Featured Post

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

ছবি
  "নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।  ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)।  আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব

প্রেম ও রোমান্টিক কবি খোশনূর - রীনা তালুকদার









প্রেম ও রোমান্টিক কবি খোশনূর


- রীনা তালুকদার







প্রেম মানুষের জীবনে এক অন্যরকম ভাললাগার অনুভব। যা মানুষকে তার নিজস্বতা
সৃষ্টিতে সহায়তা করে। এই সুন্দর পৃথিবী সৃষ্টির স্রষ্টা মানুষকে
ভালোবাসার মধ্য দিয়ে তাকে পাওয়ার কথা বলেছেন। তাই প্রেম চিরন্তন ও
শ্বাশত। এ পৃথিবীতে এমন কোনো মানুষ নেই যার ভেতরে প্রেম নেই। মানুষের
দুটি চরিত্র একটি দেবত্ব অন্যটি পশুত্ব। কখনো মানুষ অতিমাত্রায় দেবত্ব
সত্তায় তাড়িত হয়; আবার কখনো পশুত্ব সত্তায় তাড়িত হয়। যখন যে সত্তা
চরিত্রকে ধারণ করে মানুষ সে পথেই অগ্রসর হয়। কখনো কখনো এ দুটি সত্তার
তাড়ন তাপ ওঠা নামা করে। আর মানুষ সে ওঠা নামার সাথেই চলমান। কবি খোশনূর
তাই রোমান্টিকতাকে ধারণ করেছেন জীবনের প্রতিটি পরতে পরতে। তার কবিতা
রোমান্টিকতার জোয়ারে আবেগ আপ্লুত হয়ে কবিতায় ভেসে চলছে দূর দিগন্তে
পৃথিবীর পথে পথে। যেখানে মানুষ সুন্দর সেখানে তার কবিতা ফুলের বাসর
সাজায়। যেখানে অসুন্দর সেখানে তার কবিতা আলোর পথ দেখায়।
তার প্রেমের কবিতা যেনো সরল এক কিশোর বয়েসী প্রেমের বিগলিত মধু। যেনো কচি
কামিনীর ছোট্ট ছোট্ট পাতা ছুঁয়ে ছুঁয়ে পড়ছে সারারাত, ভোর আর শান্ত
বিকেলে। তার কবিতা যেনো প্রেমের শুভ্র বলাকা রূপে সুদূরে উড়ে যাওয়া ভ্রমণ
পিপাসু পাখি। তার কবিতা যেনো সদ্য প্রেমের বিরহে অশ্রুসজল দুনয়ন। তার
কবিতা যেনো মধ্য রাতের বেহুস ঘুমে সোহাগী কোনো ছল ছুতোর সুচতুর হাওয়া।
তার কবিতা যেনো ঝর ঝর বৃষ্টির নূপুর পায়ে হেঁটে যায় সমুদ্র তীরের
চোরাাবালিতে। তার কবিতা যেনো এই এখুনি বিগলিত আবেগে আছড়ে পড়ে প্রিয়
মানুষের বুকে যেনোবা তীরভূমির মাটির সাথে জলের তোড়ের প্রথম ঢেউ। তার
কবিতা যেনো সেই পুস্পিত শিশুটি। তার কবিতায় দু:খ যেনো সুখের সুতোয় বোনা
কোন নক্শী কাঁথা।
তিনি সাম্প্রতিকের প্রতীক কবিতায় বলেছেন- ক্ষমা করার ক্ষমতা হারিওনা/ আর
যা হারাও/ নির্লোভ বন্ধুত্বের হাত বাড়াও/ সূর্য আলোয় সুন্দর হোক চারিদিক/
ভালোবাসার ইচ্ছে হারিওনা /আর যা হারাও। শত দুঃখেও তিনি সাহসী উচ্চারণে
প্রিয় মানুষকে বলেছেন সাহসী হতে। যন্ত্রণার নির্যাতনে কবিতায়-এই ছেলে
তোমাকে না বারণ করেছি/ জানালা দিয়ে চাঁদ না দেখতে/ খোলা মাঠে গিয়ে চাঁদ
দেখো/ সাধ বাড়বে কবিতা পড়ার/ ভালোবাসার এবং স্বপ্ন দেখার। এখানেও তার
সাহসী মনের সাহস তিনি ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন সর্বত্রই। ভালোবাসা দেবো কবিতা-
তোমার অনেক আছে/ দেবে না? দেবে না একটু কিছু/ এই ধরো আদর ? সোহাগ? আশা?
সঙ্গ? প্রেরণা? প্রেম ? তাহলে দুঃখ অথবা বঞ্চনা? সেটাও পারো না দিতে/
দারুণ স্বার্থপর তো তুমি ? নেবে? নিও না। কি হবে শূন্যতা ? অন্ধকার?
বঞ্চনা ? যন্ত্রণা ? ব্যর্থতা ? এ গুলো ছাড়া আমার তো কিছু নেই/ এ সব দেখো
না/ তবে ভালোবাসা দেবো ভালোবাসা। ভালোবাসার এমন হামলে পড়া ঝড় যে কাউকেই
আবেগে বিধ্বস্ত করবে।

বিরল কবিতাটি সত্যিই বিরল-এখনো কিছু কিছু মানুষ খুব ভালো/ যারা নিজের
দুঃখ অভাব অপমান/ শূন্যতা যন্ত্রণা অন্যের কাছে/ গোপন রেখে সহজ ভাবে
প্রকাশ করে নিজেকে । এ কবিতার শেষে বলেছেন-প্রতারণা পেয়েও কিছু মানুষ
চিরদিন ভালোবাসে / তার প্রথম প্রিয় ভালোবাসাকে। তীক্ষ্ম এক অনুভূতি নেড়ে
দিল স্নায়ু। এর চেয়ে সৃষ্টির সেরা জীব মানুষকে আর কতোটা উচ্চে অবস্থান
দেয়া যায় ? কি দৃঢ়তায় ভালোবাসা উচ্চারিত হয় তা তিনি বলেছেন -বিস্তৃত
ভালোবাসা কবিতায়-বন্ধু মাটিতে আমি সবুজ বৃক্ষ/ অথচ শেকড় তোমার কাছে।
যেভাবে আমার তুমি কবিতায় একই ভাবে বলেছেন-দূরকে স্পর্শ করছে/ অসংযত অথচ
ক্লান্ত দৃষ্টি/ এবং এভাবেই আপাতত: আকাশ মাটি তথা তোমার অবস্থান দৃশ্যে/
অদৃশ্যে তা একাকার সমস্ত অস্তিত্বে।

মন্দের একাত্ম মুহূর্তে - কবিতায়-কিছুতেই বলতে পারলে না/ তুমি কে আমার ?
আমি তো বলেছি সুখ গান/ কবিতা চাঁদ সূর্য সম্ভাবনা/ প্রেরণা স্বপ্ন
রংধনু......। সরল আবেগের এক সম্মিলন সুখে কবি বিভোর হয়েছেন। কবিরই জীবন
নিয়ে দহন জ্বালা বেশী। কোন সাধারণ মানুষের নয়। তাই কবি তার চোখের তুলিতে
স্বপ্ন এঁকে দূরের সূর্যকে হাতছানি দিয়ে ডাকেন। এ কেবল কবিই পারে।
তিনি নিমগ্ন একাত্মতায় কবিতায়-বলতে পারো/ তোমার জন্য আকুল ব্যাকুল/ দুচোখ
হৃদয় ইচ্ছে এবং স্বপ্ন কেন? তুমি আমার যেন। শেষাংশে-তুমি আমার জীবন যেনো/
মিথ্যে করেই সত্য জেনো। এই যে প্রেমের জন্য জীবনের প্রতিটি সময়কে তিনি
অলংকার পরিয়েছেন স্বপ্ন-আলো-আঁধার-ফাগুন-শ্রাবণ-উতল-কাঁপন দিয়ে আবার শেষে
বেদনার রেশটুকুও সংযোগ করলেন মধুর উপলব্ধিতে। তিনি আশির দশকে তার কবিতায়
বাংলা কবিতার রীতি প্রকরণ ভেঙ্গে একটা জড়ানো ঘোর সৃষ্টি করে তার কবিতাকে
নিজস্ব শৈলীর কাঠামোগত রূপ দিয়েছেন।

দেশ ভাগের সন্ধিক্ষণের কবি বুদ্ধদেব বসুর আদর্শই ছিল রোমান্টিকতা। ইংরেজী
সাহিত্যের রোমান্টিক যুগের সর্বশেষ কবি জন কীটস। কীটস যাবতীয় সুন্দরের
পূজারী আর সৌন্দয্যের কবিতা প্রতীক। কীটস গ্রীক সাহিত্য অনুরাগী,
ভাস্কর্যের মোহ আর সৌন্দয্যবোধের প্রতি তৃষিত থাকায় তার কবিতায় এই শিল্প
সত্তার পরিস্ফুটন ঘটেছে। আর কবি খোশনূরও সুন্দরের প্রতি তীব্র আকর্ষণ,
মোহ, মাধুয্য তাকে প্রেম ও রোমান্টিজিসমে ডুবিয়ে রেখেছে। অন্য দিকে তিনি
সঙ্গীত বেত্তা ও শিল্পী। কীটস যেভাবে দুঃখ বর্ণনা করেছেন- বুলবুলি গীতিতে
-দূরে চলে যাও, বিলীন হয়ে যাও এবং একেবারে ভুলে যাও/ যা বনের বৃক্ষলতার
মধ্যে কখনো জাননি/ উদ্বিগ্নতা, জরাজীর্ণ এবং ক্ষয়/ এখানে যেখানে মানুষ
বসে বসে অন্যের দুঃখ-দহনের কথা শোনে মাত্র/ যেখানে অবস হয়ে যায় মানুষ
দুঃখে, অবশেষে চুল ধূসর হয়ে যায়। আবার রোমান্টিকতায় বলেছেন-গভীর অন্ধকারে
আমি শুনি বারে বার/ আমি অর্ধপ্রেমে পড়েছি সুখকর মৃত্যুর। বিষাদের গান এ
বলেছেন-ফ্যাকাশে কপালে চুমু না দেয়ার অনুতাপে দুঃখ খুঁজতে হবে না/
বিষাক্ত গাছ নাইট শেড বা বিষাক্ত আঙুর খেতে হবে না। আর কীটসের সাহসিকতা
প্রকাশ পেয়েছে-বুলবুলি গীতিতে-তুমি মৃত্যুর জন্য জন্মগ্রহণ করনি, হে অমর
পাখি/ কোনো অসভ্য প্রজন্ম তোমাকে ধ্বংস করে নামাবে না। তিনি প্রকৃতিকে
কবিতায় ধারণ করেছেন প্রেমের মধ্য দিয়ে-তোমাকে কে দেখেনি এ শস্য ভান্ডারের
মধ্যে ? মাঝে মাঝে তোমাকে পাওয়া যায় মুক্ত মাঠে/ তুমি অন্যমনা হয়ে বসে
থাক শস্য মাড়াইয়ের মঞ্চে। কীটসকেও প্রকৃতি বাঁশী বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন
সুরে ডেকেছে। অন্যদিকে জীবনানন্দ তার কবিতায় প্রকৃতির শরীরে একাকার হয়ে
গেছেন প্রেম ও সৌন্দয্যে। তাই তার কবিতায় প্রকৃতির আঙ্গিক নিয়ে প্রেম,
বিরহ, জরাজীর্ণ জীবনের গান বেজে ওঠেছে। অনেকে জীবনানন্দকে প্রেমের কবি
বলেন কেউ কেউ আবার বলে প্রেমিক কবি। বিশেষ করে জীবনানন্দের বনলতা সেন,
মাঠের গান, হায় চিল, হাওয়ার রাত, সুরঞ্জনা, কুড়ি বছর পরে ইত্যাদি কবিতায়
তার ভিন্নরূপে প্রকৃতি ও প্রেমের পরিচয় ফুটে উঠেছে। কবি খোশনূর জন কীটসের
সেই সুন্দর ও সৌন্দয্যবোধকে বর্ণনা করেছেন জীবনানন্দের প্রকৃতির ভাষায় নয়
মানুষের জীবনের চলমান উত্থান পতনের শব্দ দিয়ে। আর এখানেই খোশনূর
নিজস্বতার নির্মাণ করেছেন। জন কীটস, জীবনানন্দ ও খোশনূর তিনজনই সুন্দর ও
সৌন্দয্যের ধারক বাহক ও মুগ্ধতায় ভরপুর। কিন্তু তিনজনই ভাষায় ভিন্ন
প্রকরণে পৃথক শিল্পরীতির পরিচয় দিয়েছেন। কবি খোশনূর তার শব্দ সচেতনবোধ
অত্যন্ত প্রখরতায় উপস্থাপন করেছেন।

প্রেম ও রোমান্টিক এই কবিকে পাওয়া যায় কিছুটা তীব্র প্রতিবাদেও। তিনি তার
এক রমনীকে' কবিতায় বলেছেন-কি করে ভাবো সব ভালোর/ শীর্ষে তুমি থাকবে
তোমার/ অর্থের এবং অত্যাচারী/ প্রতাপে? সার্থক তোমার মন্দের প্রজ্বলিত
হৃদয়। এ কবিতার শেষে বলেছেন-তোমার জীবন যেন পাপের আমানত/ মৃত্যুও তোমাকে
চায় না/ বড় কষ্ট হয় তোমার আগত কষ্ট ভেবে/ বইতে পারবে তো কষ্টের বোঝা ?
তার কবিতায় উঠে এসেছে দুঃখ সুখের মানুষের গভীর জীবন বোধ। কবির প্রত্যেকটি
কবিতার কথা যেনো জীবন্ত মূর্তমান তিনি। যেনো বলছেন প্রিয় মানুষকে মনের সব
আকুলি বিকুলি। তার তৃষ্ণা কাব্য গ্রন্থের ছেলেটা কবিতায় ফুটে ওঠেছে
ক্ষুধার আগুন জ্বলা নিয়ে যে ছেলেটা বিনয়ী ভোলেনি। সে ছেলেটার অসম্ভব
ধৈয্যের চিত্র কবিতায় মানুষকে অতিশয় দুঃখ দুর্দশায়ও যেনো মানুষ সহজ আর
স্বাভাবিক থাকতে পারে সে নির্দেশনা দিয়েছেন। ক্ষুধার্ত এখন আমাদের পৃথিবী
মানুষেরা তাদের অতি লোভের বশবর্তী হয়ে পৃথিবীর সৌন্দর্যকে নষ্ট করছে
প্রতিনিয়ত। কবি পরোক্ষভাবে সে সুন্দর পৃথিবীর মানুষকে সহনশীল হবার ইঙ্গিত
করেছেন। একই কথা উঠে এসেছে কেন ? গ্রন্থের এক স্রষ্টা গড়া মানুষ কবিতায়ও।
তার কবিতায় সমসাময়িক শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। প্রত্ম, স্থাপত্য ঐতিহ্য ও
বিজ্ঞানকে তিনি কবিতায় ধারণ করার চেষ্টা করেছেন। তৃষ্ণা গ্রন্থের পাপের
প্রজা কবিতায় তিনি নারীর প্রতি পুরুষের যে বৈষম্যহীন আচরণ তা তুলে
ধরেছেন। একই বইয়ে- এবার ভালো হও কবিতায় অনেক কেঁদেছি জর্জরিত/ যন্ত্রণায়
অগ্নিজীবন এখন/ এখন আমি ফেরাতে চাই আঘাত। নারীকে সাহস জুগিয়েছেন। নারীরা
যে পুরুষের ক্ষোভের আগুনে এসিড দগ্ধ হয়ে অন্ধকার জীবন যাপন করে তা ফুটেছে
তার দ্বৈত আমি, গ্রন্থের 'রুমানা চরিত্রে। মানুষের মৃত্যুতে কবিকে ভীষণ
ব্যথিত করেছে তা তিনি তুলে ধরেছেন, দ্বৈত আমি গ্রন্থের সুখ অভিষেক, ভয়
কবিতায়। দেশমাতৃকার প্রেম ফুটে ওঠেছে, কেন? গ্রন্থের হাসো বাংলাদেশ হাসো,
তুমি, বিজয় আমার স্বাধীনতা, চিরজাগ্রত তোমরা ইত্যাদি কবিতায়। হাসো
বাংলাদেশ হাসো কবিতায় বলেছেন-বাংলাদেশ তুমি আর কেদোনা/ বন্যা খরা ঝঞ্ঝায়
ক্ষত বিক্ষত তোমার/ সবুজ সজীব কোমল বুক/..... বাংলাদেশ তুমি হাসো; তবেই
জাগবে উদ্যমী/ নিরলস মানুষ/ এক অঙ্গীকারে সাম্য ভ্রাতৃত্বে/ কর্মতৎপরতায়
হবে সচেষ্ট।

তার প্রত্যেকটি কবিতা হৃদয় ছোঁয়া এক লাল গোলাপ। অথবা কষ্টের নীল ছোঁয়া
এক পাপড়ি খসে পড়া গোলাপ। তার কবিতা অনুপ্রাস, উপমা ও অলংকারে সজ্জিত। সরল
অভিব্যক্তিতে তিনি জীবনের নানা অসংগতির কথা কবিতায় গেঁথেছেন। এখানেই তিনি
স্বার্থক। কেননা মানব জীবনের জন্ম হতে মৃত্যু অবধি প্রতিটি মুহূর্তই
আনন্দ বেদনার মিশেলে ভরা। সেই সাধারণ জীবন যাপনের সঙ্গী আনন্দ-বেদনাকে
কবিতার রসালো রসের মিশেলে সাধারণকে ছাপিয়ে যখন অস্বাভাবিক ভাল লাগার আবেস
ছড়িয়ে দেয় তখন একজন কবি এখানেই তার সফলতার স্বাক্ষর রাখেন।
কবি ও গীতিকার খোশনূর -এর জন্ম ০২ ডিসেম্বর, ১৯৫৮ সালে দামপাড়া,
চট্টগ্রামে। পৈতৃক জেলা- মহাদেবপুর, নওগাঁ, রাজশাহী। তার প্রকাশিত
কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ৪৫টি। উল্লেখ্য যোগ্য গ্রন্থ হচ্ছে- বর্ণের বন্ধন
(প্রথম কাব্যগ্রন্থ), ছন্দের স্পন্দন, পোয়েমস অব খোশনূর, জ্বালা, জ্বলে
জ্বলে বলে যাই, জ্বলে অন্তর, আগামী স্বপ্ন, ফাগুন পিয়াস, আন্তরিক স্পর্শ,
একান্ত নিঃসঙ্গতা, আদিগন্ত স্বপ্ন, ভালোবাসা আমার ভালোবাসা, আকাশের তারা,
জলের স্পর্শ, জলের কারুকাজ, দ্বৈত আমি, তৃষ্ণা, মধুছন্দা, কথাছিল, কথা
সুরে স্বরলিপি, হৃদয় কাঁদে, কেন প্রভৃতি।

লেখালেখির জন্য পেয়েছেন- অনুপ্রাস পুরস্কার, অনুপ্রাস রজত জয়ন্তী
সম্মাননা স্মারক-২০১০, চৌধুরী রিয়াজ উদ্দিন স্মৃতি পদক, শহীদ বদিউজ্জামান
স্মৃতিপদক, বেগম রোকেয়া স্মৃতি পদক, বিদ্রোহী কবি নজরুল পদক, কবি
জসীমউদ্দীন পদক, ইকো শ্রেষ্ঠ কবি, হিউম্যান রাইটস অব বাংলাদেশ,
শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক পুরস্কার, ঢাকা সংস্কৃতি পুরস্কার, জিসাস
স্বর্ণ পদক, বাংলাদেশ নারী কল্যাণ, উত্তরণ, স্বাধীনতা পদক, ফুলকলি
সংস্কৃতি সংঘ, সবুজ সংঘ, লেখক-পাঠক সংঘ, সূর্য সংঘ, স্বাক্ষর উদয়ন সংঘ,
কথা সংঘ, সুর্যমুখী সাংস্কৃতিক পদক, নন্দিনী পদক, জ্ঞানচর্চা পদক, শান্তি
সম্মাননা সংস্কৃতি পদক, মানবিক কল্যাণ, শ্রমিক সংঘ, বিদ্যাপতি পদক, ড.
আশরাফ সিদ্দিকী সনদ, শান্তি সৃষ্টি-কৃষ্টি পদক, তরুণদল সংঘ, ধারা পদক,
কাজী হায়াত টেলিফিল্ম পদক, মাওলানা খান ভাসানী পদক, বাসাস পদক, ত্রিতাল
পদক, মিডিয়া জার্নালিষ্ট পদক, জনকল্যাণ পদক, কাব্য নক্ষত্র স্মৃতি
পুরস্কার, গীতি কবি সংসদ পুরস্কার, কীর্তিময়ী পুরস্কার, সুরকথা পুরস্কার,
ধারা বর্ণনা, শ্রেষ্ঠ বিকাশ, ধারা শেরে-এ বাংলা স্বর্ণপদক, ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংস্কৃতি, বাংলাদেশ জাগ্রত জনতা, ফুলকলি সাহিত্য
এওয়ার্ড-২০০৯ ও সুইট বাংলাদেশ সহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন।

তিনি সভাপতি হিসাবে অনুপ্রাস জাতীয় কবি সংগঠনকে নিয়ে ৪ঠা সেপ্টেম্বর,
১৯৮৬ সাল থেকে দীর্ঘ ২৮ বছর কবিতা চর্চায় তার সুযোগ্য নেতৃত্ব অব্যাহত
রেখেছেন। তার লেখা অসংখ্য বাংলা গান রয়েছে। একজন সফল গীতিকার হিসাবে তার
অবস্থান তিনি ইতোমধ্যেই সুদৃঢ় করেছেন গানের জগতে। তিনি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত ও
আধুনিক গানের শিল্পী। তিনি বেতার বাংলাদেশ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের
গীতিকার। মাঝে মাঝে উপস্থাপনা ও সাংবাদিকতাও করতেন। তিনি প্রচার বিমুখ
ব্যক্তিত্ব। প্রচার নয় প্রসারেই তিনি বিশ্বাসী। ব্যক্তি মানুষ হিসেবে
তিনি উদার, সদালাপী, পরোপকারী ও হিতৌষী। ভ্রমণ পিপাসু কবি নিজ জন্মভূমি
বাংলাদেশ সহ ভারত, কানাডা ও ইংল্যান্ড ঘুরে ঘুরে দেখেছেন। তিনি পরিবার
নিয়ে ঢাকায় বসবাস করছেন। তিনি একাধারে একজন কবি, গীতিকার, শিল্পী ও সফল
সংগঠক। সফলতার ছোঁয়া তার প্রত্যেকটি বিষয়েই সমান।

বর্তমানে তিনি অনুপ্রাস জাতীয় কবি সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রেম ও রোমান্টিক ধারার এই কবির দীর্ঘায়ু ও সুস্থ্যতা কামনা করছি।





সংক্ষিপ্ত পরিচিত : নব্বই দশকের কবি, প্রাবন্ধিক। সাবেক সভাপতি,
বদরুন্নেসা কলেজ ও সাবেক সহ-সভাপতি, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) ছাত্রলীগ।
সভাপতি- বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান কবিতা পরিষদ। সহ-সভাপতি, (তথ্য ও প্রযুক্তি)-
অনুপ্রাস জাতীয় কবি সংগঠন। বিভাগীয় সম্পাদক-অনুপ্রাস সাহিত্য পাতা দৈনিক
নব অভিযান, দৈনিক স্বদেশ বিচিত্রা ও সাপ্তাহিক কালধারা। বাবা -মো: আবদুল
করিম। মাতা- আনোয়ারা বেগম। পড়াশুনা- এম.এ। জন্ম -২১ আগস্ট, ১৯৭৩, জেলা-
লক্ষ্মীপুর, বাংলাদেশ। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ- ১৩টি, গবেষণা প্রবন্ধ-২টি
(বিজ্ঞান কবিতার ভাবনা ও কাব্য কথায় ইলিশ), সম্পাদনা কাব্যগ্রন্থ-১টি,
সহযোগী সম্পাদনা (বিষয়ভিত্তিক)- ১১টি।জাগ্রত ছোট কাগজের সম্পাদক।
উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ- সাত মার্চ শব্দের ডিনামাইট (বঙ্গবন্ধু সিরিজ),
বিজ্ঞান কবিতা, প্রেমের বিজ্ঞান কবিতা, স্বাধীনতা মঙ্গলে, বিজ্ঞান সনেট।
বর্তমান সময়ে তিনি বিজ্ঞান সমন্বয়ে কবিতাকে নতুনত্ব দিয়েছেন। প্রথম
কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ হয় নব্বই দশকে। লেখালেখির জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা
মোস্তফা কামাল স্মৃতি ফাউন্ডেশন-এর মহান বিজয় দিবস-২০১১ সম্মাননা ও
সাপ্তাহিক শারদীয়া কাব্যলোক বিশেষ সম্মাননা-২০১৩ পেয়েছেন। ঠিকানা: এ-২,
বাণিজ্যবিতান সুপারমার্কেট, ইস্টকর্ণার, ২য়তলা, নীলক্ষেত, ঢাকা-১২০৫,
বাংলাদেশ। ইমেইল- rinakobi@yahoo.com ফোন:- 01716676350 ।

মন্তব্যসমূহ

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

জনপ্রিয় লেখা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৭তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৪তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩১ এপ্রিল ২০২৪

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৬তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩০ আগস্ট ২০২৩