Featured Post

কবিতা ।। ঘরে ফেরা ।। বিপ্লব নসিপুরী

ঘরে ফেরা বিপ্লব নসিপুরী  বাতাসের গায়ে তাপের ছোঁয়া  রঙের তুলি শাখে বিষাদ মনে বিবাগী ঢেউ আছড়ে পড়ে ক্ষোভে।  নয়ন তীরে অশ্রুনদী  দুকূল ভাঙে স্রোতে ভিটে মাটি দোর কেড়েছে গোটা পরিবার কাঁধে। আকাশটা আজ ছাদ হয়েছে মাটির স্নেহ ঘর পরিচয়হীন মানুষের দল সবার একই স্বর। বছর শেষে নতুন বছর দিচ্ছে হাতছানি  ক্ষোভের বাষ্প বিষাদ কষ্ট  উবে যাবে কী জানি? অসম্মানের বিষফলা তীর বিঁধেছে ওদের বুকে এমন মলম কোথায় আছে স্বস্তি দেবে প্রাণে। হারিয়ে সবই খড়কুটো দেহ বইছে সময় নীরে নতুন বছর নতুন বাতাস আনুক ফিরে তীরে।  ************* বিপ্লব নসিপুরী  গ্রাম পোস্ট শীতলগ্রাম জেলা বীরভূম  পিন-৭৩১২৩৭ 

নারী বিষয়ক নিবন্ধ ।। বনশ্রী রায় দাস



ভেঙে দাও লজ্জার কপট কপাট

বনশ্রী রায় দাস



এ যেন ছেলে ভোলানো কথা সমস্ত অধিকার তোমায় দিলাম কিন্তু কোনো অধিকারই প্রকৃত   কার্যকরী হয় না কিংবা হতে হতে অর্ধেক জীবন   অথবা গোটা জীবনই পেরিয়ে যেতে পারে । আদপে নারীজাতি কী প্রকৃত মানুষের সম্মান     অথবা মর্যাদা পেয়ে থাকেন? আসলে অধিকাংশ পুরুষ নারীকে একটি নির্দিষ্ট গম্ভীর মধ্যে দেখতেই অধিক সাচ্ছন্দ বোধ করেন । নারী হবে সংসারী অঙ্কশায়িনী লাজবন্তী ইত্যাদি ইত্যাদি । হাতের তালুতে রেখে নাচিয়ে নেওয়া যায় ইচ্ছে মতো।তাই তো ঘরে বাইরে নারী প্রতিক্ষণে নিপীড়িত । যৌনতার নিরিখে যথেচ্ছ বববহার করা হয় বিজ্ঞাপন থেকে শুরু দেবতার আসন পর্যন্ত ।
                     পুরীর মন্দিরে প্রায় আটশ বছর ধরে নারীদের দেবদাসী বানিয়ে দেবতার চরণে উৎসর্গ করার রীতি প্রচলিত ছিল। পুরোহিতরা সেই সমস্ত কিশোরী কিংবা যুবতীদের দেবতার চরণে উৎসর্গ করে নিজেরাই যথেচ্ছ যৌনাচার চালাতো।তাহলে ভাবুন এরা এতোটাই পাপিষ্ঠ     মানুষের চোখে ধর্মের ধুলো ছিটিয়ে মন্দিরকে   করেছে যৌনতার কেন্দ্র ভূমি।তবে 2015 সালে এই বর্বরতা বন্ধ করা গেছে।খ্রিস্টান চ্যাপেলে  ও একই ঘটনা ঘটেছে 2019 এর গোড়ার দিকে     কেরলের সেন্ট ফ্রান্সিস মিশন হোমে ও একই ঘটনার স্বীকারোক্তি  দিয়েছেন এক প্রাক্তন মাদার সুপিরিয়র।জলন্ধরের বিশপ তাঁকে যৌন হেনস্থা করেছেন তবে এই বিবৃতি দেওয়ার পর ওঁকে চ্যাপেল থেকে বহিষ্কৃত করা হয়।ব্যাঙের ছাতার মতো যে সমস্ত সাধুবাবারা আশ্রম গড়ে তোলেন আড়ালে নারী পাচার দেহব্যবসা এই সমস্ত কারবার চলে ঈশ্বরের নামে ধর্মাচরণের নামে। যুগ যুগ ধরে কেন নারীরা এতো নিপীড়িত অত্যাচারিত ? তারা শারীরিক ও মানসিক গঠনে দুর্বল ও তাদের সহ্য ও ধারণ ক্ষমতাই তাদের অক্ষমতা । একটুতেই অভিমানী হওয়া ভীষণ ভালোবাসা আগলে রাখতে শেখা সর্বনাশের কারণ । মণিপুরের  গ্রামাঞ্চলে এক অদ্ভুত বেদনাক্লিষ্ট প্রথা আছে।কন্যা সন্তানের জন্মের পর তার সেই নরমদলা গলায় ফিতের মতো কাপড় জড়িয়ে রাখা হবে প্রায় পনের ষোল বছর পরে দেখা যাবে সেই মেয়েটির গলা রাজহংসীর মতো প্রায় বারো থেকে আঠারো ইঞ্চি লম্বা হবে।
তারপর তাকে বিভিন্ন মেলা  প্রদর্শনীতে বসানো হবে এক সঙ্গে চার পাঁচজন থাকবেন একটি দলে।তাদের দেখিয়ে হবে অর্থ উপার্জন।তাদের নাম দেওয়া হয় লম্বা গ্রীবা-রমণী ।পুতুল নাচ চলছে মেয়েদের নিয়ে পৃথিবীব্যাপী ।
এছাড়া সংবাদের খাঁজে খাঁজে নারী নির্যাতনের
রোজনামচা দেখতে দেখত ক্লান্ত স্রোত।বিষাদ আকাশ থেকে রক্ত ঝরছে চিতার আগুনে পুড়ে ছাই হচ্ছে উত্তরণের মেরুদণ্ড।
প্রথমত অশিক্ষার অন্ধকার দুর করতে হবে । স্বনির্ভর হওয়া একান্ত বাঞ্ছনীয়। মেয়েদের এক চোখে মায়া থাকলে অন্য চোখে থাকবে দাউ দাউ আগুন।হে আমার মা বোনেরা আর কতো রক্ত ঝরিয়ে কতো জীবনের আহুতি দিয়ে জেগে উঠবেন ছিন্নমস্তা ও জ্বালাময়ী রূপে ???
                 আমরা নারী হয়ে একটি লাঞ্ছিতা নারীকে পুনরায় ঘুরে দাঁড়ানোর উৎসাহ যোগাবো।পাশে দাঁড়াবার অঙ্গীকারবদ্ধ হবো।একজন নারী একাধারে লক্ষ্মী হয়ে সংসার সামলে রাখতে পারেন প্রয়োজনে দশভুজা হয়ে অসুর নিধনে সিদ্ধহস্ত। মেয়েদের নিজের সম্মান নিজেকেই ছিনিয়ে নিতে হবে। যেমন অধিকার বুঝে নিয়েছে দীপিকা যোয়েসাদের মতো সাহসিনী। হিংস্রতার আগুনে ঝলসানো মুখটিও ভয় পায় না ভীষণা হতে।ঘরে বাইরে হিংস্র নখের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে । প্রত্যেক নারীকে
সর্বংসহা নয় আগে হতে হবে স্বনির্ভরশীল । লজ্জার কপট কপাট খুলে দাঁড়াতে হবে সত্যের
মুখোমুখি । শক্তিরূপের জাগরণে মঙ্গল শঙ্খ বেজে উঠুক হৃদয় অঙ্গনে । 


###############

                                 বনশ্রী রায় দাস

শান্তিপুর দক্ষিণ পাড়া মেচেদা পূর্ব মেদিনীপুর 

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল