Featured Post

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি
  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

বর্তমান প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার দিবসের তাৎপর্য ।। পাভেল আমান


প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের ভয়াবহতায় কেঁপে উঠেছিল পুরো বিশ্ববাসী। ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও বিভিন্ন মহল থেকে মানুষের মৌলিক মানবাধিকারগুলোকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সংরক্ষণে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার বিষয়ে দাবি উঠতে থাকে। এসব দাবিদাওয়াকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আবারও ভূলুণ্ঠিত হয় মানুষের মৌলিক অধিকার। বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। এই যুদ্ধের পূর্ববর্তী সময় এবং যুদ্ধকালে হিটলার ও মুসোলিনির অক্ষশক্তির নৃশংসতা এবং ববর্র কাণ্ডে স্তম্ভিত হয়েছে মানবতা। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে মানবাধিকার বিষয়টি তাই খুব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে ওঠে। যার ফলে গঠিত হয় মানবাধিকার কমিশন। এই কমিশন মিসেস এলিয়েনর রুজভেল্টের নেতৃত্বে 'মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা'র খসড়া (ড্রাফট) তৈরি করে অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের মাধ্যমে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে জমা দেওয়া হয় এবং ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। বিশ্বের অন্য যেকোনো আন্তর্জাতিক দলিলের তুলনায় মানবাধিকার ঘোষণার প্রভাব গভীর ও স্থায়ী। ১৯৪৮ সালে গৃহীত হওয়ার পর থেকে ঘোষণাটি সর্বকালের সার্বিক পরিচিত এবং প্রভাবশালী দলিলগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে বিশ্বব্যাপী এর ব্যাপক প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষণীয়। ১৯৫০ সালের এই দিনটিকে জাতিসংঘ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়। সেই থেকে বিশ্বজুড়ে এ দিনটি পালিত হচ্ছে মানবাধিকার দিবস হিসেবে
ডিসেম্বর, ১৯৫০ সালে রাষ্ট্রসংঘ ৩১৭তম পূর্ণ অধিবেশনে ৪২৩(৫) অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সদস্যভূক্ত দেশসহ আগ্রহী সংস্থাগুলোকে দিনটি তাদের মতো করে উদযাপনের আহ্বান জানানো হয়। মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রের ৩০টি অনুচ্ছেদে মানুষের প্রতি মানুষের সহমর্মিতা, মানুষের মর্যাদা ও অধিকার রক্ষার ঘোষণা রয়েছে। আলোচনার সুবিধার্থে এখানে এর কয়েকটি উল্লেখ করছি। বলা হয়েছে, বন্ধনহীন অবস্থায় এবং সমমর্যাদা ও অধিকারাদি নিয়ে সব মানুষই জন্মগ্রহণ করে। বুদ্ধি ও বিবেক তাদের অর্পণ করা হয়েছে; অতএব ভ্রাতৃত্বসুলভ মনোভাব নিয়ে তাদের একে অন্যের প্রতি আচরণ করা উচিত। প্রত্যেকেরই জীবন ধারণ, স্বাধীনতা ও ব্যক্তি নিরাপত্তার অধিকার রয়েছে। কাউকে নির্যাতন অথবা নিষ্ঠুর, অমানুষিক অথবা অবমাননাকর আচরণ অথবা শাস্তি ভোগে বাধ্য করা চলবে না। আইনের সমক্ষে প্রত্যেকেরই সর্বত্র ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃতি লাভের অধিকার রয়েছে। আইনের কাছে সবাই সমান এবং কোনও রূপ বৈষম্য ব্যতিরেকে সবারই আইনের দ্বারা সম ভাবে রক্ষিত হওয়ার অধিকার রয়েছে। কাউকে খেয়ালখুশি মতো গ্রেফতার, আটক অথবা নির্বাসন দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে না। কাউকেই যথেচ্ছ ভাবে তার জাতীয়তা থেকে অথবা তাকে তার জাতীয়তা পরিবর্তনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা চলবে না। প্রত্যেকেরই চিন্তা, বিবেক ও ধর্মের স্বাধীনতার অধিকার রয়েছে। প্রত্যেকেরই মতামত প্রকাশের স্বাধিকার রয়েছে; বিনা হস্তক্ষেপে মতামত পোষণ এবং যে কোনও উপায়ে এবং রাষ্ট্রীয় সীমানা নির্বিশেষে তথ্য ও মতামত সন্ধান, গ্রহণ এবং জ্ঞাত করার স্বাধীনতা এ অধিকারের অন্তর্ভুক্ত।

আমাদের চারপাশে রোজ কোনও না কোনও ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়ে গেলেও তা আমাদের চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে। কিংবা আমরা চোখ বুজে রাখছি। 
আজ কোনও সরকারি অফিস- হাসপাতাল-পুরসভায় নিজের প্রয়োজনে গেলে সেখানে দামি প্যান্ট জামা পরা তথাকথিত ভদ্রলোক সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের কাছে যে ব্যাবহারটা পান, এক জন খেতমজুর, গরিব দিনমজুর ময়লা লুঙ্গি, জামা পরে গেলে সেটা পান না। 

অথচ আমরা কেউ প্রশ্ন তুলি না যে, সংবিধানে সব মানুষের সমানাধিকারের কথা বলে আছে, তা কেন মান্যতা পাচ্ছে না? এক জন মানুষ তার নিজের পরিবারে বাবা, মা, ভাই, বোনেদের কাছ থেকে জমি জায়গার অংশ পেতে যতটা সজাগ, তার থেকেও তাঁর বেশি সজাগ থাকা দরকার ছিল রাষ্ট্রের কাছে, স্থানীয় প্রশাসনের কাছেও তাঁর ন্যায্য অধিকার বুঝে নেওয়ার বিষয়ে। পরিবারের সম্পত্তির হিসেব না পেলে যেমন আদালতের শরণাপন্ন হই আমরা, তেমনই তোমার রাষ্ট্র, তোমার সরকার বা স্থানীয় প্রশাসন যদি নাগরিককে তাঁর অধিকার পাইয়ে দিতে সচেষ্ট না হয়, সেখানেও তিনি আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন। 
জাতীয়, রাজ্য বা জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করতে পারেন ন্যায় অধিকারের  জন্য। মানবাধিকার দিবসে আমাদের কর্তব্য এই তথ্যগুলো আরও বেশি করে সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরা। স্রেফ দিনটিকে পালন করা নয়। 
মানবাধিকার দিবস পালনের থেকেও বড় কথা মানবাধিকার রক্ষার জন্য আইনি পথেই পথ চলা। সেই অধিকার রক্ষার মানবিক ভাবনাটা জারি রাখাও মানব-অধিকার। তাই আলোচনা- প্রচারাভিযান-বক্তৃতা-পথসভার মাধ্যমে ঘটা করে মানবাধিকার দিবস পালনের চেয়েও জরুরি আশপাশের মানুষজনকে তাঁদের প্রাপ্য ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা। স্বাধীনতার ৭৩ বছর পরেও আমাদের দেশে আর্থসামাজিক কাঠামোর বুনিয়াদ এখনো স্থিতিশীল ভাবে পুনর্গঠিত হলো না। প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে সমাজে অস্থিরতা বিভাজন সামাজিক বৈষম্য, হানাহানি, রাজনৈতিক মেরুকরণ সর্বোপরি সংখ্যালঘুদের প্রতি চরম নিপীড়ন ও শোষন,। মানবাধিকার এখনো সেই অর্থে বৃহত্তর মানুষের কাছে পৌঁছায়নি শুধুমাত্র গালভরা কথাতেই আটকে গেছে। সমাজের সর্বক্ষেত্রে শ্রেণিবৈষম্য বিভাজন এখনো উঁকি মারছে। আমরা যেদিন নিজেদের জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষেমানবতার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সবাইকে ভ্রাতৃত্ব সৌজন্যে সংহতি সহানুভূতি সহমর্মিতা আপন করে নিতে পারব সর্বোপরি প্রকৃত ভারতীয় রুপি নিজেদেরকে মেলে ধরতে পারবো সেদিনই আমরা মানবাধিকার কে পূর্ণভাবে মানব জীবনে প্রয়োগ করতে পারব। পরিশেষে আবারও বড় বড় গালভরা কোথায় আটকে না থাকে সাধারণ মানুষকে তাদের বেঁচে থাকার সুযোগ সুবিধা নিরাপত্তা পরিষেবা আমরা যদি সুষ্ঠুভাবে প্রদান করতে পারি সেখানেই মানবাধিকার দিবসের প্রকৃত তাৎপর্য ও প্রাসঙ্গিকতা। পরিশেষে এই করোনা সংকটে একদিকে মানুষ যেমন রুটি রুজির কর্মসংস্থান হীনতায় দিশেহারা বিধ্বস্ত বিপর্যস্ত ঠিক সেই মুহুর্তে বেঁচে থাকার জিয়ন কাঠি হয়ে উঠতে পারে মানবাধিকারের তাৎপর্য ও প্রাসঙ্গিকতার বাস্তবিক উপলব্ধিকরন।




মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত