Featured Post

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

ছবি
  "নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।  ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)।  আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব

সন্তোষকুমার দত্তের লোকসংস্কৃতি সংক্রান্ত লেখাজোখা --- অরবিন্দ পুরকাইত

সন্তোষকুমার দত্তের লোকসংস্কৃতি সংক্রান্ত লেখাজোখা

--অরবিন্দ পুরকাইত




কত যে গ্রামশস্যে সমৃদ্ধ শহরের ভাঁড়ার! যুগে যুগে গ্রাম থেকে আসা মানুষ
শহরকে সমৃদ্ধ করেছে তাদের শ্রম দিয়ে সৃষ্টিশীলতা দিয়ে। আদতে শহর কোনও
বিচ্ছিন্ন সীমায়িত ক্ষেত্র নয়, তার পটভূমি-পশ্চাদ্‌ভূমি হয়ে বরাবর পড়ে
থাকে চিরকালের গ্রাম।
সন্তোষকুমার দত্ত (১৬-০৬-১৯৩০ – ২৮-০৫-২০১৭) সে কথা স্মরণ করেছেন তাঁর এক
নিবন্ধে১ যেখানে তিনি বলেছেন, 'তৈরী-করা শহর আর হয়ে-ওঠা গ্রামের পার্থক্য
অনেকখানি, যেমন শহর কলকাতার সঙ্গে বারুইপুরের গ্রামীণ সংস্কৃতির বনিয়াদ
তৈরি হয়েছে গ্রামের মানুষের প্রাণরসে, আর শহরের সংস্কৃতির নেপথ্যে গ্রাম
থেকে শহরে গিয়ে বসবাস করা মানুষের অবদান।' দুটি দৃষ্টান্তও দিয়েছেন।
রামমোহন আর বিদ্যাসাগর। নিজে গ্রামের সন্তান বলে এটি আরও নিবীড় করে
বুঝেছিলেন তিনি। সাতচল্লিশ বছর বয়সে – যাকে বলে, প্রৌঢ়াবস্থায় – মগরাহাট
থানার নিজ গ্রাম গোকর্ণী থেকে শহরতলি বারুইপুরবাসী হন তিনি। অনেক আগে তিন
বছরের ব্যবধানে তাঁর একটি গল্পের বই (চেনা মুখ অচেনা মন, ১৯৬১) ও একটি
উপন্যাস (দ্বিধারা, ১৯৬৪) বেরিয়ে গেছে। ঘটনাচক্রে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ায়
তাঁর লেখাজোখার জগৎ প্রায় নগণ্য হয়ে যায়। শহরতলিতে আসার পর পুনরায়
ফলপ্রসূ হয়ে উঠতে থাকে তাঁর সৃজনশীলতার জগৎ - মূলত প্রবন্ধক্ষেত্রে। একে
একে প্রকাশিত হয় প্রবাহের বিপক্ষে (১৯৮৬), উজানপথে রামমোহন সমীক্ষা
(১৯৯১), বিভূতিভূষণ : স্বকাল ও একাল (১৯৯৩), প্রসঙ্গ : বিবেকানন্দ বিদূষণ
(১৯৯৩), তারাশঙ্করের সাহিত্য ও গান (১৯৯৭), নিঃসঙ্গ পথিক মোহিতলাল
(২০০০), সাহিত্য ও অন্যান্য ভাবনা-র তিনটি খণ্ড (২০০৪, ২০০৬ ও ২০১১),
সাম্প্রতিক বাংলা উপন্যাসের আট কথাশিল্পী (২০০৯), তিন রাজার রাজত্বে
(২০১৪)। একটি পত্রিকার (দেবযান, ১৯৮৩) সম্পাদনা বরাবর প্রধান সহায়ক হয়ে
থাকে তাঁর সেই সৃজনকর্মে। প্রসঙ্গত, সাহিত্য সৃষ্টিতে বারুইপুরের
ইতিবৃত্ত রচনাও সহজ নয় বলেছেন তিনি, কেন-না 'যে সংস্কৃতি মাটির সঙ্গে
ওতপ্রোতভাবে বিজড়িত, তাকে মাটি থেকে তুলে আলাদা করে দেখানো কঠিন'।
তাঁর মা বলতেন, তপ করো জপ করো মরতে জানলে হয়। তাঁর গ্রামেরই জাতক বর্তমান
নিবন্ধকারও আরও বহু বহু প্রবাদ-প্রবচনের মধ্যে এই প্রবাদটিও বহুবার
শুনেছে তার মা-দিদিমা-জেঠিমার মুখে। গ্রামের বিশেষত মহিলাদের মধ্যে
এগুলির নিঃসরণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। তাঁর আত্মস্মৃতি আয়নার সামনে-তে (১৪১৮)
আলাদা করে মায়ের প্রবাদ-প্রবচন প্রয়োগের কথা নেই। কিন্তু সম্ভবত এমন
একাধিক প্রবাদ-প্রবচন তাঁর মুখে উচ্চারিত হত। এই জেলায় প্রচলিত বেশ কিছু
প্রবাদ-প্রবচন জানা ছিল সন্তোষকুমারের। তাঁর লোকসংস্কৃতি ও স্বনির্বাচিত
বাংলা কথাসাহিত্য (২০০৭) পুস্তকের সূচনাপর্বে যে-সব প্রবাদ এসেছে তার বেশ
কিছুটা অংশই নিজস্ব – বোঝাই যায় গ্রামের মানুষ হিসাবে মা-ঠাকুমা-দিদিমা
বা পাড়া-প্রতিবেশীদের মুখে মুখে ফেরা থেকে যা সহজ অর্জন।
গ্রামের সন্তান হিসাবে গ্রামীণ সংস্কৃতি তাঁর অপরিচিত ছিল না। তবে সেই
পরিচয় অবাধ হতে পারেনি বালক সন্তোষের। 'গ্রীষ্মকালে যাত্রা-পুতুলনাচ
প্রায়ই হত। পয়লা বৈশাখ থেকে শুরু হয়ে প্রাক্‌-বর্ষা পর্যন্ত গ্রামের
বিভিন্ন স্থানে এগুলি লোকরঞ্জন করত। গ্রীষ্মকালে সন্ধ্যায় ঝড়-বৃষ্টি হলে
পরদিন ভোর থেকে বেলা পর্যন্ত পুতুল নাচ হত। তাতেও দর্শকদের উৎসাহের অন্ত
ছিল না।' – লিখেছিলেন তিনি স্মৃতিচারণামূলক এক রচনায়।২ নিজ গ্রাম বা
বিশেষত পার্শ্ববর্তী ঘনশ্যামপুর গ্রামে হওয়া যাত্রা-পুতুলনাচ দেখতে
যাওয়ার স্বাধীনতা তাঁর ছিল না। 'তখন আমি ছিলাম ক্ষুদ্র, দরিদ্র পরিবারের
শাসন-শৃঙ্খলায় বাঁধা ভীরু পল্লীবালক। বিনা অনুমতিতে কোথাও যাবার অধিকার
ছিল না – এমনকি যাত্রা-পুতুলনাচেও।'৩ অথচ সেই বালক-হৃদয় কতখানি আকুল ছিল
এ-সবের জন্যে তার পরিচয় পাওয়া যায় পার্শ্ববর্তী বোস পাড়ায় দুর্গাপূজার
নবমীর দিন যে নাটক হত তা নিয়ে তাঁর সেই অদ্ভুত উন্মাদনার কথা জেনে। বঙ্গে
বর্গী, গৈরিক পতাকা, সিরাজদ্দৌলা – প্রতি বছর নতুন নতুন পালা। তাঁদের
পাড়ার রাস্তা দিয়ে গরুর গাড়িতে যেত মঞ্চের সাজ-সরঞ্জাম, বাক্স-ভরা
সাজপোশাক। সেদিন সেই বালকের খেতে-বসতে মন লাগত না, ভালো লাগত না
সঙ্গীসাথীদের সঙ্গে মিশতে। কতবার যে বোসপাড়ায় যেতেন সেদিন! 'বড় বড়
সুপুরিগাছ আর বাঁশ দিয়ে স্টেজ বাঁধা হচ্ছে; ওপরে তক্তপোশ পাতা। পাড়ার
লোকজন কাজে ব্যস্ত, - আর একপাশে আমি অবাক চোখে চেয়ে। মনে হত দিনের বেলায়
এই জায়গাটা রাতের আলোয় অমন অপরূপ হয়ে ওঠে কেমন করে!'৪ বাবা-মা ঘুমোতে
বলতেন, না হলে থিয়েটার দেখতে পাবে না ছেলে। বালিশে মুখ গুঁজে পড়ে থাকতেন,
ঘুমোবে কে! 'সেদিন এই বালকের প্রাণে বেজে উঠতো বাঁশি যা ঘুম ভাঙায়, ঘুম
পাড়াতে জানে না। সেই বাঁশির সুরে থাকত ঘর থেকে বাইরে বের হবার ইঙ্গিত, শত
শত মানুষের মাঝখানে বসার আহ্বান। কত রাজ্যের ভাঙা-গড়ার কাহিনী! কত জাতির
উত্থান-পতনের ইতিহাস। ঘুম আসবে কেমন করে! বুকে হাতুড়ি পেটার শব্দ শুনতে
পাই।'৫ অবশেষে আসত সেই আকাঙ্ক্ষিত সময়, 'আনন্দে আর উত্তেজনায় হৃদপিণ্ড
লাফাতে থাকতো'। থিয়েটার শুরুর আগে কনসার্ট বাজত – হারমোনিয়াম, জলতরঙ্গ,
ক্লারিওনেট। 'প্রাণের প্রতিটি অণুকে জাগিয়ে, সমস্ত মনকে দোলা দিয়ে বেজে
উঠতো' ক্লারিওনেট নামক সেই সুরযন্ত্রটি। একসময় ড্রপসিন উঠে শুরু হত
থিয়েটার। লিখেছেন সন্তোষকুমার, 'সেদিন সেই বালক হৃদয়ে এমন একটা অনুভূতির
সঞ্চার হতো – যাতে মনে হতো আমিও যেন এই ঘরছাড়াদের একজন। ওদের সঙ্গে আমার
জন্মজন্মান্তরের পরিচয়। ... চোখে লেগেছিল স্বপ্ন-কল্পনার যে মোহাঞ্জন,
মনের কোণে অঙ্কুরিত হয়েছিল যে আশার বীজ, তা এক নতুন দিগন্তের সন্ধান
দিয়েছে।'৬
লোকসংস্কৃতিমূলক লেখাজোখা তুলনায় অপ্রতুল তাঁর। লোকসংস্কৃতি সংক্রান্ত
তাঁর লেখাজোখার এক এবং একমাত্র প্রধান কাজ আমাদের আলোচ্য পূর্বোক্ত
লোকসংস্কৃতি ও স্বনির্বাচিত বাংলা কথাসাহিত্য গ্রন্থটি। লোকসংস্কৃতি
সংক্রান্ত দু-একটি সভায় উপস্থিত থাকতে থাকতে, এমনই এক সভায় দু-চার কথা
বলার পর উদ্যোক্তাদের মধ্যে এক সম্পাদক তাঁর পত্রিকায় এ-বিষয়ে কিছু লেখার
অনুরোধ জানান এবং তা লিখতে গিয়ে তাঁর মনে হয়, 'লোকসংস্কৃতি বাংলা
কথাসাহিত্যে কিভাবে প্রতিফলিত হয়েছে - তা নিয়ে সম্ভবত তেমনভাবে আলোচনা
হয়নি।' তখনকার মতো সাধারণ ভাবে প্রবন্ধটি লিখে পাঠান এবং প্রায় সঙ্গে
সঙ্গে নিজের চিন্তামতো কাজ শুরু করেন, যার ফল উক্ত গ্রন্থ।
সাতাত্তর বছর বয়সে প্রকাশিত বইটিতে রয়েছে তাঁর আন্তরিকতা, শ্রম আর
বহুপাঠিতার প্রমাণ। তাঁর মনে সংশয় দেখা দিয়েছিল যে ওইরকম কাজ আগেই কেউ
করেছেন কি না। কিন্তু আমাদেরও মনে হয় বিক্ষিপ্ত ভাবে কোনও কোনও
প্রবন্ধ-নিবন্ধে বা কোনও সাহিত্যিকের উপর লিখিত পুস্তকে বা কোনও
সাহিত্যিককে নিয়ে কোনও পত্রিকার বিশেষ সংখ্যাতেই এমন এক-আধটা লেখা
প্রকাশিত হয় সচরাচর। ১৯৫৮ সালে প্রকাশিত প্যারীচাঁদ মিত্রের আলালের ঘরের
দুলাল (১৮৫৮) দিয়ে শুরু করে বেশ কয়েকজন সাহিত্যিক হয়ে, লোকসংস্কৃতির
প্রকাশের পরিচয় পেয়ে দেশ-পত্রে তখনও-ধারাবাহিক তিলোত্তমা মজুমদারের
রাজপাট-এর কয়েক কিস্তির উপর আলোচনা – এমনটি কেউ একই পুস্তকে করেছেন বলে
আমাদেরও জানা নেই।
তাঁর দ্বিধারা উপন্যাসের নিখিলকে আমরা দেখেছি যে সে নারী সেজে যাত্রা
করত। নিজের 'নূরজাহান' গল্পে একটি লোকসংস্কৃতি প্রসঙ্গ নিজেই তিনি উল্লেখ
করেছেন লোকসংস্কৃতি সংক্রান্ত তাঁর উক্ত পুস্তকটিতে। এক দিক দিয়ে
তারাশঙ্করের সাহিত্য ও গান (১৯৯৭) বইটিও কিঞ্চিৎ তাঁর লোকসংস্কৃতিপ্রেমের
পরিচয়বাহী। বিচ্ছিন্ন ভাবে অন্য দু-একটি প্রবন্ধও তাঁর লোকসংস্কৃতিচর্চার
পরিচয় বহন করে। যেমন পূর্বোক্ত সাহিত্য ও অন্যান্য ভাবনা (১ম খণ্ড)
পুস্তকের 'তারাশঙ্কর-সাহিত্যে রাঢ়বাংলার লোকসংস্কৃতি'।
লোকসংস্কৃতি সংক্রান্ত উক্ত তাঁর পুস্তকটিতে কথাসাহিত্যিকদের রচনার খাঁটি
লোকসংস্কৃতি-লক্ষণযুক্ত অংশই কেবল উল্লেখে আসেনি, অন্যান্য ভাবে, তা সে
আধ্যাত্মিক, ভৌতিক যেমনই হোক, লোকসংস্কৃতির পরিচয়বাহী বা
লোকসংস্কৃতি-ঘেঁষা মনে হলে তাও উল্লেখে এনেছেন তিনি। এই ভাবে, একশো নয়
পাতার বইটিতে সাধারণ ভাবে লোকসংস্কৃতির পরিচয়ের সঙ্গে সঙ্গে তার
চিহ্নগুলোকে – ছড়া, ব্রতকথা, প্রবাদ-প্রবচন, লোকসংগীত, টুসুগান, গম্ভীরা,
ভাওয়াইয়া, আলকাপ, ভাটিয়ালি, বাউল, জারিগান, সারিগান, যাত্রাপালা ও
পুতুলনাচ, লোকনৃত্য – ছুঁয়ে গেছেন। এর পর একে একে উল্লেখে এসেছে
প্যারীচাঁদ থেকে বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, বিভূতিভূষণ,
তারাশঙ্কর, মাণিক, অমরেন্দ্র ঘোষ, অদ্বৈত মল্লবর্মণ, সমরেশ বসু, আব্দুল
জব্বার ও শেষে ধারাবাহিকের তিলোত্তমা। প্রসঙ্গক্রমে উল্লিখিত হয়েছে
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, কমলকুমার মজুমদার প্রমুখের দু-একটি গল্প। প্রধান
লেখকদের বেশির ভাগেরই প্রতিনিধিত্বমূলক একাধিক উপন্যাস ও গল্পে
লোকসংস্কৃতির উপাদানের সন্ধান করেছেন তিনি।
প্রথম অধ্যায়ে মূলত ছড়া, ধাঁধা এবং প্রবাদ-প্রবচন অংশে বেশ কয়েকটি তাঁর
ব্যক্তিগত সংগ্রহ রয়েছে যাকে তিনি 'দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার স্থান বিশেষে'
বা 'দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি বিশেষ অঞ্চলের' হিসাবে উল্লেখ করেছেন, আসলে এই
স্থানবিশেষ বা বিশেষ অঞ্চল তাঁর গ্রাম গোকর্ণী বা তৎসংলগ্ন এলাকা।
'তুলসী গাছে জল ঢাললে কোনকালে কি পাবে,
নটে শাকে জল ঢাললে নিত্যি বসে খাবে।'
'হাসি হাসবো না তো কি?/হাসির বায়না দিয়েছি।
হাসি পঁচিশ টাকা মণ।/হাসি আনতে কতক্ষণ?' (শেষ পঙ্‌ক্তিটি আমরা
মা-দিদিমাদের কাছে শুনেছি 'হাসি হাসতে কতক্ষণ', যদিও বায়না দেওয়ার সঙ্গে
আনাই মানায়)
'আমাদের লোক মরেছে ভাদ্দর মাসে
কাট-কুটো নেই পোড়াবো কিসে!
কাটের দাম চোদ্দ সিকে।'
"কাঁসারির 'সারি' ছাড়া পাঁটার ছাড়া 'পা'
লবঙ্গর 'বঙ্গ' ছাড়া কিনে আনগে যা তা।'
'পুতের মুতে কড়ি, মেয়ের গলায় দড়ি।' (আমরা শুনেছি, বেটাছাবালের গাঁটে
কড়ি/মেয়েছাবালের গলায় দড়ি)
'ভালবাসার এমনি গুণ, পানের সঙ্গে যেমন চুন।
বেশী হলে পোড়ে গাল, কম হলে লাগে ঝাল।' – এমনই কয়েকটি।
ভালো লেগেছে দেখে যে মাঘী শুক্লপক্ষে আমাদের গ্রামের বিভিন্ন পাড়ার
মহিলারা মাঙন করে বিবিমার থানে যে হাজত দেয় – তাঁদের পাড়াও যার ব্যতিক্রম
ছিল না – 'ব্রতকথা'র অংশে সেটি উল্লিখিত হওয়ায় যেখানে
খই-মুড়ি-ফল-বাতাসা-মিষ্টি ইত্যাদি খাওয়ার শেষে মহিলাদের নিজ নিজ বাড়ির
দরজায় পৌঁছানোর পর৭, বাইরে-দাঁড়িয়ে-থাকা উক্ত মহিলা এবং সেই বাড়ির কোনও
ছেলে বা মেয়ের মধ্যে যে প্রশ্নোত্তর চলত সেটি তুলে ধরায় –
"দোরে কেন আলো - ?
গিন্নি গেছে বনভোজনে সবাই আছে ভালো।
দোরে কেন পেতল - ?
গিন্নি গেছে বনভোজনে সবাই আছে শেতল।
দোরে কেন কাঁটা - ?
গিন্নি গেছে বনভোজনে সবাই লোহার ভাঁটা।"
শেষে তিনি লিখেছেন, 'লোক সংস্কৃতির এই সুন্দর অনুষ্ঠান জাতি-ধর্ম-বর্ণ
নির্বিশেষে মানুষকে এক সম্প্রীতির জগতের সন্ধান দেয় – যে সম্প্রীতে একালে
– অপ্রিয় হলেও সত্য – ক্রমশ অস্তাচলগামী।'
দ্বিতীয় অধ্যায়ে, প্যারীচাঁদ মিত্রের আলালের ঘরের দুলাল উপন্যাস থেকে
ছড়া-গান, দুর্গাপূজার বোধনের বর্ণনা, বিয়ের কবিতা উল্লেখ করে
সন্তোষকুমারের সংশয়ী উপসংহার : 'বাংলা উপন্যাসে যৎসামান্য হলেও
লোকসংস্কৃতির পথিকৃৎ সম্ভবত প্যারীচাঁদ মিত্র।' তাঁর এই সংশয় আরও কমে যেত
এই উপন্যাসে লোকভাষা ও প্রবাদ-প্রবচনের ব্যবহারের দিকটি একটু খেয়াল করলে।
দৃষ্টান্ত সহ 'বিভিন্ন কাহিনির মধ্যে গান, ছড়া, শ্লোক ও রূপকথার
উপস্থাপনায় লোকসংস্কৃতি সম্বন্ধে বঙ্কিমের সচেতন মনোভাব অনুমান করা
সম্ভব' বলার পর শেষ করেছেন তিনি এইভাবে : 'প্যারীচাঁদ মিত্রে যার
গৌরচন্দ্রিকা, বঙ্কিমচন্দ্রে তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন।'
রবীন্দ্রপর্বে, বউঠাকুরানীর হাট উপন্যাসে 'কবি রচিত এবং সম্ভবত দু'একটি
সংকলিত গান ও কবিতায়' – যেমন বসন্ত রায়ের কৌতুকগীতি, প্রতাপাদিত্যের
জামাতার অনুচর রামমোহনের আগমনী গান 'সারা বরষ দেখিনে মা, মা তুই আমার
কেমন ধারা', দ্বিতীয় বার রাজ্যে প্রবেশ করলে তাঁর প্রাণসংশয় অবশ্যম্ভাবী
শুনে বেদনাহত বসন্ত রায়ের গান ইত্যাদিতে লোকসংস্কৃতির সন্ধান করেছেন
সন্তোষকুমার। রাজর্ষি-র ধ্রুবের গান, নৌকাডুবি-র মদ্রদেশের রাজার সঙ্গে
কাঞ্চীর রাজকন্যার বিবাহের গল্প, গোরা-তে উদ্ধৃত লালনের গান, যোগাযোগ-এর
দু-একটি ছড়া বা গান উল্লিখিত। 'মুক্তির উপায়', 'খাতা', 'অসম্ভব কথা',
'অতিথি', 'গুপ্তধন', 'শেষের রাত্রি' ছোটগল্পে গান-গল্প-ধাঁধা-বাউল গান
ইত্যাদি দৃষ্টান্ত হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে। শরৎচন্দ্রের ক্ষেত্রে তুলে ধরা
হয়েছে শ্রীকান্ত, বড়দিদি উপন্যাস; 'বিলাসী', অভাগীর স্বর্গ' গল্প থেকে
লোকসাংস্কৃতিক নানান চিহ্ন ।
তৃতীয় অধ্যায়ে, বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালী, অপরাজিত, আরণ্যক ও ইছামতী
উপন্যাস বা 'কিন্নর দল', 'পিদিমের নিচে' গল্প থেকে একাধিক ছড়া, মন্ত্র,
ধাঁধা, পাঁচালী, বাউল, শ্যামাসংগীত ইত্যাদির উল্লেখ করেছেন সন্তোষকুমার।
এমনই নানান লোকসংস্কৃতির দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন তারাশঙ্করের কবি,
গণদেবতা, হাঁসুলী বাঁকের উপকথা, নাগিনী কন্যার কাহিনী উপন্যাস এবং
'পৌষলক্ষ্মী', 'ইমারত', 'তমসা', 'রাঙাদিদি', 'সংসার' গল্প থেকে যেখানে
আমরা দেখতে পাই 'গ্রামের চাষী, রাজমিস্ত্রির সহচরী, অন্ধ ভিক্ষুক,
বৃদ্ধের তরুণী ভার্যা প্রভৃতি বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের দৈনন্দিন
জীবনযাত্রার মধ্যেও লোকসংস্কৃতির বীজ নিহিত। অনুকূল পরিবেশে তার বিকাশ।'
এখানে প্রসঙ্গক্রমে রমাপদ চৌধুরীর প্রথম প্রহর উপন্যাসে একটি অঞ্চলে রেল
ইঞ্জিনের চাকায় তেল-সিঁদুর দিয়ে ও গান গেয়ে বরণ করে নেওয়ার উল্লেখ আছে।
মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুতুলনাচের ইতিকথা উপন্যাসে যাত্রার দৃশ্য,
ছড়া-গান, অলৌকিক কাহিনি; পদ্মানদীর মাঝি-তে হোসেন মিঞা ও গণেশের গান
লোকসংস্কৃতির পরিচায়ক হিসাবে উঠে এসেছ তাঁর লেখায়।
চতুর্থ অধ্যায়টিকে 'শূদ্র জাগরণ' হিসাবে উল্লেখ করে প্রথমে লোকলসংস্কৃতির
সন্ধান করেছেন সন্তোষকুমার অমরেন্দ্র ঘোষের চরকাশেম উপন্যাসে। সেখানে
পাওয়া যাচ্ছে ছড়া, কেচ্ছা-কাহিনি, গান ইত্যাদি। এর পর অদ্বৈত মল্লবর্মণের
তিতাস একটি নদীর নাম উপন্যাসে তিতাসের তীরে মালো সমাজের 'পূজাপার্বণ,
ব্রত, লোকসংগীত, নৃত্য, প্রবাদ-প্রবচন ও অলৌকিক কাহিনির সমন্বয়ে যে
লোকলসংস্কৃতি' তার সন্ধান করেছেন। উল্লেখ করেছেন যাত্রা ও গানের সঙ্গে
ধাঁধা, ছড়া, রূপকথার গল্প, এমনকি লৌকিক ক্রীড়ানুষ্ঠানের কথাও। সমরেশ বসুর
গঙ্গা উপন্যাসে, 'অম্বুবাচী, রথ, ঝুলন, গঙ্গাপূজা, অলৌকিক কাহিনি,
যাত্রা, খনার বচন ও সঙ্গীত প্রভৃতি লোকসংস্কৃতির নানা বিষয়ের কথা
উল্লিখিত।' প্রাসঙ্গিক ভাবে সমরেশের 'জোয়ার ভাঁটা' ও 'অকাল বসন্ত'
গল্পদুটির গানের কথা বলেছেন। এই অধ্যায় শেষ হয়েছে আব্দুল জব্বারের
'গল্প-রীতির অনুসারী' 'প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার খণ্ড খণ্ড বৃত্তান্ত'-এর বই
বাংলার চালচিত্র-তে উল্লিখিত সাপে-কাটার মন্ত্র, বনবিবির গান, কাহিনি,
রসের গান, হিজড়ের গান ইত্যাদি দিয়ে।
তবে এই অধ্যায়টিকে কেন যে 'শূদ্র জাগরণ' বলে চিহ্নিত করেছেন সন্তোষকুমার
তা স্পষ্ট নয়, বড়জোর নিম্নবর্গচর্চা জাতীয় কিছু বলা যেতে পারত। অধ্যায়
শুরু হয়েছে যে অমরেন্দ্র ঘোষের চরকাশেম উপন্যাস দিয়ে তার সম্বন্ধে লেখক
নিজেই বলেছেন, 'নদ-নদী অধ্যুষিত পূর্ববঙ্গের এক বিশেষ অঞ্চলের জীবনালেখ্য
– প্রধানত মুসলমান সমাজ যার কেন্দ্রবিন্দু।' তবে কি মুসলমান সমাজও শূদ্র
সমাজের অন্তর্ভুক্ত! অধ্যায়ের দ্বিতীয় সাহিত্যিক হিসাবে অদ্বৈত মল্লবর্মণ
সম্বন্ধে লেখা হয়েছে 'শূদ্র-জাগরণের অন্যতম প্রতিভূ'। লেখকের জীবনের তথা
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অনবদ্য যে একমাত্র উপন্যাস তিতাস একটি
নদীর নাম-এ লোকসংস্কৃতির সন্ধান করেছেন লেখক তার শেষ দৃশ্যে আমরা দেখছি :
'কিন্তু এখন সে মালোপাড়ার কেবল মাটিই আছে। সে মালোপাড়া আর নাই। শূন্য
ভিটাগুলিতে গাছ-গাছড়া হইয়াছে। তাতে বাতাস লাগিয়া সোঁ সোঁ শব্দ হয়। এখানে
পড়িয়া যারা মরিয়াছে, সেই শব্দে তারাই বুঝি বা নিঃশ্বাস ফেলে।' এর পরেও
বলতে পারব আমরা 'তাই আক্ষরিক অর্থেই বাংলা কথাসাহিত্যে এই উপন্যাসখানি
শূদ্রজাগরণের স্মারক হিসাবে চিহ্নিত'? আলোচনায় অধ্যায়ের তৃতীয় সাহিত্যিক
সমরেশ বসু প্রসঙ্গটি শুরুই করছেন সন্তোষকুমার 'সাহিত্যসৃষ্টির ক্ষেত্রে
তিতাসের লেখক অপেক্ষা সমরেশ বসু শক্তিমান কথাশিল্পী' বলে! তাঁর
তিতাস-আলোচনার সারবত্তাকে অনেকখানি স্বীকার করেও বলতে হচ্ছে, পুরো
পুস্তকটির মধ্যে কেন অনভিপ্রেত এই একমাত্র তুলনামূলক মূল্যায়নপ্রচেষ্টা!
তিতাস একটি নদীর নাম-এর সঙ্গে গঙ্গা তথা অদ্বৈতর সঙ্গে সমরেশের যেসব
তুলনা করেছেন লেখক তা-ও বিতর্করহিত নয়। সেসবে বিস্তৃত হওয়া সম্ভব নয়
এখানে। তবু সামান্য বলি। গঙ্গা পড়তে গিয়ে অনেক পাঠকেরই কিন্তু এটাও মনে
হবে, যা তার স্রষ্টার একান্ত বন্ধু এবং তাঁর গ্রন্থের সম্পাদক বিশিষ্ট
সমালোচক সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায় লিখে গেছেন : 'ডিটেল সম্বন্ধে অতি-সতর্কতায়
এ-গ্রন্থেও পঞ্চম ও ষষ্ঠ দশকের পাঠকের সংবাদগত কৌতূহল-বৃত্তিকে তুষ্ট
করার প্রবণতা প্রকাশিত।'৮ অন্যদিকে তিতাস সম্বন্ধে তিনি লিখেছেন :
'জীবনমুগ্ধতার অক্ষয় সম্পদের একটা সমালোচনা-নিরপেক্ষ শ্রী আছে, সেই
সম্পদে বইখানি সম্পন্ন।'৯ আরও যা বলেছেন, পাঠকালে আজও পাঠক তার সঙ্গে
একাত্মতা অনুভব করবেন : 'তিতাসের মন্থর স্রোতের পাশেপাশে উদাসীন
মালোপাড়ার জন্ম-বিবাহ-মৃত্যু জড়িত জীবিকার ছবিকে কাব্যময় ভাষায় ফুটিয়ে
তুলেছেন অদ্বৈতবাবু। তিতাসের স্রোতের মতোই ভাষাতেও এসেছে একটা মৃদু
সঙ্গীত – যা জীবনের মৃদু এবং মেদুর, সুখ এবং দুঃখকে ধ্বনিত করেছে অসীম
নীলাকাশের অঙ্কশায়ী নদীর অস্পষ্ট এবং চিরন্তন তরঙ্গ কল্লোলের সঙ্গে
সঙ্গতি রেখে।'১০ বাংলার চালচিত্র-তেও বিবিধ বিচিত্র যে জীবন ও যাপনচিত্র
তাকে কি বলা যাবে শূদ্র-জাগরণ!
পঞ্চম তথা শেষ অধ্যায়ে তখনও-ধারাবাহিক তিলোত্তমার রাজপাট-কে আলোচনায় এনে
একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনের সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্ববোধেরও পরিচয় দিয়েছেন
সন্তোষকুমার। শ্লোক, গান, পদাবলী, বাউল, কীর্তন, ছড়া, খনার বচন,
ভূত-তাড়ানো মন্ত্র, সাপের বিষ ঝাড়ার মন্ত্র, নৌকা বাইচের গান, কাহিনি,
ব্রতের মন্ত্র বা ছড়া ইত্যাদির আধার এই ধারাবাহিকটিকে আলোচনায় আনা
অত্যন্ত জরুরি ছিল।
'নিবেদন' অংশে লেখক জানিয়েছেন যে 'গ্রন্থের আলোচনা সংক্ষিপ্ত', কেন-না
'বিস্তৃত করতে গেলে যে সময় ও বইপত্র প্রয়োজন, তা সংগ্রহ করার মত বয়স'
তাঁর নয় তখন। কাজ করতে গিয়ে প্রতি মুহূর্তে অনুভব করেছেন 'কাজটি কত দুরূহ
ও দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ' 'তাই বিষয়টির উপর একটি রুপরেখা টানার চেষ্টা' করেছেন
মাত্র। তবু বলতে হবে যে এই বইটি তাঁর এক ব্যতিক্রমী এবং উল্লেখযোগ্য কাজ।
আটাত্তর বছর বয়সে পৌঁছেও, নিজের বহুপাঠিতার নজির রেখে একটানা যে ভাবে
কাজটি করে একেবারে বই হিসাবে আমাদের হাতে তুলে দিয়ে গেছেন তিনি তা
অত্যন্ত সাধুবাদযোগ্য এবং অনুসরণীয়। বইটিতে দেওয়া পারিবারিক ও সাহিত‍্য
সংক্রান্ত কয়েকটি আলোকচিত্র পাঠকের বাড়তি প্রাপ্তি।
উৎপল দত্তের প্রচ্ছদ পরিকল্পনা প্রশংসার যোগ‍্য।



পুনশ্চ :
লোকসংস্কৃতি ও স্বনির্বাচিত বাংলা কথাসাহিত্য
সন্তোষকুমার দত্তে
বইটির প্রকাশক - বঙ্গবাতায়ন।
প্রকাশকাল - ১৫ আগস্ট ২০০৭।
মূল‍্য - আশি টাকা ।


তথ্যসূত্র :
১। 'গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধ ও কবিতা রচনায় বারুইপুর', বারুইপুরের ইতিহাস,
২য় সংস্করণ, ২০১৪। সম্পাদনা – শক্তি রায়চৌধুরী ও মনোরঞ্জন পুরকাইত।
২। বার্ষিক সংকলন-পত্র কান্তরেণু, সূচনা সংখ্যা, ১৪২০।
৩। আয়নার সামনে – সন্তোষকুমার দত্ত, বঙ্গবাতায়ন, ১ আষাঢ় ১৪১৮
৪। তদেব।
৫। তদেব।
৬। তদেব।
৭। তিনি লিখেছেন, 'ব্রতচারিণীদের দলবদ্ধভাবে পাড়ার প্রত্যেক বাড়িতে
উপস্থিতি', আসলে দলবদ্ধ ভাবে ঘুরে ঘুরে যে-যার নিজের বাড়িতে ঢুকে পড়া।
এখন আর অনেকসময় এমন ঘোরা হয় না, উপস্থিত সবাইকে দেওয়ার পর ভোজন এবং তারপর
যে-যার বাড়িতে চলে যাওয়া।
৮। বাংলা উপন্যাসের কালান্তর –সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাহিত্যশ্রী,
পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত সংস্করণ – ১৯৭১/১৩৭৮।
৯। তদেব।
১০। তদেব।

মন্তব্যসমূহ

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

জনপ্রিয় লেখা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৭তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৪তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩১ এপ্রিল ২০২৪

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৬তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩০ আগস্ট ২০২৩