সাদা থান
পারমিতা রাহা হালদার (বিজয়া)
ইন্সপেক্টর রুদ্রর আজ নাইট ডিউটি।পুলিশ স্টেশনে এক ভদ্রলোক এলেন রাত তখন দুটো,গম্ভীর গলায় বললেন কাইন্ডলি আমার জন্য একটা থাকার ব্যবস্থা করবেন?
দেখুন রেলে কাটা বডি এসেছে এখন সেই বডি ফরেনসিক ডিপার্টমেন্টে পাঠাতে হবে। ডিপার্টমেন্টে একা আমি,ব্যস্ত আছি। বাকিরা অন্য ডিউটিতে ব্যস্ত। তাছাড়া এত রাতে কোথায় পাবো বলুন পাড়াগাঁয়ের মধ্যে থাকার জায়গা।
আমি ভীষণ বিপদে পড়েছি। আমার মানিব্যাগ-মোবাইল চুরি হয়ে গেছে। বাসায় খবর দিতে পারছি না,ওনারা চিন্তিত...
ধুত্তেরি মশাই! রির্পোট লিখিয়ে ভোরের জন্য অপেক্ষা করুন। ডেড বডির তদন্ত করতে হবে। বডি কার, বাসার ঠিকানা, এখনো কিছু জানা যায়নি।
৯৫৫৭৩৪২০০১ এই নম্বরে ফোন করুন সব সন্ধান পেয়ে যাবেন।
কিন্তু আপনি কিভাবে জানলেন মশাই ? আপনি তো বডি দেখেনও নি, তাহলে? অবাক হয়ে ভ্রু-কুঁচকে এইবার ভদ্রলোকের দিকে তাকালেন রুদ্র! সাদা অ্যাপ্রনে আভিজাত্য প্রকাশ পাচ্ছে কিন্তু তারমধ্যেও যেন একটা অদ্ভুত ফ্যাকাসে চেহারা দেখেই হঠাত্ গা ছমছম করে উঠলো রুদ্রর।
গম্ভীর গলায় আবার উওর এলো,আমি ডক্টর কৌশিক সেন। ট্রেন থেকে নামার সময় পা পিছলে পড়ে ট্রেনে কাটা পড়ি। এই সাদা চাদরে মোড়া বডিটা আমারই। আপনি এই নম্বরে আমার বাসায় একটা ফোন করে দিন। ওনারা চিন্তিত...
বডির উপরের সাদা কাপড় হঠাৎ দমকা হাওয়ায় সরে গেল। বডি আর সামনে দাঁড়িয়ে ভদ্রলোকের চেহারা একই। আর কিছু যেন শুনতে পাচ্ছেননা রুদ্র। সারা শরীর থরথরিয়ে কাঁপছে, চোখ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। শরীরের ভিতরের চলমান যন্ত্র গুলো যেন স্থির হয়ে জ্ঞান হারাচ্ছে।
ভদ্রলোক তখনো গম্ভীর গলায় বলেই চলেছেন ফোনটা করুন ইন্সপেক্টর...
বাসায় ওনারা চিন্তিত ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন