তারপর। তারও পর। তারও অনেক পরে
কাঠের বোঝার মতো গোধূলি মাথায় নিয়ে
খাদান ফেরা মেয়েটি যেন সন্ধা তারা।
চলতি রূপের ছটা নেই। আছে ভরা শরীরী দমক,
কয়লারস্তরের মতো কুঁদে রেখেছ দেহজ বিন্যাস,
যেন কৃষ্ণকায় মেঘের আস্তরণ ঢেকে রেখেছে
ঝরণার গূঢ় শুভ্র উদ্দামতা।
একদম মুখোমুখি হাঁটুমুড়ে বসে আছে সম্মোহন
চোখের পলক পড়ে না। মুখে হড়িয়ার গন্ধ।
চোখে না বলা কথাসাগর। রক্তে ইশারা।
রাস্তার নির্জনতা ও লোলুপ চোখ টপকে
দেহাতি সন্ধ্যা তারাটি,
জোনাকি আলো আঁচলে বাঁধতে বাঁধতে
পৌঁছে যায় কুলি বস্তিতে।
খিস্তি খেউড় আর খিদের ভজনারতির মধ্যে
বিচিত্র পোকার মতো সে একটু একটু করে
সেঁধিয়ে যায়।
জীবনের এই তথ্যচিত্র
প্রতিদিনই রাত্রি এসে ঢাকা দিয়ে যায়,
জেগে থাকে শন ছাওয়া কুঁড়ের মাথা
গুমরে মরা কৃষ্ণকায়া বিরহ ও যাতনা,
কুঁড়ের ভিতর থাকে খাদানের প্রস্তর ভাঙা
হীরের মতো উজ্জ্বল দেহাতি সন্ধা তারা!!
/*\
কবিতা পাঠের আসর
এই প্রথম আমার তীর্থের কাক দর্শন
ছড়ানো বেঞ্চের ওপারে একটি টেবিল দুটি চেয়ার ,তিন জন অতিথি,একজন ওয়েটিং-য়ে
একজন চলে গেলেই ওয়েটিং অতিথির উসখুস
চেয়ারের বাসনা উইপোকার মতো ফরফরে!
কবিতার পর কবিতা পড়া চলছে
বিরামহীন কবিতা পাঠের মহাযজ্ঞ।এ যেন পৃথিবীর দীর্ঘতম কবিতাটি আজই লেখা হবে!
কেউ কারো কবিতা মনে দিয়ে শুনছে না
অথচ সবাই নিজের কবিতা শোনাবেই।
ওয়েটিং কবি
আর এ সি কবি
থ্রি টায়ার
টু টায়ার
সেকেণ্ড ক্লাস
ফার্স্ট ক্লাস কবি
এসি চেয়ারকার কবি
এখানে যেন গিজগিজ করছে স্টেশন চত্বরে কবিরা, সবাই তীর্থের কাক!
এই বুঝি ডাক আসে
এই বুঝি ডাক আসে
এ দাও ফস্কালে ভাই শেষ ট্রেন ছেড়ে চলে যাবে
কবিতার বোঝা নিয়ে বল কবি দাঁড়াবে কোথায়!
কবিতা লিখি বলে,
অপরাজিতা!আমাকেও কি তীর্থের কাক ভেবে নিলে!
=========
সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
৭পি/১, রাম রোড,সরসুনা,
কলকাতা-৭০০ ০৬১
ফোন-৯৪৩২২২২৪৬৩
********************
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন