Featured Post

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

ছবি
  "নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।  ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)।  আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব

স্মৃতিচারণ।। উৎসবের আনন্দ---তখন এখন ।। সাইফুল ইসলাম



 উৎসবের আনন্দ-- তখন এখন

সাইফুল ইসলাম


উৎসব মানেই আনন্দ। আর এই আনন্দের প্রকাশ নতুন নতুন জামাকাপড়, রকমারী খাবার,হৈ-হুল্লোড়,একে অপরের সাথে মিলেমিশে একাকার এর মধ্যে। কোন উৎসব হয় নিভৃতে আবার কোন উৎসব হয় প্রকাশ্যে। কোনো উৎসবে ভরে উঠে আলোর রোশনাই আবার কোনো উৎসব হয় আলোকোজ্জ্বলহীন। 
       আমি যেখানে থাকি, এখানকার অধিকাংশ মানুষই উৎসব বলতে বোঝেন ঈদ, দুর্গাপূজা আর কালীপূজা। এই সকল উৎসবে মানুষ আনন্দে মেতে ওঠেন; তবে সে আনন্দ কোনটা ক্ষণস্থায়ী আবার কোনটা দীর্ঘস্থায়ী। দীর্ঘস্থায়ী আনন্দের ভিড়ে ক্ষণস্থায়ী আনন্দ চাপা পড়ে যায়। আর সেই আনন্দোৎসব পেতে অনেক আগে থেকেই সকলের প্রস্তুতি শুরু হয়। সেই রকমই একটা উৎসব দীপাবলী, যাহা এখানকার প্রতিটা মানুষ অপেক্ষায় থাকেন। কারণ দীপাবলী পূজো উপলক্ষে এখানে যে মেলা বসে তাহা অতি সুপ্রাচীন এবং তার স্থায়িত্ব হয় প্রায় পনের দিন।             
এখন গ্রাম বদলে গেছে। মাটির রাস্তা প্রায় নেই বললেই চলে। এমন একটা সময় ছিল যখন মেলা প্রাঙ্গনে যেতে একমাত্র ভরসা ছিল গোরুর গাড়ি। কালীপূজোর পরের দিন মেলা তাই ছোটদের আনন্দের শরীক হতে হত বড়দেরকেও। কারণ ছোটদের আনন্দেই বড়দের আনন্দ। পূর্ব প্রস্ততি অনুযায়ী জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের শুরু হত অর্থের জোগানের তোড়জোড়। এমনকি সব বাড়ীতে দূর-দূরান্তের গ্রামগুলি থেকে আত্মীয়-স্বজনদের ভিড় হত। বছরে একটা মেলা,মেলার দোকান বসার আগেই ছোটদের চোখে-মুখে খুশীর ঝিলিক লক্ষ্য করা যেত।        
নির্দিষ্ট দিনে দুপুর থেকেই শুরু হত মেলা যাওয়ার তোড়জোড়। মেলায় কত রকমের খাবার দোকান; নদীয়ার বিখ্যাত পুতুল নাচ; কত ধরনের ছোট বড় মিলিয়ে নাগরদোলায় চড়ে আনন্দে ফেটে পড়া। সবশেষে মেলার শেষ প্রান্তে সারি সারি আখের দোকান। আখ চাষীরা মেলায় যাতে তাদের আখ বিক্রি করতে পারেন তার হিসেব রেখেই আখ চাষ করতেন। দোকানে বসে আখ খাওয়া আর বাড়ী ফেরার পথে আখ হাতে নিয়ে আসা। 
আমরা ছোটরা হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে বাবার কোমর ধরে পুরো মেলা ঘুরতাম। এখনকার মত মেলায় মোগলাই,চাউমিন পাওয়া যেত না।বাড়ি থেকে গামছায় বেঁধে বাবা নিয়ে যেতেন মুড়ি আর আমাদের রসগোল্লা দিয়ে বসিয়ে দিতেন দোকানের সামনে। রসগোল্লার রস হাত বেয়ে গড়িয়ে আসত কনুই পর্যন্ত।রসের মাখা মুড়ি সারা মুখে লেগে থাকত। জিভ দিয়ে হাত চেটে খেতে গিয়ে ভাবতাম মেলায় বুঝি এমনি করেই খেতে হয়। 
আজ যুগের সাথে সাথে সব পাল্টে গেছে। সেই পূজো,সেই মেলা সবই আছে।শুধু আনন্দ কেমন যেন ফিকে হয়ে গেছে। আজ বাবা নেই। এখন আমিই বাবা।ছেলে মেয়েদের কবে মেলায় নিয়ে গেছি মনে পড়ে না। একটু বড় হতেই ওরা নিজেরাই মেলায় যায়। লোকসংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে ঠিকই কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় ওদের সাহসও বেড়ে গেছে অনেকাংশে।
বাড়ি বাড়ি প্রবেশ করেছে টিভি।যার দাপটে সেই ঐতিহ্যবাহী পুতুল নাচ তার ছন্দ হারিয়েছে। তখন শুধু বাজত ঢাক আর এখন ঢাকের বাদ্যির সাথে চলছে ডিজে। শ্রুতি মধুর শব্দ চাপা পড়ছে ডিজের হৃদয় কাঁপানো শব্দে।
যুগের চাকা গড়াতে গড়াতে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বলা মুশকি। পূজো আপন মহিমায় বিরাজমান আজও।আশা করি অচিরেও একই থাকবে। 
উৎসব আসে, উৎসব যায়। শুধু মনের মাঝে কিছুটা দাগ কেটে যায়,কোনটা হাল্কা,কোনটা গভীর। তখন যে নিখাদ আনন্দ কচি মনে দাগ কাটত এখন তেমনটি আর নেই। এখনকার বাচ্চারা আর দশদিন আগে থেকে লাফালাফি করে না। কেমন যেন নিষ্প্রভ আনন্দ ওদের কে ঘিরে ফেলেছে। 

------------- 


------------------------------------------------------------
সাইফুল ইসলাম
বর্দ্ধন পাড়া,বীরভূম
ফোন-৯৬৪১৭৭০০১৯          
    

মন্তব্যসমূহ

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

জনপ্রিয় লেখা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৭তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৪তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩১ এপ্রিল ২০২৪

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৬তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩০ আগস্ট ২০২৩