Featured Post

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

ছবি
   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন:  'লেখাটি স্বরচিত ও অপ্রকাশিত'। মেল আইডি :  printednabapravat@gm

মুক্তগদ্য ।। নববর্ষের কুচুটে ভাবনা ।। মুক্তিপ্রকাশ রায়

 

নববর্ষের কুচুটে ভাবনা

 মুক্তিপ্রকাশ রায়


নববর্ষের শুভেচ্ছায় যখন ইনবক্স প্লাবিত, তখন কিছু ভাবনা বোতলের সোডার মতো নিজের থেকেই ভসভসিয়ে ওঠে (সুকুমার স্মর্তব্য)। বিশেষত হাতে কাজ না থাকলে মাথায় জিলিপি ভাজাই কুচুটে মানুষের বিধিলিপি। অতএব নববর্ষের প্রথম প্রভাতে এই শুভেচ্ছা-সুনামির কারণ অনুসন্ধানে ধূসর কোশগুলিকে জাগানোর চেষ্টা করা গেল।

     সত‍্যিই কি এমন সম্ভাবনা আছে যে নতুন বছরে আমাদের জন্য অবিমিশ্র সুন্দরের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হবে? শুধু এ-বছর নয়, কোনও বছরই কি এরকম কর্নওয়ালিসীয় পরিকল্পনা কার্যকর করতে সক্ষম? বাস্তববোধসম্পন্ন সব মানুষই জানেন -- তা অহিফেনবিলাসীর খোয়াবমাত্র। তাই "নতুন বছর শুভ হোক" কথাটির কোনও মানেই হয় না।

     বরং এ-কথা উপলব্ধি করতে বেশি মুণ্ডশ্রম দরকার নেই যে সময় এক অবিচ্ছিন্ন প্রবাহ --- একটি continuum। মানুষ নিজের কাজকর্মের সুবিধার জন্য তাকে ছোটোখাটো এককে বা ইউনিটে ভেঙেছে। অতএব নতুন বছর এইরকম এক কাল্পনিক ধারণা বই কিছু নয়। সময়ের নিরন্তর প্রবাহে এক চক্রান্তবিশেষ। পৃথিবীর নিজ কক্ষপথে একচক্কর ঘোরা শেষ হলে, সে যখন আবার পুরোনো পথেই টয়ট্রেন-জার্নি শুরু করে, আবহাওয়ার পুরোনো মেজাজ পাগলা দাশুর মতো জানান দেয় -- আবার সে এসেছে ফিরিয়া। একটি চক্রের অন্ত বোঝায় বলে নববর্ষ এক চক্রান্ত বলেই মনে হয় আমার।

     এতে কি প্রমাণ হয় না যে নতুন কিছু হওয়ার জো নেই পৃথিবীতে? ঋতুচক্রের মতোই পৃথিবীতে ঘটনাচক্র আছে। চাইলে একে অভিজ্ঞতাচক্রও বলতে পারেন। পুরোনো ঘটনাগুলোই কি ফিরে আসে না বারবার? আগের বছরের খুন, রেপ, প্রতিশ্রুতি, বিশ্বাসভঙ্গ, আনন্দ, উৎসব, জয়, পরাজয় -- এগুলোই ঘুরেফিরে আসে না কি? চরিত্রাভিনেতা পালটে গেলেও মূল নাটকটা তো একই রয়ে যায়! তাহলে মানুষ শুভেচ্ছা জানিয়ে ডেটাখরচ করে কেন? কোন বার্তা দিতে চায় তারা? বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেসব শুভেচ্ছা তো ব‍্যক্তিগত আবেগের প্রকাশও নয়; অন‍্যের শুভেচ্ছাবার্তার টুকলি! এ যদি কিছু প্রমাণ করে তা এক মনোরোগবিশেষ; গণহারে পাওয়া মেসেজের নৈর্ব্যক্তিক ফরোয়ার্ড-প্রবণতা! 

     তবে হ‍্যাঁ, প্রিয়জনের মঙ্গলাকাঙ্ক্ষাও থাকে কিছু শুভেচ্ছাবার্তায়; চক্রবৎ পরিবর্তন্তে ... ইত‍্যাদি জেনেশুনেও মানুষ চায় নতুন বছরে প্রিয়জনের শুধুমাত্র ভালোই হোক। কিন্তু সে-সব ব‍্যক্তিগত শুভেচ্ছা গণবার্তা হিসেবে পাঠানো হয় না। অনেক সময় তা অব‍্যক্তও থাকে। আমার বাবা যেমন "হ‍্যাপি বার্থডে" বলে কাউকে শুভেচ্ছা জানাতে লজ্জা পান। নিজের সন্তানকেও।

     অবশ্য যে-কোনও সামাজিক আচরণের মতোই শুভেচ্ছা-হিস্টিরিয়ার অন‍্য একটা তাৎপর্য হয়তো আছে। ব‍্যাপারটা অনেকটা টাই পরার মতো। ভেবে দেখুন, টাই জিনিসটা সামাজিক ফ‍্যাশন বই কিছু নয়। গলায় খামোখা একফালি কাপড় ঝুলিয়ে রাখি কেন আমরা? কী কাজে লাগে সেটা? দরকার পড়লে গলায় দড়ি দেওয়ার পক্ষেও তা অকিঞ্চিৎকর। একটা কবিতা পড়ে, সম্ভবত অরুণ চক্রবর্তীর, এই উপলব্ধি হয়েছে আমার যে কেবল এটা সামাজিকভাবে চালু হয়ে গেছে বলেই মানুষ টাই পরে। টাই পরে মানুষ নিজের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে। বলতে চায় -- দ‍্যাখো, আমি সামাজিক রীতি বা রেওয়াজ মেনে চলছি, অতএব আমি বেয়াড়া ধরনের নই। যেমন আমরা সবাই লক্ষ করে থাকব যে রাজনৈতিক দলগুলি মনীষীদের ব‍্যবহার করে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য। আপনি যেসব শ্রদ্ধেয় মানুষকে আইডল বানিয়েছেন, কোনও রাজনৈতিক দল যদি তাদের "শ্রাদ্ধ-শতবর্ষ" পালন করে, তাহলে আপনি ভাবতে পারেন -- এরা তাহলে তত খারাপ নয়!

     ছোটোবেলায় এনসিসি করেছিলেন কখনও? পায়ে পা মিলিয়ে চলতে শেখায় সেখানে। সমাজের ক্ষেত্রেও এই রেজিমেন্টেশন চলে। মিশেল ফুকো দেখিয়েছেন -- কীভাবে বেয়াড়া পদক্ষেপের ওপর নজরদারি চালায় সমাজ; প‍্যানোপটিক সমাজ, যা কিনা আদতে এক কারাগার।

     তবে যাই, আমিও শুভেচ্ছাবার্তাগুলোর উত্তর অন্তত দিয়ে আসি। হোক-না তা বারোয়ারি উত্তর বা অভ‍্যাসগত প্রতিবর্তক্রিয়া। তবু যে-দেশে ফেসবুক পোস্টের জন্য মানুষ গ্রেফতার হয়, গান লিখে কারাবাস, সে-দেশে নববর্ষের শুভেচ্ছার উত্তর না দিয়ে আমি আর neck-নজরে আসতে চাই না।


***********************


মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যার ডাউনলোড লিঙ্ক