প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

মু ক্ত গ দ্য
ওই গন্ধটাই বয়ে নিয়ে বেড়ায় পুরানো ইতিহাসের দস্তখত, আগে ঘটা সমস্ত ভুলের ধারাবিবরণী সনতারিখ সমেত। আর ইতিহাস আয়নার মত থালায় লেগে থাকা ভুলগুলো দেখালে রাগ হয় বরং, মুছে দিতে ইচ্ছে করে অনেকের। কাটাকুটি চলে তারপর। সত্যের গণহত্যা। অনাথ শিশুর মত অভিভাবকহীন সেসব গন্ধরা, বিশ্রী, পচে যাওয়া শরীর নিয়ে বেরিয়ে পরে কানাগলি, রাস্তা, বাজার, মোড়ের মাথায় ডাঁই করা জঞ্জালের বিভীষিকায়। বেহ্মদত্তিরা তখন কোথায়? মানুষের অন্ধকার ছিদ্রগুলো দিয়ে প্রবেশ করেছিল যারা? কাতারে কাতারে সেসব অচেনা বোঁটকা গন্ধরা জমানো জঞ্জালের পরিসরে একটু আলো খুঁজে পায়। মাথা গোঁজারটুকু জুটে যায় তাই অনেক। সার সার সেসব স্তুপ রাস্তায় দাঁড়িয়ে নিজের বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজনদের দেখে থাকে, যেতে আসতে তাদের মুখে খুঁজে ফেলে ব্যাখাহীন এক আঁধারের সম্ভার, নিঃশুল্ক প্রলাপের বান সংকেত চিকচিক করে ওদের অদৃশ্য চোখের পাতায়। একটা গল্প থাকে ওদের, মান অভিমানের পালা-পার্বণ, জটিল মনস্তত্ত্ব, বিকারমুখী সংরাগ সমেত অজস্র না পাওয়ার পাতায় ভরা। পাওয়ার পাতাগুলো বিনা ঢেকুরে হজম হয়ে গেছে তাই আর দরকার পরে না। শেষ যাত্রার মত কোন নামবিহীন ট্রেন, অজ্ঞাত, অবধারিত কোন প্লাটফর্ম যাকে চেনা কথায় ভাগাড় বলে, কারো কাছে ডাম্পিং গ্রাউন্ড নিয়ে একটা পরিকল্পনার মত বড় স্বপ্ন। হঠাৎ এক সকালে তারপর এক বিশাল চামচ ওয়ালা গাড়ি ওদের তুলে নেয় সৎকারের জন্য। কাকেরা কা কা ধ্বনি তোলে, বাতাসের ছোঁয়া লাগে, হর্ন বাঁজিয়ে শবযাত্রার গাড়ি বেরিয়ে যায় গন্তব্যে। যেন কোন অচিন, প্রাচীন ডিপো নির্দেশ দেয় মাইকে দুরের গাড়ি ছাড়ার সময় সম্পর্কে। শব্দবিহীন প্রস্থানে ওদের অতর্কিতে আক্রমণ পথচারীর নাকে থাবা বসায়, রুমাল চেপে শেষে কেউ কেউ বেঁচেও যায়।
![]() |
মুদ্রিত সংখ্যার প্রচ্ছদ |
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন