Featured Post
গল্প ।। লাগলো যে দোল ।। অঙ্কিতা পাল
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
লাগলো যে দোল
অঙ্কিতা পাল
"নীল দিগন্তে ওই ফুলের আগুন লাগলো,
বসন্তে সৌরভের শিখা জাগলো।"
---- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আজ রঙের উৎসব দোল, আকাশে বাতাসে আনন্দে সুর। সবাই দল বেধে দোল উৎসবে মেতে উঠেছে। দোল মানেই বাঙালি মনের রঙের আবেশ। মেয়েদের পরনে বাসন্তী রঙের শাড়ি আর ছেলেদের পাঞ্জাবি। শ্যামবাজারের বসু পরিবার এর ব্যতিক্রম নয়, এই বসু পরিবারের মেয়ে নলিনী বসু নৃত্যে গীতে ভরিয়ে রেখেছে তাদের বসন্ত উৎসবকে। আজ সে সকলের মধ্যমণি, কতো দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন ছুটে এসেছে তাকে দেখতে । সে তার পরিবারের লোকজন বন্ধু-বান্ধব ও পাড়াপড়শি দের নিয়ে দোল উৎসবে ব্যস্ত।
এমন সময় এক লাল গাড়ি থেকে নেমে এলেন এক যুবক, দেখলে মনে হয় খুব উচ্চ শিক্ষিত ও প্রভাবশালী। তিনি নলিনীদের সাথে রং খেলায় সুন্দর ভাবে মিশে গেছেন। সেই সকাল থেকে রং খেলা যে কখন সন্ধ্যায় শেষ হলো বোঝা গেলো না, কেমন করে সময় যে জলের মতো পার হয়ে গেল!
রং খেলার অন্তিম লগ্নে এসে সেই ব্যক্তি হঠাৎই নলিনীকে প্রশ্ন করেন - ম্যাডাম, আপনি খুব সুন্দর গান করেন, আপনার নৃত্যানুষ্ঠান আমাকে মুগ্ধ করেছে।
নলিনী মৃদু হেসে বলে - ধন্যবাদ।
অপরিচিত আগন্তুক আবার তাকে প্রশ্ন করেন - আপনার পরিচয়টা কি জানতে পারি?
এবার অবাক হয়ে নলিনী বলে- কেন বলুন তো?
তিনি এবার উচ্চকণ্ঠে হা হা করে হেসে বলে উঠেন- আপনি আমাকে চেনতে পারেননি না? হয়তো ভুলে গেছেন। আপনিই তো নলিনী বসু? Am i right?
বিস্মিত নলিনী সাময়িক তার বিস্ময়ের ভাব কাটিয়ে কৌতুহলী হয়ে বলে - হ্যাঁ, কিন্তু আপনার পরিচয়? একটা হাঁফ ছেড়ে তিনি এবার বলেন- যাক বাবা, যা ভীষণ ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন! তারপর খানিক থেমে কোন ভুমিকা না করে দু'হাত বুকের কাছে জড় করে নমস্কার জানিয়ে বলেন- আমার নাম ডঃ কৌশিক দত্ত। বাবা কমলেশ দত্ত।
নলিনী মুচকি হেসে বলে - ও... আচ্ছা ...আচ্ছা ...আপনিই তাহলে কমলেশ আঙ্কেলের ছেলে! আসুন আসুন ...
নলিনী কৌশিককে তাদের বাড়ীতে নিয়ে আসে এবং সকলের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। কৌশিককে পেয়ে বসু বাড়ির লোক খুব খুশি হয়।
এরপর সন্ধ্যায় গড়িয়ে রাত্রি নামে। যে যার ঘরে শুয়ে পরে। কিন্তু নলিনী ঘুমায় না সে ছাদে একাকী দাঁড়িয়ে পূর্ণিমার গোল চাঁদটার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। এক থালা লাল আবির নিয়ে কৌশিক এসে তাকে রঙ মাখিয়ে দিয়ে বলে - তুমি কি আমার জন্যই অপেক্ষা করছ? নলিনী সত্যিই তার জন্য অপেক্ষা করছিল, কারন সে ছোটবেলা থেকে কৌশিককে খুব ভালোবাসতো।
নলিনী কৌশিকের কথায় কোন উত্তর না দিয়ে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে তার চোখের দিকে। এই পূর্ণিমা স্নিগ্ধ চাঁদটা তাদের ভালোবাসাকে আরো রঙিন করে দেয়। কখন যে পূর্ণিমার গোল চাঁদ ডুবে গিয়ে নতুন সূর্যের আলো ফুটে উঠল, তারা বুঝতেই পারলো না।
ভোরের কোকিলের সুমিষ্ট কলতান তাদের ভালোবাসার সাক্ষী রয়ে যায়।
--------------------------------
অঙ্কিতা পাল
কালিকাপুর , ভাঙ্গড়
দক্ষিণ ২৪ পরগনা ।
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন