আমাদের উৎসবগুলো
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ
আদিম সাম্যবাদী সমাজ ব্যবস্থার প্রেক্ষিতে মানুষের দলবদ্ধভাবে বসবাস,খাদ্য সংগ্রহ,খাদ্য গ্রহনের রীতিনীতি দলবদ্ধভাবে পরিচালিত হতো।এতে তাদেরই ব্যবস্থাপনায় অবলীলায় একটা উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হতো।বিরাজ করতো সম্মিলিত প্রয়াসের মধ্যে অকৃত্রিম, আনন্দঘন পরিবেশের।
কালে কালে মানুষের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, স্বার্থপর মনমানসিকতা নিয়ে দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে; আর সমাজের কাঠামোগুলোতে ফাটল ধরে।গোষ্ঠী, গোত্রের নানাবিধ দ্বন্দ্বের পরিণতিতে সমাজের উৎসব কেন্দ্রীক বলয়ের সীমাবদ্ধতা চলে আসে।বিভক্তকারী মানুষের সমাজেও চিন্তা চেতনা, প্রথাগত বিশ্বাসের অভিন্নতার ক্ষেত্রগুলোতে চিড় ধরে। সাথে শাসক শ্রেণির প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ মদদে উৎসবগুলোতে মার্জিন টেনে দেয়া হয়। সমাজপতি, গোত্রপতিদের বিধিনিষেধের সাথে ধর্মীয় রঙ লেপনের সুযোগ ঘটে। মানুষের আবহমান সংস্কৃতির চিরায়ত রূপের সংস্কারে, অপসংস্কারে ব্যাপক পরিবর্তনের ধারা যুক্ত হয়। আপন আপন সংস্কুতির বিকাশকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে একে অন্যের ওপর কর্তৃত্ববান চরিত্রায়ন ঘটাতে থাকে। সাথে ধর্মীয় আবহের আবেগী মানুষই তার স্বজাতির বিরুদ্ধাচরণে মেতে ওঠে।মোটকথা সমাজের সম্প্রদায় বনাম সম্প্রদায়, ধর্ম বনাম ধর্ম ---এধরনের আন্তঃমননে বিদ্যমান বৈরিতাতে উপজীব্য করেই উৎসবগুলোতে মানবতাকে নিগৃহীত হতে হয়েছে বহুকাল।
আমরা জ্ঞান -বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষের আলোকিত বলয়ের কাছাকাছি পৌঁছেও পারস্পরিক সম্প্রীতিকে অটুট রেখে, অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধারন করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছি। আমাদের যে উৎসবগুলো বিশ্বের দরবারে আমাদের বাঙালিয়ানাকে পরিচিত করেছে, উৎসবের বিভাজন, ধর্মীয় উন্মাদনার নিরীক্ষণে সেই ঐতিহ্যের ধ্বস আমাদেরই অস্তিত্বকে করেছে হুমকির সম্মুখীন।
::::::::::::;::::::::::::::::
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন