Featured Post

ছড়া ।। নতুন বছর ।। জয়দেব দাস

নতুন বছর জয়দেব দাস আর কটা দিন পরেই দেখো           বছর ভ্যানিশ হলে, হুশ করে এক নতুন বছর           আসবে হঠাৎ চলে। কেউ কি তাহার হদিশ পাবে           কোন সাগরের পারে, এই বছরটা থাকবে কোথায়?          কোন ইতিহাস ধারে।  একেই বলে ভেল্কি বাজি          জাদুর খেলা বটে, নতুন বছর নতুন হয়ে        আসবে মাঠে ঘাটে।  আসবে ফিরে সেই ঋতু সব      আসবে ফিরে মাস গুলা, শুকনো পাতা ঝরবে ফিরে       ফুটবে পুনঃ ফুল গোলা। গাইবে পাখি, মিলবে ডানা,      বাঁধবে বাসা গাছ ডালে। বছর যাবে আটকাবে কে,      যাক সে তবে, দুগ্গা দুগ্গা বলে।

মুক্তগদ্য // সুচেতা বিশ্বাস চৌধুরী।


 শক্তি রূপেন সংস্থিতা


-----------------------------------------

নিষ্পাপ মায়াবী ভোরের নমনীয় আলোক'মালায়,
ঘাসে ঘাসে মুক্তো ঝরা শবনমে পা ফেলতেই শীতল এক অনুভূতিতে সিক্ত হয় মনের বাতায়ন।
ক্রমশ আবিষ্ট হই মেয়েবেলার ফেরারি বাহারী গল্পে।                      

শরতের নীলাম্বরের আঙিনায় উঁকি দেওয়া সফেদ মেঘেদের মাঝে বিমুগ্ধ দুচোখ
হারায় দৃষ্টির পরিসীমা।
বাতাসের রন্ধ্রে রন্ধ্রে তখন মা.. মা গন্ধ,
সদ্য প্রস্ফুটিত শিউলি সুবাস ধরিত্রীর প্রতিটি কোণায় বিলিয়ে দেয় আগমনীর সুর।

বাঁধ ‌ভাঙে হৃদয়ের উচ্ছ্বাস।
চোখ বুজে এক ছুট্টে আমি যেন পৌঁছে যাই প্রফুল্লিত শুভ্র কাশেদের ঘন বনে।
ধুলো উড়ানো রাঙা মেঠো পথ পেরিয়ে ছুটতে থাকি আরো......
নির্দ্বিধায় পেছনে ফেলে আসি শহুরে জটিলতা, কংক্রিটের প্রাণহীন জংগল।

ক্রমশ নিঃশ্বাসের গভীরতায় মিশে যেতে থাকে হেমন্তের আমন ধানের ঘ্রাণ,
পরম যত্নে নিকানো দুগ্গা দালানের ভিজে মাটির খুশবু।
হৃদস্পন্দনের প্রতিটি ছন্দে ফের একবার অনুভূত হয় ঢাকের জয়ধ্বনি।

ফেলে আসা শৈশব যেন আমাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়‌ নিষ্পাপ সরলতায়।
যেখানে হয়তো কোথাও রেখে এসেছি আমার অমূল্য অপার্থিব চাওয়া পাওয়া;
হাত বাড়ালেই এখনো যাকে ছুঁতে পারি অবলীলায়।

দূরের খেয়াঘাটে অপেক্ষমান ইচ্ছামতীর শান্ত স্রোতের বুকে এলিয়ে পড়া প্রাচীন অশ্বত্থের ডালে যখন একফালি রোদ খেলা করে, 
পড়ন্ত গোধূলির সুবর্ণরেখা ধরে কৈলাশ থেকে বার্তা বয়ে আনে নীলকন্ঠ পাখি।
মায়ের আগমনী বার্তায় মরা দীঘির পদ্মবনে গুনগুন সুরে গুঞ্জরিত হয় কালো ভ্রমরের দল।

আমার ধুলি মাখা অন্তঃকরণ অবচেতনে   
শুনতে পায় নূপুরের রুনু'ঝুনু শব্দ,
অতন্দ্র আঁখিপটে ভেসে ওঠে আদিশক্তির অভয়প্রদায়িনী দিব্য স্বরূপ। 
আমার চিবুক ছুঁয়ে নেমে আসে আনন্দের বারিধারা,

বুকের গহীনে তমসার ঘনান্ধকারে জ্বলে ওঠে একশো আট প্রদীপ।
দিগন্তের ওপার থেকে তখন যেন পবিত্র দীপ্ত কন্ঠে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে " যা দেবী সর্বভূতেষু, শক্তি রূপেন সংস্থিতা,".....

অমলিন এই স্মৃতিদের ভীড়ে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েও ফিরিয়ে আনি এক একটি মণিমুক্তো, 
বুঝতে পারি এই মায়াময় ভূমন্ডলের বুকে নারীশক্তির অপরিহার্যতা, 
অনুভব করি আমারই হাতের মুঠোয় লুকিয়ে সৃষ্টির বীজমন্ত্র।

ভাবতে অবাক লাগে...শত অত্যাচার, ঠুনকো মান-অভিমান, অব্যক্ত যন্ত্রণা আর একরাশ অবহেলা পেরিয়েও আজও এই সুবিশাল নভোমন্ডলের নক্ষত্র তলে আমি এক জাজ্জ্বল্যমান জীবনীশক্তি।

"আমাতেই নিহীত সমগ্র বিশ্ব, সমগ্র বিশ্বের ব্যাপ্তিতেই আমি"। 

----------------------------------------------------------

সুচেতা বিশ্বাস চৌধুরী
সন্তোষপুর, কলকাতা- ৭০০০৭৫

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল