ভাইফোঁটার মেলা
অসিত কুমার পাল
গ্রাম বাংলার নানা জায়গায় বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে । দেবতাকে ভাইফোঁটা দেওয়া উপলক্ষ্যে মেলা বসে একথা শুনতে হয়তো আশ্চর্য লাগবে কিন্তু নদীয়া জেলার মদনপুরে সত্যিই এরকমই একটা মেলা বসে ।
নদীয়া জেলার কল্যাণীর কাছে মদনপুর নামের একটি জায়গা আছে । পলাশীর ঐতিহাসিক যুদ্ধের তিন বছর পরে নদীয়ার তৎকালীন মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় এই মদনপুরেই যমুনা নদীর তীরে মদনগোপাল কৃষ্ণের কাঠের মূর্তি সহ একটি মন্দির স্থাপন করেছিলেন । শোনা যায় মন্দির স্থাপনের কিছুদিন পরে মদনগোপাল মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে জানান তিনি ওই মন্দিরে একাকী থাকতে পারছেন না, রাধার বিরহে তিনি কাতর হয়ে পড়েছেন, মহারাজা যেন মদনগোপালের পাশে রাধিকার মূর্তি স্থাপনের উদ্যোগ নেন। এর পরে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের আদেশে শ্রীরাধিকার একটি নিমকাঠের মূর্তি তৈরি করে মদনগোপালের পাশে স্থাপন করা হয় ।
মদনগোপালের বিরহ থেকে মন্দিরটি মদনগোপালের বিরহী মন্দির নামে পরিচিতি পায়। স্থানীয় এলাকার মেয়েরা মদনগোপালকে ভাই বিবেচনা করে ভাতৃদ্বিতীয়ার দিন চন্দনের ফোঁটা দিয়ে থাকে । দুরদূরান্ত থেকে ভক্তগণ সেখানে উপস্থিত হয়ে মদনগোপালের পূজা দিয়ে থাকে । সেই উপলক্ষ্যে মন্দির প্রাঙ্গণে মেলা বসে যা বিরহী মদনগোপালের ভাইফোঁটা মেলা নামে পরিচিত । বেশ কয়েকদিন ধরে চলা এই মেলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরাও যোগ দিয়ে থাকে বলে এটাক সম্প্রীতির মেলা হিসাবে গণ্য করা হয়ে থাকে।
@@@@@@@@
অসিত কুমার পাল ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন