Featured Post

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

ছবি
   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন:  'লেখাটি স্বরচিত ও অপ্রকাশিত'। মেল আইডি :  printednabapravat@gm

ধারাবাহিক পুরাণকথা ।। লক্ষ্মী নন্দী






 পর্ব - তিন
                 

কল্কি অবতার

 
এর আগের সংখ্যায় বলা অনুযায়ী আজ তুলে ধরছি  বেদান্ত - বিজ্ঞানে  কলি ও কল্কি অবতার। কল্কি অবতার দশাবতার তত্ত্বের  শেষ অবতার। কথিত আছে যে কলির শেষে কল্কি অবতার আসবেন সত্য যুগের সূচনা করতে। তিনি আসবেন উড়ন্ত সাদা ঘোড়ায় চেপে, তাঁর হাতে থাকবে উন্মুক্ত তরবারি দশাবতার তত্ত্ব আসলে সভ্যতার এক একটা বাক। দশাবতার তত্ত্ব স্বামী বিবেকানন্দ খুব সুন্দর করে বিশ্লেষণ করেছেন। আমি  পড়েছি। তবে আমার লেখাটা একটু অন্যরকম হল। যেমর অবতার দশাবতার তত্ত্বের, মীন অবতার, কূর্ম অবতার, বরাহ অবতার, নরসিংহ অবতার, বামন অবতার, পরশুরাম অবতার, শ্রীরামচন্দ্র অবতার, বলরাম অবতার — এগুলো কোন ব্যক্তি নয়, এগুলো সভ্যতার এক একটা মুহূর্তের বিশেষ সন্ধিক্ষণ। সভ্যতার একটা ধাপ শ্রীরামচন্দ্র, সভ্যতার আরেকটা ধাপ পরশুরাম, বুদ্ধ অবতারও সভ্যতার এক স্টেজ। যিনি আড়াই হাজার বছর আগে একটা সভ্যতার বাঁক নিয়ে এসেছিলেন তখন এক নতুন যুগের সুচনা হয়েছিল, এক নতুন চেতনার যাত্রা শুরু হয়েছিল। নবম অবতার বুদ্ধের যুগ সেটা, কিন্তু সেই পরিবর্তনের বাহক গৌতম বুদ্ধ একা নন। মহাবীর জৈন ছিলেন, চব্বিশ জন তীর্থঙ্কর ছিলেন, বোধিসত্ত'রা ছিলেন, ইহুদিদের মধ্যে যীশু,ইসলামের  মহম্মদ ছিলেন এঁরা সবাই মিলে এক প্লাবনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, যার প্রভাব শুধু ধর্ম জগতে নয়, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, বিজ্ঞান, শিল্প, সকল ক্ষেত্রেই প্রসারিত হয়েছিল। সবটা মিলিয়েই নবম অবতার 'বুদ্ধ'।

দশম অবতারের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এক চিহ্নিত সন্ধিক্ষণের চৌকাঠে দাঁড়িয়ে আছি আমরা। মহাশক্তির অবতরণ হচ্ছে। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু, শ্রী রামকৃষ্ণ,  লালন ফকির, বামাক্ষ্যাপা, সাঁই বাবা, স্বামী পরমানন্দ, অনেকেই এসে ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়ে গেছেন। এখনও অনেকেই অন্তরালে কাজ করে চলেছেন। বর্তমান কিন্তু দেখা যাচ্ছে ভালো মানুষের সংখ্যাও প্রচুর। তাঁরা নিজের সম্বন্ধে এবং চারপাশের সমাজ ও প্রকৃতি সম্বন্ধে  এত বেশি সচেতন যা আগে পৃথিবীতে কোন কালে হয়নি। মানে আমি বলছি এত উন্নত পৃথিবী আগে কখনও আসেনি। যদিও পৃথিবীর ইতিহাস ঘাটাঘাটি করলে পাঠক নিজেরা অারো বেশি বুঝতে পারবেন। সুতরাং কল্কি অবতার কোন একজন  নন। যে যুগের অধিকাংশ মানুষ অন্নগত প্রাণ, দেহকেন্দ্রিক, তামসিক, অজ্ঞান, মূঢ়। তার রূপান্তর ঘটা শুরু হয়ে গিয়েছে । এখন মানুষ বিজ্ঞানের যুক্তি ছাড়া আর কিছু মানছে না। ধর্মকেও সুন্দর বিজ্ঞানের যুক্তি দিয়ে পরিবেশন করতে শিখছে। ত্যাগীরা তো বটেই  অনেক  সচেতন মানুষ এখন নীরবে, নাম, খ্যাতি ও সম্মানের কথা না ভেবে  মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করে চলেছেন। অর্থাৎ  সার্বিক দৃষ্টিতে সেই সব মানুষ আগেকার থেকে এখন অনেক বেশি বিবেকবান। আমরা নিজেরাও তো দেখছি প্রকৃতিকে বাঁচানোর জন্য মানুষ বর্তমান অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এক সময়ে মানুষ  মনে মনে নদীকে  প্রকৃতি জ্ঞানে পুজো করা সত্ত্বেও নদী দূষণ প্রতিরোধে কোন ভূমিকা নেয়নি। এখন কিন্তু মানুষ এসব নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে  বুঝতে শিখেছে বাহ্যিক প্রকৃতি নোংরা হওয়ার কারণ আমাদের অন্তর প্রকৃতি কলুষিত হওয়া । যেমন বৃক্ষরোপনের সাথে শুরু হয়েছে বিজ্ঞান ভিত্তিতে  দূষণ নিয়ন্ত্রণকারী একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ। আগেকার দিনে  ঋষি বা তপস্বী বহু বছর ধ্যান বা তপস্যা করার ফলে কোনও একটা বিষয়ের ধীরেধীরে  অনুভূতি হোত, অর্থাৎ জীবনের গতি তখন  কম ছিল। তখন ছিল বেদ। এখন জীবনের গতি বিজ্ঞান  অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। স্বামীজী বলেছিলেন বেদান্তই হোক আগামীর ধর্ম। হয়ত সেই সময় এসেছে। 'বেদান্ত' মানে নিজেকে জানা এবং অদ্বৈত তত্ত্বের দিকে যাওয়া। সৎভাবে সত্যের সাথে সংযুক্ত হওয়া। বেদান্ত হল সত্য,  দর্শন ও জ্ঞানের  ভূমি। চেতনার ভূমি। বর্তমান অনেক মানুষই কিন্তু সেটা গ্রহণ করছেন। উপলব্ধি করছেন যে এর চেয়ে তীক্ষ্ণ যুক্তি আর নেই। 

শুধু বিশ্বাসে সব হয়না। একজন ভক্তের বিশ্বাস থাকলেও সব সময় যুক্তি থাকে না। ভক্ত বলবে — আমার মাথার ওপরে ঠাকুর আছেন, মা আছেন, তিনিই সব করছেন। তাকে যদি জিজ্ঞাসা করা যায় 'মা' কে? কোথায় তোমার 'মা'? তাঁকে দেখাও। ভক্ত বলবে — দেখাতে পারব না কিন্তু আমি জানি যে মা আছেন। কিন্তু একজন বেদান্তী যখন মায়ের তত্ত্ব ব্যাখ্যা করতে শুরু করবেন ভক্ত তখন চুপ করে যাবে। অর্থাৎ বেদান্তের ধর্ম, মানে  সত্যকে আন্তরিকভাবে খোঁজে পাওয়া।‌ অামরা হিন্দু হয়ে খুঁজছি , মুসলমান হয়ে খুঁজছি, শৈব হয়ে খুঁজছি, শাক্ত হয়ে খুঁজছি, বৈষ্ণব হয়ে খুঁজছি নাকি জৈন হয়ে খুঁজছি, হিংসা দিয়ে খুঁজছি, নাকি অহিংসা দিয়ে খুঁজছি, সেটা ব্যাপার নয় । কে কত ভাল হিন্দু, বৈষ্ণব, ইসলাম,  ইহুদি সেটাও গুরুত্বপূর্ণ নয়, আবার কোন ভাবে  সত্যকে খুঁজছি সেটাও গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমি সত্যকে খুঁজছি কিনা সেটাই হল আসল বিষয়। সেটাই বেদান্ত। বেদ, উপনিষদ, গীতা পড়ে এই সবকিছুর সার উপলব্ধি করলে সেটাকেই বলা হয় বেদান্ত। বেদ যেখানে অন্ত হয়ে গেছে, সেটাই বেদান্ত। আর বেদান্ত মানে সেখানে যুক্তি, বিজ্ঞান এবং দর্শনের গতি রয়েছে। এটাই কল্কি অবতারের প্রতীক। তিনি প্রচণ্ড গতিতে কাজ করে রূপান্তর ঘটাবে কলির। কারণ যারা অবিবেচকী, মুনুষ্যত্বহীন অধার্মিক, লোভী মানুষ, তারাই তো কলিযুগের অসুর। একটা সময় আসবে যখন তাদের সময়ও শেষ হয়ে যাবে। বিজ্ঞান আর আধ্যাত্মিকতা মিলিত হয়েই এই বিপ্লব ঘটাবে। তারই প্রতীক উড়ন্ত সাদা ঘোড়া ও ধারালো তরবারি। সেই তরবারি দিয়ে তিনি অজ্ঞান  কাটতে কাটতে আসবেন। এই কাটা হবে বিবেকের কাটা। বিবেকের নতুন জাগরণ ঘটিয়ে সেই তরবারি দিয়ে  তমোশক্তিকে কাটতে কাটতে বেরিয়ে যাবেন আবার কল্কি । এই অসুর নিধনে সারি সারি লাশ পড়বেনা কিন্তু রূপান্তর হবে মানুষের চেতনার। তখনই নতুন করে শুরু হবে  আবার সত্য যুগ। এই ইতিবাচক চিন্তাতেও অনেকটা স্বস্থি আছে। আছে নিরাময় প্রলেপ। সেই সঙ্গে নিজের চিন্তার বোধ বুদ্ধিকে একটু  এই চর্চায় নিবেদন করলাম। কেউ খুঁজে নিতে পারে নিজেকে পরিবর্তনের ইঙ্গিত। আবার উদার মহানুভব পণ্ডিত ও সন্ত -মহাত্মাগণ যদি সংশোধন করে দেন আমার কোনো ভুল  আমি কৃতঞ্জ থাকব।
 
---------------------------------------------------------

ঋণস্বীকারঃ
১/স্বামী বিবেকানন্দ - বেদান্ত দর্শন 
২/পরমানন্দ মহারাজ 
৩ /স্বামী -সারদানন্দ মহারাজ 
৪/ উপনিষদ্ - হরিকৃষ্ণদাস গোয়েন্দকা।
৫/ পুরাণ -উইকিপিডিয়া।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যার ডাউনলোড লিঙ্ক