Featured Post

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

ছবি
  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

গল্প: জীবনের জলছবি ।। শেফালী সর

 

 "জীবনের জলছবি"        
        শেফালী সর

   বাড়ির সকলে যখন আসন্ন বিবাহ অনুষ্ঠানের আলোচনায় মশগুল তখন দীপা ম্লান প্রদীপের আলোর সামনে বসে ভাবনার অতল গহ্বরে নিমজ্জমান। অতীত ও বর্তমানের সাথে মিলিয়ে দেখ ছিল কতখানি খাপ খায়।সে শুধু বারবার চেষ্টা করছে কিন্তু কিছুতেই যেন মেলাতে পারছে না। বিশেষতঃ পরেশের সাথে বাড়ীর লোকজনের মেলামেশা। তখন বাবা ছিল, বাড়ীর কেউ পরেশকে এ বাড়ির চৌকাঠ ডিঙোতে দেয়নি।অপরাধ, চাষী ঘরের ছেলে সে কিনা ব্রাহ্মণ বাড়ীর মেয়েকে ভালবেসে বিয়ে করতে চায়! আর আজ বাবা নেই, দাদা সেই পরেশের সঙ্গে বোনের বিয়ের ব্যবস্হা করছে। তা-ও আবার বিধবা বোন।

 তখন সবে বিধবা বিবাহের প্রচলন হয়েছে।পাড়া প্রতিবেশী সমাজ তীব্র বিরোধিতা করছে। কিছুতেই তারা মেনে নিতে পারছে না। শুধু পরেশের দাদা ও কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তির ভরসায় এই বিবাহের আয়োজন। পরেশের দাদা আর দীপার দাদা পরস্পর বন্ধু। দীপার সাথে বিয়ে হয়েছিল অরুণের। বছর পাঁচেক আগে অরুণ কর্কট রোগে মারা যায়। এই পাঁচ বছরের বৈধব্য জীবনের যাবতীয় অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।পরেশ সেদিন কথায় কথায় বলেছিল দীপাকে-দীপা, তুমি আমার সামনে ও ই বেশে এসো না। দীপা হাসতে হাসতে বলেছিল-সে তখন দেখা যাবে।পরেশ আরও বলেছিল-অতীতকে ভুলে যাও দীপা। কারণ বর্তমান তোমার আমার কাছে একেবারে নির্ভেজাল সত্য।আহার বিহার  সবকিছুই এখন থেকে পুরোপুরি বদলে নিতে হবে। দীপা বলেছিল-বেশ তো! পরিবর্তন না করে উপায় কি আছে? পড়েছি মোগলের হাতে খানা খেতে হবে একসাথে। তখন পরেশ বলেছিল-এ নিয়ে আমি কিন্তু তোমায় জোর করবো না। তোমার মা ইচ্ছা তাই ক'রো। দীপা বৈধব্যের বেশ পরে নিরামিষ খায়। কিন্তু মৃত স্বামীর মুখটাও মনে করতে পারেনা। বিবাহিত জীবনের কোনো স্মৃতি তাকে বিহ্বল করে না। আসলে দীপার বিবাহিত জীবনের পরিধি মাত্র সাত মাস। তাই  বিবাহিত জীবনের কোনো ঘটনা  দীপার স্মৃতিপটে দাগ কাটেনি।

আর মাত্র এক দিন পরে দীপা  দ্বিতীয় বার বিয়ের পীড়িতে বসবে। এমনি সব ভাবনার রেশ কেটে যায় বৌদির ডাকে। ঠাকুরঝি, এখানে এসোতো একটু কাজ আছে। দীপা কাছে এসে দাড়াতেই বৌদি সরমা বললো-দেখি তোমাকে এই বেনারসি টা কেমন মানাবে! ব্লাউজের সাইজটা ঠিক আছে তো? দীপা বললো-ঠিক আছে বৌদি। তোমার পছন্দ ই আমার পছন্দ। বিয়ের দিন সকাল থেকেই সবাই হৈচৈ করছে।রাত দশটায় বিয়ের লগ্ন। ঠিক বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাবে কনে কে দেখে কেউ যেন বললো-অপরূপা!পরেশ তো শুভদৃষ্টি র সময় দীপাকে দেখে অবাক! আপন মনে পরেশ ভাবলো-দীপার বর্তমান বয়স ত্রিশ হলেও যেন মনে হচ্ছে একেবারে দশ বছর কমে গেছে আজ। যাইহোক , বিবাহ পর্ব শেষ হলো নির্বিঘ্নে। এবার শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার পালা। শ্বশুর বাড়িতে সবাই দীপাকে সাদরে গ্রহণ করলো। কয়েক দিনের মধ্যেই দীপা শ্বশুরবাড়ির সবার মন জয় করে নিলো।কেউ আর তেমন ভাবতেই পারলোনা দীপার দ্বিতীয় বার বিয়ে হয়েছে। পরেশের দাদা সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিল দীপকে ভাইয়ের বৌ হিসাবে পেয়ে। দীপা খুব সাধারণ সাজ সজ্জায় অভ্যস্ত।তাই সে তেমন করে সাজতো না। একদিন বড় জা আর ননদ দীপা কে সাজাতে বসলো কারণ পরেশ খুব সাজগোজ পছন্দ করে।রাতে খাওয়া দাওয়া সেরে যখন ঘরে ঢুকলো দীপা , অপেক্ষা করছিল পরেশের জন্য। কিছু পরে পরেশ ঘরে ঢুকে দেখে দীপা কনে বৌ সেজে বসে আছে। দীপাকে আদর করে পরেশ বললো-আমার মিষ্টি সোনা বৌ টা। আমার দীপু সোনা। বেশ চলছিল-সমস্যা হলো খাওয়ার বেলায়।সবার পিড়াপিড়িতে আমিষ খেতে হবে। কিন্তু খেতে বসে যেই না মাছ মুখে দিয়েছে অমনি বমির উপক্রম হ'ল।সবাই তখন একটা অন্যরকম লক্ষণ লক্ষ্য করলো। হয়তো হতেই পারে-কারণ পরেশ ও দীপার মেলা মেশা তো অনেক দিনের! জীবন দেবতা এভাবেই এঁকে দিল জীবনের জলছবি।          

                       ----------------------:--------------------

শেফালি সর,জনাদাড়ি, গোপীনাথপুর, পূর্ব মেদিনীপুর,৭২১৬৩৩।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল