্তনের সাথে সাথে যখন আমরা অর্থাৎ মানুষেরা নিজেদের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীতে ভাগ করে নিয়েছি তখন সেই সুরও ভাগ হয়ে গিয়েছে আপন আপন বৈশিষ্ট্যে। তবুও ভেতরের একটা চোরাস্রোত সমস্ত সুরকেই ছুঁয়ে ছুঁয়ে বেঁধে ফেলছে একসূত্রে। ভারতীয় সভ্যতাও এক বহুবর্ণের সমাহার কিন্তু ঐ যে চোরাস্রোত যা সমগ্র ভারতবাসীকে একসূত্রে বেঁধে ফেলেছে তা হল "জনগনমন অধিনায়ক"। আহ!কি প্রচন্ড আবেগ ঐ সুরে আর কি প্রচন্ড আবেগ সুরস্রষ্টাকে ঘিরে। সেই সুরস্রষ্টারই আরেকটি সৃষ্টি
"আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে। তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে।।"
মৃত্যুকে বন্ধু করে নেওয়া এক মহান প্রাণই লিখতে পারেন এমন কথা। প্রতিপদে শোকাগ্নিতে শুদ্ধ হয়ে আর আগুনের পরশমনি মেখে অমরত্বের কোনো প্রত্যাশা না করেই এই যে মনের গভীরে চির আসন পেতে ফেলা তা একমাত্র সম্ভব তাঁর দ্বারাই যিনি খাদ থেকে টেনে তুলতে পারেন সমগ্র সভ্যতাকে। তাঁর তো মৃত্যু নেই,ক্ষয় নেই।আছে সেই সুর, সেই গান যাতে বলা হয়েছে,
"আমার এই দেহখানি তুলে ধরো,
তোমার ওই দেবালয়ের প্রদীপ করো—নিশিদিন আলোক-শিখা জ্বলুক গানে
আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে॥"
=======০০০০=======
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন