নারীসত্ত্বা
নারীসৌন্দর্যের পরিশীলিত অবয়বের কাছে নিজেকে তার খুব তুচ্ছ মনে হয়। কিন্তু, সে নিজেও জানে না যে সে আসলেই কতটা সুন্দর। তার অসাধারণ, অনমনীয় ব্যক্তিত্বই তার সৌন্দর্যে আলাদা মাত্রা যোগ করে। তার ছেলেমানুষী, তার সরলতা, গালফোলানো অভিমান, একপলক নীরব চাহনি .... তাকে করে তোলে মোহময়ী। তার নিষ্পাপ হাসি কিংবা কাজল-কালো চোখদুটির গভীরতা অনেক। মাঝে মাঝে মনে হয়, ডুব দিই সেই জলতরঙ্গে, ভেসে যাই, ভাসিয়ে দিই সবকিছু, কারন সেই বারিধারা যে অমূল্য।
কিন্তু, আফসোস একটাই ! মাঝে মাঝে রাগ, দুঃখ,অভিমানগুলো এতোটাই প্রভাবশালী হয়ে দাঁড়ায় যে, তার ব্যাক্তিত্ব ঠুনকো হয়ে যায়, প্রতিবাদী মনটা ভিজে যায় আবেগে, হারিয়ে ফেলে প্রতিবাদের ভাষা।সবকিছুর জন্য নিজেকেই দায়ী করতে থাকে অবুঝ মন। নারীহৃদয় ফুঁপিয়ে মরে,জ্বলে- পুড়ে যায় অন্তকরন। "বুক ফাটে তবু মুখ ফোটে না !!! " দৈনন্দিন জীবনের অসম্মান, অপমান, লাঞ্ছনা, প্রত্যাখান সব যেন তার একারই প্রাপ্য। মন, প্রাণ উজাড় করে ভালোবাসো, কিন্তু ভালোবাসা পাওয়ার আশা করো না। তোমার ভালোমানুষি, অন্যের চোখে তা নিছকই ভনিতা। যদি হও প্রতিবাদী, তবে তুমি নষ্টা থুড়ি ঘৃণ্য। মেনে নাও, মানিয়ে নাও ! তুমি না নারী, তুমি না সব পারো। তুমি সহনশীলা, তথাপি অসহনীয়।
ওরে মেয়ে! আগে নিজেকে ভালবাসতে শেখো। আর যদি সেটাই করতে না পারো, তাহলে আশা করো কী করে, যে অন্যেরা তোমায় ভালোবাসবে, সম্মান করবে ? যদি কেউ তোমাকে ভালো না বাসে, তাহলে হাজার চেষ্টা করেও, হাজার মাথা খুড়েও, আর যাই হোক, ভালোবাসা পাবে না। আর যদি কেউ তোমাকে সত্যিই ভালোবাসে, তাহলে সে শত চেষ্টা করেও তা লুকিয়ে রাখতে পারবে না। তাই, অন্যের চোখে নিজের জন্য ভালোবাসা না খুঁজে, খোলা আকাশে চোখ মেলো। নিজের চোখের তারায় নিজেই আয়না ধরো। ভালো করে চেয়ে দেখো তো, সেই চোখের তারায় অন্য কারোর মুখের আদল স্পষ্ট হয় কী না !!!
===================
স্নেহা দেব। চাকদহ, নদীয়া।