Featured Post
রম্যরচনা।। হায় কপাল ।। অমিয় আদক
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
হায় কপাল
অমিয় আদক
আমাদের ললাট বা কপালে কুঞ্চিতচর্মে বেশ কয়েকটি সমান্তরাল এবং পরস্পরচ্ছেদী রেখা পরিলক্ষিত। অনেকেই মনেকরেন বিধাতা পুরুষ ওই রেখাগুলিতে ব্যক্তির ভাগ্যলিপি লিখে রেখেছেন পরম যতনে কিংবা চরম অবহেলায়। অনেক জ্যোতিষী ওই রেখাগুলির অবস্থান, বক্রতা, পরস্পরছেদিতা ইত্যাদি গভীর ভাবে অনুধাবন করে ভবিষ্যৎ গণনা করেন।
'কপাল' অন্য অর্থে ভাগ্য বা অদৃষ্টকে বোঝায়। কপালের পরিহাস বলতে ভাগ্য বিড়ম্বনাই। তাকে কপালের দোষও বলতে পারেন। কপালের লিখন বা ভাগ্যের লিখন বা অদৃষ্টলিপি যাই বলুন, তাকে খণ্ডাবার ক্ষমতা আমাদের মত ইতর মনুষ্যদের নেই। এমনটা অবশ্য আমরা দুর্বল চিত্তের মানুষরাই ভাবি।
আমরা সব দোষই কপালের উপর চাপিয়ে দিই। বলি, 'কপালের নাম গোপাল।' আমরা অনেকে লটারির টিকিট কিনে কপাল ঠোকার বা ভাগ্য পরীক্ষার চেষ্টাকরি। আমাদেরতো পাথর চাপা কপাল। লটারির পুরস্কার লাগেনা পোড়া কপালে। আমাদের অর্থক্ষতি বা অনুরূপ দুর্ভাগ্য জনক অবস্থায় কপাল চাপড়ানো ছাড়া আর কি উপায় আছে বলুন? আমাদের বরাবরের ভাঙা কপাল। কপাল ফেরা সম্ভব নয় বলেই ধরে নিই। কত লোকের দেখছি কপাল ধরছে বা কপাল খুলছে বা কপাল ফিরছে। কিন্তু হায়! আমাদের টনটনে পাথুরে কপাল। সৌভাগ্যের আঁচড়টি পর্যন্ত পড়েনি। সেই কপালে বিন্দুমাত্র উন্নতির চিহ্ণও নেই।
আমাদের আশেপাশেই কত কড়ি কপালে লোক ঘুরছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সাধারণ অবস্থা থেকে কোটিপতি হল। আমাদের ফুটো কপাল। কপালে হাত দিয়ে হাহুতাশ করছি। কতকাল কপাল চাপড়াচ্ছি তার হিসেব নেই। ওইযে একটা প্রবচন, 'কপালে নেইকো ঘি, ঠক্ঠকালে হবেকি?' সত্যিই আমাদের ফাটা কপালে বা ফুটো বরাতে কিস্সু নেই। আমরা অপরের পয়া কপাল দেখে নিজের কপাল চাপড়াচ্ছি। আর একটি প্রবচন সেওতো আমাদের উদ্দেশ্যেই লেখা, 'কপালে থাকিলে গু (বিষ্ঠা), কাকে এনেদেয়।'
আমরাতো জন্মলগ্নে কপালে রাজটীকা নিয়ে জন্মাইনি, যে রাজা হব। এখন রাজা হওয়া না যাক, কপালে রাজটীকা থাকলে রাজনৈতিক জীবনে জয় অনিবার্য্য। তাহলে অন্ততঃ এম এল এ বা এম পি হওয়া যেত। সেওতো আজকের দিনে প্রায় রাজা হওয়ার সামিল। যদি কপালে অদৃশ্য একটা ছোট্ট রাজটীকাও থাকত, তাহলে নিদেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অথবা গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধানতো হওয়া যেত।
এসব ভেবে লাভ কি? কপালেতো এসব নেই। তাই সময় সময় কপালে করজোড়া রেখে বিধাতা পুরুষকে বলি, 'হে ললাট লেখক, আগে যা লিখেছ তা ইরেজার দিয়ে মুছে দাও। নতুন করে অন্য ললাট লিখন লিখে দাও। তোমার আগের লেখার ঠেলায়তো আমার জীবন, আমার ভুবন সবই অন্ধকার। আর তা না পারতো, কোন ভাগ্যবানের ললাটলিপির সঙ্গে আমার ললাটলিপির বিনিময় ঘটিয়ে দাও। আর একান্ত না পারতো, আমার অদৃষ্টলিপির নিচে অন্যের কিছু সৌভাগ্যলিপি টুকে দাও। এখনতো টোকাটুকির যুগ। আমার জন্যে এটুকু টুকতে পারবেনা ঠাকুর? আমি কপাল সমেত মাথাটা ছুঁয়ে দিব্যিকরে বলছি, কপাল একটু ফিরলেই তোমার ধূমধাম করে পূজোদেব। কোন ভুল হবেনা।'
কিন্তু কপালঠাকুর কি কথা শুনবেন? বদলাবে বরাত? কোন আশাই নেই। তবে নিরাশাও পোষণ করছিনা। কেন জানেন? ওই প্রবচনটার কথা ভেবে। 'আল্লা যব দেতা হ্যায়তো, ছাপ্পর (বরাত) ফাড়কে দেতা হ্যায়।' যদি সত্যি কোনদিন আল্লা ওই রকম ছাপ্পর ফাড়কে দেন। ওই আশায় কপালে জোড়াহাত ঠেকিয়ে চুপচাপ বসে। দেখি অদৃষ্টের দরজা 'খুলজা সিম সিম' করে খুলে যায় কিনা?
ভবিষ্যত দ্রষ্টারা, যাঁরা কপাল বা ভাগ্যকে ফালাফালা করে বিচার করেন। তাঁরা নিজেদের বাঁচাতে একটা বেশ চালাকির গ্যাঁড়াকল ফাঁদেন। তাঁরা বলেন, 'আপনি ভালো ফল পাবেন কেবল আপনার ভাগ্যের জোরে নয়। তারজন্য আপনার চেষ্টাও যথেষ্ট থাকতে হবে।' যেমন কোন ব্যক্তিকে বললেন, 'আপনার জন্মলগ্ন থেকে রাশি, নক্ষত্র ইত্যাদি সবকিছু বিচার করে দেখলাম আগামী তিন মাসের মধ্যে আপনার ভাগ্যে বিশাল পরিবর্তন আসছে।' তিন মাসের জায়গায় তিন বছর পেরিয়ে গেল। ভাগ্য উল্টো দিকে মুখ ফিরিয়ে নিল। সার্বিক অবস্থা যা ছিল, তার চেয়েও খারাপ হল।
জ্যোতিষীর নিকট এসে ওই ব্যক্তি প্রশ্ন রাখলেন, 'কী মশাই আমার ফুটো ভাগ্যের তো কোন পরিবর্তন ঘটল না? উল্টে ভাগ্য খারাপ অবস্থায় চলছে।' জ্যোতিষী হাস্যমুখে দন্ত বিকশিত করে সবিনয়ে জানিয়ে দিলেন, 'নিশ্চয় আপনার চেষ্টায় কোন ত্রুটি ছিল। নাহলে আমার গণনায় কোন ভুল নেই, ভুল ছিল না। তবে আপনি আমার প্রেস্ক্রাইব করা গ্রহরত্নগুলো ধারণ করলে মনেহচ্ছে ফল পাবেন।' তারপর সেগুলির আকাশ ছোঁয়া মূল্য, প্রাপ্তিস্থান, ব্যবহার বিধি, শোধন পদ্ধতি ইত্যাদি সবিস্তারে জানিয়ে ক্লায়েন্টকে বিদায় করবেন। আর আপনি ঠকে গেলে যে ক্রেতা সুরক্ষায় জানাবেন তারও উপায় নেই। কারণ, লিগাল ডকুমেন্ট আপনার হাতে তেমন কিছুই থাকেনা।
দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক, বার্ষিক অথবা শারদীয়া যে কোন পত্র-পত্রিকায় রাশিফল এবং ভাগ্য বিচারের ছড়াছড়ি ও বাড়াবাড়ি। জ্যোতিষীদের মেলা বা হুড়োহুড়ি। যেন প্রচারপত্রে জায়গা নিয়ে জ্যোতিষীদের কাড়াকাড়ি। অনেক পত্রিকায় স্বনামধন্য ভাগ্যবিচারকারীদের ছবিসহ পেল্লাই বিজ্ঞাপন। সে বিজ্ঞাপনে কি নেই? বশীকরণ, মামলায় জয়লাভ, আর্থিক উন্নতি, বদমেজাজি সন্তানকে ঠিক পথে ফিরিয়ে আনা, বিপথগামী স্ত্রীকে স্বপথে ফিরিয়ে আনা, সাংসারিক শান্তি ফিরিয়ে আনা। আরও কত কী। তাঁরা যেন সৌভাগ্যের পসরা নিয়ে বসে আছেন আপনাদের জন্য। অন্যভাবে ভাবলে তাঁরা যেন সৌভাগ্যের ফেরিওয়ালা এবং ফেরিওয়ালী। ভাগ্যদেবীর বরপুত্র এবং বরপুত্রী। আপনার ভাগ্যকে ফিরিয়ে দিতে বিজ্ঞাপনের বিপুল বহর নিয়ে অপেক্ষমান।
বেশ কয়েকটা টিভি চ্যানেলেও ওই সৌভাগ্যের ফেরিওয়ালা ফেরিওয়ালীদের বিস্তর দেখাযায়। তাঁদের মধ্যে আবার কেউ কেউ চ্যালেঞ্জ দিয়ে ভাগ্য পরিবর্তনের দাবীকরেন। ভাগ্যকে জানতে তাঁদের লাইভ অনুষ্ঠানেও ফোন করার সুযোগ আছে। তাঁদের সামনে ল্যাপটপ। তাঁরা ভাগ্য বলেন ফটাফট। আপনার জন্ম সময় এবং রাশির রশিধরে এমন টান মারবেন আপনার বন্ধুগ্রহ, বিরুদ্ধগ্রহ, আপনার চাকরি, ব্যবসা, বিয়ে, প্রেম, পড়াশোনার ভবিষ্যত ইত্যাদির খুঁটিনাটি পলকে পুলকিত ভাবে আপনার সামনে হাজির হবে। ওঁদের ল্যাপটপতো আলাদীনের আশ্চর্যপ্রদীপ। যা জানতে চাইবেন তাই জানিয়ে দেবে। আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনার রূপকার হিসাবেও তাঁদের পরামর্শ বর্ষন করতে থাকবেন। বিবাহ, চাকরি,আর্থিক উন্নতি, অবনতি, সুসময়, দুঃসময় সব তাঁদের ল্যাপটপ দর্পনে দর্শনকরে আপনাদের জন্য পরামর্শের ফুলঝুরি-ফুলকি ফরফর ঝরিয়ে দেবেন।
আবার সেই সময়ে তাঁদের লাইভ প্রোগ্রামের রানিং ক্যাপসনে দেখতে পাবেন কোন্ শহরে, কোন্ তারিখে, কখন, কোন্ গ্রহরত্নের দোকান বা হোটেলে বসছেন বা নিজস্ব চেম্বারে বসছেন। তারসঙ্গে জানতে পারছেন একাধিক মোবাইল নম্বর। কোন্ নম্বরে কোথাকার জন্য অগ্রিম বুকিং করাযাবে, তাও ওই ক্যাপশনে পেয়ে যাবেন। আমি মশাই অবাক হয়ে কেবল ভাবি, যে দেশে এতো সৌভাগ্যের ফেরিওয়ালা, সেইদেশে কপাল ফুটো জনগণের সংখ্যা এতবেশি কেন? তাহলে কি আমাদের দেশের কপালটাই বেজায় ফুটো? নাকি আমাদের জীবনে চাওয়া পাওয়ার বহরটা বেমক্কা বেড়েগেছে।
হে, সৌভাগ্যের কারবারিগণ, অমুক মা, তমুক দেবী, আদি, অনাদি, আসল, নকল, ভৃগু, বরাহ, মিহির, শাস্ত্রী, আচার্য্য, জ্যোতিষার্নবগণ, আপনাদের পরামর্শে অন্যদের কপালের বদল ঘটুক না ঘটুক, আপনাদের সৌভাগ্য উপবনে চিরবসন্ত বিরাজমান থাক। আপনাদের সৌভাগ্যের বাগিচায় দেদার ফুল ফুটুক। এই কামনাই কায়মনোবাক্যে করি। তাই বলে দয়াকরে আমার মতো অভাগার দিকে রোষদৃষ্টি দেবেন না। আপনাদের ভীষণ ভয়লাগে আমার। কারণ রাহু, কেতু ইত্যাদি গ্রহগণকে আপনারা বিলক্ষণ চেনেন। দয়াকরে আমাদের দিকে ওই গ্রহদের ভুলিয়ে ভালিয়ে লেলিয়ে দেবেন না। একেতো বিড়ম্বিত ভাগ্য আমাদের। তার উপরে আপনাদের রোষানল পড়লে বিড়ম্বিত শুষ্কভাগ্য পুড়ে ছাই হতে আর বাকি থাকবেনা। অপরাধের জন্য আপনাদের চরণকমলে কপাল ঠুকেই না হয় ফুলিয়ে নেব। তাহলে খুশি হবেনতো?
কপাল বা ললাটকে আমরা অন্য অর্থে অদৃষ্ট বা ভাগ্য হিসাবেও জানি। কপাল আমাদের মুখমণ্ডলের উপরের অংশ। আমাদের ভ্রূযুগলের উপরে এবং মস্তকের কেশরাজির নিম্নে অবস্থান করে। কপালের বা ভালের বিস্তৃতি অনুসারে বড় কপাল বা ছোট কপাল বললেও, আমাদের মুখমণ্ডলের ওই অংশটি ভাগ্যের দ্যোতক হিসাবেই সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত। আবার কপাল অর্থে মাথার খুলিকেও বিশেষ ক্ষেত্রে বোঝায়। যেমন আমরা দেবী কালিকাকে কপালমালিনী নামেও অভিহিত করি। আবার ক্ষুদ্র কপাল বিশিষ্ট নারীকে আমরা বলি কপালিকা। কারও কপাল অংশ সামান্য উচ্চতাযুক্ত হলে আমরা বলেথাকি উটকপালে বা উটকপালী।
মুখমণ্ডলের অংশ হিসাবে কপাল বা ললাটকে নারীপুরুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে ভূষিত করেন অথবা অঙ্গরাগে চিত্রিত করেন। হিন্দু সধবাদের ললাটের মধ্যে রক্তবর্ণ সিন্দুরবৃত্ত সত্যই অনুপম শোভা সৃষ্টিকরে। যদিও বর্তমানে সেটির বিকল্প হিসাবে টিপের ব্যবহারই অনেক বেশি। শৈশবে মা বা মাতৃতূল্য কারও ক্রোড়াসীন অবস্থায় কল্পনার চাঁদের টিপ সবাই পরেছি। তখন কতই শুনেছি 'চাঁদের কপালে চাঁদ টিপদিয়ে যা।' কত সংখ্যায় টপাটপ ঝপাঝপ কপালে পরেছি বিনেপসায় কল্পনার টিপ, তার ইয়ত্তা নেই।
অন্নপ্রাশন, বিবাহ, জন্মদিন বা অনুরূপ শুভানুষ্ঠানে কপালে শ্বেতচন্দনের দীর্ঘ আলিম্পন বালকবালিকা, নারীপুরুষ সকলকেই শ্রী মণ্ডিতকরে। বৈষ্ণব বৈষ্ণবীগণ ভক্তির আতিশয্যে শ্বেতচন্দনের অথবা গোপী চন্দনের দীর্ঘ তিলক ও বিচিত্র আলপনায় ললাট চিত্রিত করেন। কাপালিক, শক্তিআরাধকদের ললাট সিন্দুর ও রক্তচন্দনে ভূষিত থাকে যেন ভয়ের উদ্রেক করানোর জন্য। শৈবগণের ললাটে সমান্তরাল কয়েকটি চন্দনের রেখা, শিবভালের অনুকরণে অঙ্কিত।
ভাইফোঁটা বা ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার সময় শুভ্র শ্বেতচন্দনের ফোঁটা দিদি অথবা বোনেরা ভাই বা দাদাদের কপালে দিয়ে থাকেন। সেইসঙ্গে ভাই বা দাদাদের মঙ্গল ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন। হরিবাসরের অনুষ্ঠানে পুরোহিত উপস্থিত প্রায় সকলের কপালেই শ্বেতচন্দনের ফোঁটাদেন। তিনি কি চুপিসাড়ে ফোঁটা দেওয়ার ছলে উপস্থিত ভক্তসংখ্যা গণনা করেন? কোন পূজার হোমান্তে হোমকজ্জলি বা কশ্যপটীকা উপস্থিত ভক্তগণ সাগ্রহে ললাটে ধারণ করেন। এখন রাজতন্ত্রও নেই, তবে রাজবংশ কিছু অবশিষ্ট আছে। রাজাদের সময়ে রাজপরিবারের সকল পুরুষ সদস্যগণ ললাটে রাজবংশের প্রতীক সূচক টীকা, যেমন সূর্যচিহ্ণ, চন্দ্রচিহ্ণ, পদ্মচিহ্ণ, অঙ্কুশচিহ্ণ ইত্যাদি ধারণ করতেন।
এককালে মেয়েরা ললাটকে শোভিত করার নিমিত্ত স্বর্নভূষন হিসাবে টায়রা, টিকুলি, টিপ, বাগান ইত্যাদি ব্যবহার করতেন। বর্তমানে এগুলির ব্যবহার প্রায় নেই। আধুনিকাগণ ওই ধরণের অলঙ্কারে আর নিজেদের সাজাতে চাননা। দেখুন, সাবেকি অলঙ্কারগুলোর ক্যামন বরাতের ফের। তারা পুরানো ক্যাটালগ বুকে ছাপাছবি হিসাবেই থাকবে। অলঙ্কার হিসাবে আর কারও কপালে উঠবে না।
তবে দুঃখলাগে বলির পাঁঠার কপাল নিয়ে। পুরুতঠাকুর তার কপালে সযত্নে সিঁদুরের টীকা আঁকেন। তারপর ব্যাচারার কি অবস্থা, তা নিশ্চয় কারও অজানা নয়। হিন্দু, জৈন ধর্মাবলম্বীদের মৃত্যুর পর মৃতদেহের ললাট চন্দন অথবা সিন্দুরে চিত্রিত করাহয়। এইসব অঙ্গরাগ শেষশ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশ্যে। হয়তো জীবিত অবস্থায় অনাদরেই কেটেছে। কিন্তু দেখাগেল মৃতদেহ সম্মানের অঙ্গরাগ পেল। ভাবুন ওই ব্যক্তির কেমন কপাল?
শেষেবলি হে কপালি, হে শিব, হে চন্দ্রভাল কপালক্রমে তোমার করুণা কণা, একটুও পাবোনা? কপাল মোচন তীর্থ কাশী, পুষ্কর সব জায়গায় যেতে রাজি আছি। তোমার করুণা লাভকরতে কপালে কেমন ফোঁটা আঁকতে হবে তাও জানিনা। অনভ্যাসের ফোঁটা কপালে চচ্চড় করবে কিনা তাও জানিনা। তবু কপাল ফেরাতে তোমার করুণাই ভিক্ষাকরছি মহেশ্বর। তুমি যদি একান্তই না পার আমার কপাল ফেরাতে। তাহলে নলহাটিতে মা ললাটেশ্বরীর নিকটেই যাবো। আমার ফুটিফাটা বরাত নিয়ে আর্জি জানাব মায়ের চরণে। তোমার বা মায়ের করুণায় যদি কপাল ফেরে, তাহলে অন্তত রবিঠাকুরকে কপি করে রোবটের মতোই বলতে পারব, 'হাস্যমুখে অদৃষ্টেরে করব মোরা পরিহাস।'
******************************************************
Vill+P.O. Chiladangi, Dist-Hooghly. PIN-712401.
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন