Featured Post

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি
  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল


সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য"

------------------------------------------------------------------------------

সুনন্দ মন্ডল



নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন।

‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও
ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', 'অমিতাভ', 'অমৃতাভ'। যদিও এগুলি এখন আলোচনার বিষয় নয়! বিশেষত 'রৈবতক'(১৮৮৭ খ্রী:), 'কুরুক্ষেত্র'(১৮৯৩ খ্রী:), ও 'প্রভাস'(১৮৯৬ খ্রী:)কে একত্রে 'ত্রয়ী'কাব্য বলে। এই 'ত্রয়ী' কাব্যই আলোচনার মুখ্য বিষয়।
‎ঊনবিংশ শতাব্দীর মহাকাব্যের ধারায় নবীনচন্দ্র সেনের শেষ কাব্য 'ত্রয়ী'। এটার জন্য তিনি ব্যয় করেছেন বহু বছর। উৎসর্গ পত্রে কবি নিজেই বলেছেন, "রৈবতক কাব্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আদিলীলা, কুরুক্ষেত্র কাব্য মধ্যলীলা এবং প্রভাস কাব্য অন্তিম লীলা লইয়া রচিত। রৈবতকে কাব্যের উন্মেষ, কুরুক্ষেত্রে বিকাশ এবং প্রভাসে শেষ।" প্রধানত শ্রীকৃষ্ণের জীবন কথা এই কাব্যের বিষয়বস্তু। বঙ্কিমচন্দ্রের মতে এই তিনটি কাব্য "ঊনবিংশ শতাব্দীর মহাভারত"। কারণ নবীনচন্দ্র সেন ঊনবিংশ শতাব্দীর যুরোপীয় সমাজদর্শন, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও নীতিতত্ত্বের দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে কৃষ্ণের মাধ্যমে নতুন মানবধর্ম প্রচার করতে চেয়েছিলেন।
‎কুড়িটি সর্গে রচিত 'রৈবতক' কাব্যে দেখি শ্রীকৃষ্ণের ধর্মরাজ্য গঠনের ব্রত, অর্জুন ব্যাস ও কৃষ্ণের আলোচনা, অর্জুন ও সুভদ্রার বিবাহ, কৃষ্ণ বিরোধী শক্তি দুর্বাসার প্রস্তুতি। ‎সতেরটি সর্গে রচিত 'কুরুক্ষেত্র' কাব্যে দেখি অভিমন্যু বধ, সুভদ্রার নারী ধর্ম, শৈলের কৃষ্ণ মহিমা কীর্তন। যদিও সেখানে 'অভিমন্যু বধ'ই কাব্যের কেন্দ্র। ‎তেরটি সর্গে রচিত 'প্রভাস' কাব্যে দেখি যদুবংশ ধ্বংস ও কৃষ্ণের দেহত্যাগের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে।

'রৈবতক'-এ কৃষ্ণের ধর্মরাজ্য প্রতিষ্ঠাই মূল ব্রত। তাই তার উক্তি---
"কেবা ইন্দ্র? বর্ষে মেঘ স্বভাবে চালিত,
সঞ্জীবনী সুধারাশি, স্বভাবে চালিত...."

'কুরুক্ষেত্র'-এ যদিও অভিমন্যু বধ কেন্দ্রীয় ঘটনা, তবু সেখানে নারী চরিত্ররা আর্য-অনার্যের মিলন ঘটাতে চেয়েছে---
"সে মহাপ্রয়াগ তীর্থ দেখিবে যেদিন
আর্য-অনার্যের শক্তি সুভদ্রা-শৈলজা
বহিতেছে এক স্রোত জাহ্নবী-যমুনা।"

'প্রভাস'-এ দেখি কৃষ্ণ দেবত্বে উন্নীত হয়েছে---
"বনের পাখিও যেন গাহিতেছে কৃষ্ণনাম
কৃষ্ণনামে নাচে মৃগ শিখী।....."

আসলে নবীনচন্দ্র কৃষ্ণ চরিত্রের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। তাই পৌরাণিক কাহিনী আশ্রিত রোমান্টিক প্রণয় ও গার্হস্থ্য রসের সমন্বয়ে সাহিত্যের মাটিতে 'ত্রয়ী' কাব্য নামক নতুন বীজের জন্ম দিতে পেরেছিলেন। যদিও নবীনচন্দ্র সেন মহাকাব্য সৃষ্টি করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন। কারণ এখানে তাঁর রচনাগুলি তত্ত্বপ্রধান হয়ে গেছে। কল্পনায় চমৎকারীত্ব থাকলেও তা পাঠক সংস্কার বিরোধী। কাব্যটি 'জীবন কল্পনা' ও 'জীবনের প্রত্যক্ষ সংযোগ সঞ্জাত' নয়। মূলত অতিরিক্ত ভাবাবেগ ও গীতিময়তা মহাকাব্যের গাম্ভীর্যকে নষ্ট করেছে।

গীতিকবিসুলভ আবেগী ভাবাপন্ন কবি নবীনচন্দ্র সঠিক মহাকাব্যের জন্ম দিতে পারেননি ঠিকই। তাই বলে তাঁর রচিত 'ত্রয়ী' কাব্য কোনো অংশে কাব্য হিসাবে ক্ষুন্ন নয়। কারন সকল ত্রুটি-অসংযম-অসাবধানতা সত্ত্বেও এই 'ত্রয়ী' কাব্যের জন্যই কবি হিসাবে পাঠকের মনে গ্রথিত হয়ে আছেন নবীনচন্দ্র সেন।

‎ ------------ : ------------

সুনন্দ মন্ডল
কাঠিয়া,মুরারই
বীরভূম

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত