মানহারা লোনা মাটির কথা
সুদামকৃষ্ণ মন্ডল
রোলেক্সের বুটিদার হলদে শাড়ি পরে সে বসে। চেয়ার তো নেই। বসে রয়েছে চৌকো চৌকো ব্যাটারির খালি খোলের উপর । তার পাশে আমিনা আর নির্মলা । ওরা বাবাকেলে অতীত নিয়ে আলোচনা করছে । প্রতিমার চোখ কান খোলা চৌকস্ শরীর। তার রেট অন্যান্যদের থেকে বেশি।
একটু দূরে বটগাছে কাকের কর্কশ চেঁচামেচি। বটগাছের তলায় চা - দোকান প্রতিমার। সেখানে তার মেয়ে থাকে। চা তৈরিতে হাত পাকা করেছে বেশ। ঠেকায় পড়লে কিনা হয় ? চা- দোকানের পত্তন তো আজ নয়, সেই কবে এসেছিল ভাতার খাগি। পেটে তখন আদুরী ।
ধানের মাঠে প্রতিমার বর মাছ ধরার পেশা ছিল । কৈলে আটোল - চেঁড়ো আটোল- ঘনি আটোল- গাল চেরা আটোল - ফুট জাল ইত্যাদি বর্ষায় আমনের ক্ষেতে বসাত। আল বাঁধে ধানের ক্ষেতে জলের টানে ওগুলি বসিয়ে মাছ ধরে বিক্রি করে সংসার চলত। জমি জমা ছিল না । একদিন প্রতিমার বর ক্ষিরোদ আটোল তুলতে গিয়ে কেউটের ছোবল খায়। তাতেই তার মরণ । আবাগীর বেটী তারপর তো রাঁড় হয়ে গেল । তখন তার রূপ যেন ঝলমলিয়ে পড়ছে । মাত্র মাস দু'য়েকের সোহাগী প্রতিমা কান্নায় ভাতারের বুকে আছড়ে পড়ছে । " কি হবে গো--? আমার এ কী দশা হলো গো -- " -- বলে আর্তচিৎকারে গাঁয়ের আকাশ চৌচির হয়েছে ।ভালোবাসা করে বিয়ে । কে জানে বিধাতা কার কপালে কি লিখেছে। এমন কলম দিয়ে লিখেছে নির্ঘাৎ মরবে । সাপে কাটা বাঘে দেখা নাকি ললাটের লিখন। তাহলে এমন যৌবনেশ্বরীকে কেন যৌবনের পসরা দেওয়া হবে ।
শরীরে রূপের ঢল উপচে পড়ছে । বেদো বউ- মরা বিপিন গিরি হামলে পড়ল প্রতিমার দুঃখের শরিক হতে । সেই বিপিনের চা -দোকান । একা ঠেলা সামলাতে না পেরে পার্মানেন্ট হয়ে গেল প্রতিমার চাকরি । তা আবার চা - দোকানে এবং পতিতাপল্লীতে।
বিপিন তো অকম্মার ঢেঁকি। পেটে বাচ্চা এসেছে জেনে কিনা খুশি !!. আগের বউ এডস রোগে মরেছে । হবে না কেন পৌরুষ ক্ষমতা নেই। বউ গেল টাকা রোজগার করতে । প্রতি রাত গেলে নতুন পুরুষ। কোন্ ঢ্যামনা জেনে শুনে রোগ দিয়ে বউটাকে মারল জানা যায়নি । জানলেও বা কি করত বিপিন। বিপিন তো পরে জেনেছিল। ডাক্তার বদ্যিতে কি করবে। বিপিন বলেছিল বেলুনের ব্যবহারবিধি। তাতে কি খদ্দের মানে । তুখোড় আনাড়ি গোছের কিছু আসত সুখ - সুখ অনুভূতি আনন্দ পেতে নাছোড়বান্দা । ফলে অধিকাংশ খদ্দেরের সুখ পাইয়ে দিতে দেখেছি বেলুনের জমে না ভালো ফলে অধিকাংশ খদ্দেরের সুখ পাইয়ে দিতে বিকি কিনির পসরায় বেলুনের নিষ্প্রয়োজনীতা দেখিয়েছে।
বিপিনের কাছে এলো প্রতিমা । প্রতিমা প্রতিমাই। শরীরের খাঁজে খাঁজে উথলানো যৌবন। বাসন্তীর সাজে করিৎকর্মা। বুড়োভাম বিপিন কেবল হাতে পরশ মাখে। কচলানো শরীর আর সংযমী হয় না। তেঁতুল দেখলেই জিভে জল আসে । খেতে আর পায় না । খাবার জন্য যে কল কব্জা তা তো অসাড়। নাম মাত্র অকেজো হয়ে ঝুলে আছে । সহস্রবার হাতের কায়দাকানুনিতে নট্ নড়ং চড়ং। বিপিন আগের বউকে যেভাবে নিজের নিষ্ক্রিয়তার জন্য পরের হাতে যেতে বাধ্য করেছিল এখনও তাই।
শহরে বৃষ্টি সহ্য হয় না পতিতা পল্লীর ঘরে ঘরেও। খদ্দের কম হয় । যে যে যার মতো ঝিম মেরে বসে থাকে । লাইট পোষ্টের আলোটা আজও আছে। কাউকে বদলাতে দেখেনি আদুরি । প্রতিমাও না। আলোর ঠাট্টা যেন গলি জুড়ে । ফলে অন্ধকারের আত্মীয়তা ওদের মনে আরো বেশি আশ্রয় নেয়।
যাই হোক, বুকের লোভানির বিশালতায় বিপিন হাত দিয়ে থাকত। কাশত খুবই। আঁচলের মারপ্যাঁচের জড়ানি ছাড়াতে চেষ্টা করলে প্রতিমা প্রথম প্রথম দ্বার উন্মোচন করত। ঘরের মধ্যে যাবার শক্তি ছিল না । উন্মোচন করেই ফ্যাল ফ্যাল করে বিস্ময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকত। প্রতিমা অবশেষে পর্দা নামিয়ে বিরতি ঘোষণা করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ত। মনে মনে বলত , পোড়া কপাল ! যৌবন দিয়েছেন যিনি পৌরুষ দেবেন তিনিই । কোথায় এ তো সাতশ' ভূতের খাওয়ার জন্য । একা নয় অধিক ভূতের ব্যবস্থা । এ ও ভাগ্য বিড়ম্বনা !!
আদুরীকে লেখা পড়া সামান্য ক' ক্লাস পড়িয়ে আর পড়ানো হলো না । দোকানে সামাল দিতে গিয়ে দশ জন বাপের বয়েসী খদ্দেরের নজরে পড়ে । বাপের আদল তার চোখে মুখে। শ্যামবর্ণা । খলতাই -ভরা -ভরা টসটসে । অনেকে জানেই না প্রতিমার মেয়ে আদুরি ।
অক্ষয় পরমায়ু নিয়ে বিপিন আসেনি। বাবা পরিচয়ে দোকানের দখলদারিত্ব আদুরীর। বট গাছের তলায় ঝুরি নামলে রুটি কাটা ছুরি দিয়ে সেগুলো কেটে দেয়। ঠিক তেমনি মুখের কর্কশ কথায় পাড়ায় আসা ছ্যাঁচ্চোড়গুলোকে পাত্তাই দেয় না। মেঘের ঘুলঘুলি দিয়ে পড়ন্ত আলোর নাচানাচিতে আগামী দিশার ভরসা পায়।
প্রতিমা ভাবছে অতীত। বরবাদী জীবন ভিক্ষের জন্য গতর চললে বড়জোর পরের বাড়িতে ঝি - চাকরানী । কিন্তু মেয়ে ? মেয়ের কি হবে?
নিজের শরীর তো কিছুকাল খেয়েছে শিয়াল কুকুরে । অতীত সুখের বিষণ্ণ স্মৃতিচারণের ধারাবাহিকতা ক্রমশঃ উত্তরাধিকারীর মধ্যে স্পর্শ যাতে না করে তার জন্য ঘাটের মড়া বিপিনের দোকান ভরসা। ক্ষেতের পাশে ধানের সোঁদালী ফসলের গন্ধ পেতে সময় সাবুদ লাগেনা । মিঠে কড়া গন্ধ সহজে নাকে এসে গা সওয়া হয়ে গেছে । বরবাদি পাড়ার ঢেমনিগুলোকে দেখে আদুরই মনে মনে ভাবে আর বলে , উদবেড়ালী - হাড় গিলে - বাঘ-সিঙ্গী তাওকি ? সে রেডিও খোলা রাখে সবসময় । ওদের অশ্রাব্য গালিগালাজ খিস্তি খেউড় যাতে না শুনতে হয়। চা -খদ্দেররাও শোনে। আর কেউ কেউ বলে, বস্তা পচা কবেকার এফএম চালিয়ে কি শুনিস্ আদু , একটা টিভি নে। এ গান কান আর শুনছে না। চোখ দিয়ে দেখি নেতা মুন্ত্রীর কেচ্ছাগুলো । সেদিন চন্দন দাস মাছের আড়তের কর্মচারী সে-ই এসে বিটকেল মুখ করে দু'কলি গাইল রেডিও শিল্পীর সাথে গলা মিলিয়ে । আর অপর্ণা এসে গালে থুতনি ধরে ছুঁচলো ঠোঁটে চুক চুক করে শব্দ করল। চন্দন কানে কানে বলল, আজ একজন বহর্দ্দার ঢুকবে । জানাতে এলুম। দু'শো ইনকাম পাক্কা ---।
অপর্ণা বলল , তা বললি যখন পাড়া সারা কি ঢ্যাঁড়া পিটাবো নাকি রে শালা ? তা সেই চোখে লাগা আসমানের চাঁদটি কে ? আমাদের জন্য হবে না ? আমরা কি হাওয়া খাবো ? হ্যাঁ রে ঢ্যামনা শুয়ার ?
--- পাবে । সবুর করো ডার্লিং মেওয়া ফলবে । এত উতলা কেন ? মাইরি -- মাগনায় কি বিলোবি ?
বলতে বলতে একজন এসে যেতেই চোখে চোখ রেখে মিষ্টি হেসে পিছিয়ে যাচ্ছে অন্যের হাতছানি থেকে ছিনিয়ে নেবার জন্য । ইচ্ছে করে বুকের কাপড় সরিয়ে লোভানির আন্দাজ পাইয়ে দিতে কাছে গেল।
এযেন পসরা সাজিয়ে দর যাচাই। কিগো বাবু চলবে ? বিকিকিনির বাজারে পছন্দ হলে তো একটা দাম বলে ঠিক গুছিয়ে নেওয়া । অপর্ণা হাত ধরে নিল কেউ প্রস্তাব দেবার আগে । অপর কারোর পাল্লায় যাতে পড়ে না যায় সেজন্য দরজার আড়ালে নিয়ে গেল ।
--- কতক্ষন থাকবে ?
লোকটা মাঝি মাছের ট্রলারে যায়। ঘরে যাবার সময় সুযোগ নেই । বেশি দর কষাকষি পছন্দ - পছন্দের অবকাশও নেই। সে বলল , এক ঘন্টা।
---- বেশতো কত দিবে বলো ?
---- তিনশ'।
--- না বাবু যা জিনিসপত্রের দাম । একটু বাড়িয়ে দা - ও। এক রাতের মতো পুষিয়ে দেবো ।
---- তাহলে ছাড়ো।
সে উঠতে যাচ্ছিল তার কাঁধে দু হাত দিয়ে বসিয়ে দিল। তারপর বলল, পুষিয়ে দেব । যা বউ পারে না। ঘোমটা দিয়ে খেমটা নাচবো না বাবু । এই শরীল বেচে চলে। এই অপর্ণা মাগী মিছে বলে না বাবু। নাও আর পঞ্চাশ দিও। এক ঘন্টায় যতবার শর্ট দিতে পারো ।
সে বুক থেকে কাপড় নামিয়ে কতদিনের পুরানো আলনায় শাড়িটা রাখল ।
----- আলো জ্বালা থাকবে ? না সুইচ অফ্ করব ?
---- সে তোমার খুশি ।
---- দরজায় হুড়কো দিলাম । বলে সুইচ্ অফ্ করল। মাঝির হুড়কোর আন্দাজ পেয়ে অপর্ণা খুব খুশি।
শিবু মাঝির খোঁজ করছে নিরঞ্জন । ঘাটে ট্রলার গেল কোথায় এই দিনে দুপুরে ?
হ্যাঁ, মাঝিদের প্রত্যেক টিপে ম্যানেজাররা টাকা দেয় ফুর্তি করার জন্য । বাড়িতে বউয়ের কাছে না গিয়ে নিত্য নতুন প্রতিটি টিপে এসে আবাসিক হোটেলে কেউ যায় কেউবা নিষিদ্ধ পল্লীতে । এখানে কম টাকায় মস্তি করা যায় । তবে সবাই নয় ।হোটেলে হলে তো ঘর ভাড়া চব্বিশ ঘন্টার জন্য গর্চা দিতে হয় । যদি ট্রলার সাথে সাথে সমুদ্রে যাত্রা না করে তাহলে বাড়ির নামে দেহশুদ্ধি করে কল গার্ল নিয়ে আবাসিকে । তার জন্যই সমুদ্র কাছাকাছি রমরমা হোটেল। হায়রে স্বাধীন ভারত -- সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধি পিছিয়ে পড়া নির্যাতিত মেয়েদের জন্যে কি ব্যবস্থা করে রেখেছে ।
শিবুর বাড়ী করঞ্জলী । সাড়ে তিনশ' টাকা পকেট থেকে বের করে দিল। আবার কি মনে করে বলল , সামনে ক্ষেপে এসে ইলিশ মাছ দেব। অপর্ণা শুনে খুব খুশি। এই কারণে লোকটাকে সে পুষিয়ে দিয়েছে । খদ্দের ধরা হয়ে থাকল।
প্রতিমা এখনও ভাড়ার ঘরে থাকে । মেয়েকে জড়াতে চায়না সে । সেই ভাড়ার ঘরে রাতটুকু আদরী থাকে। দিনের বেলায় আদরী দোকানে চলে আসলে পাপ রক্ত মাখা চিটচিটে রস মেশানো শরীর নিয়ে বাথরুমে ঢোকে ।
সাত সকালে চন্দন এসে তো খবর দিয়েই গেল প্রতিমাকে । চেনা খদ্দের । তাই সে আবার ঘর থেকে সেজেগুজে গেছে । আর বসে বসে মা - বাপের কথা শৈশবের কথা স্মৃতির দর্পণে দেখছে। কোথায় যেন হারিয়েছি কিছু । সেই হাডুডু খেলা- খোকো খেলা - সাতগুটি - অষ্টাপ - বাঘ-মোরগের লড়াই - লুডুর খেলা-সহযোগী বন্ধুরা একদিকে আর সে বিপরীতে । একটা ঘৃণ্য সমাজে কালের নির্ঘোষ অবয়বে বাস করছে । কোথায় লাট অঞ্চল - নদী খাল - লোনা মাটির গ্রাম । সবুজে সবুজে ছয়ালাপ। কুমিরের জলে মীন ধরে বাবা-মায়ের সাথে জীবন হারিয়ে স্বেচ্ছায় ক্ষীরোদের হাত ধরে এসেছিল।
গোধূলির হলুদ আলো এসে পড়েছে গাছে। শালিক দু' একটা কবুতর বট গাছের বট ফল খাচ্ছে। রিয়া শুয়ে বসে থাকে চাল আড়তের গায়ে । দেওয়াল ধারে তার শেষ জীবন পিঠে ঠেকে গেছে । সেও তো একশ' থেকে দশ- পনেরো টাকায় শেষমেশ খদ্দের নিজের কাছে ডাকত। বয়স হয়েছে শরীরের আর কিছু নেই । সুন্দরবনের লাট অঞ্চলে সীতারামপুরে বাপের ঘর। গদামথুরা চতুর্থ খন্ডে বিয়ে দিয়েছিল। স্বামীর ঘরের অত্যাচারে সেও আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিল । আখের ছিবড়া অথবা নারকেল ছিবড়ার মত অপ্রয়োজন সমাজের বোঝা। যারা ওকে দেখে পথ চলতে চলতে থুথু ফেলে ঘৃণ্য মানুষ , ঘৃণার পাত্র হয়, শেষ জীবনে জলটুকু গলা শুকিয়ে গেলেও নাগাল পায় না । এরা সেই গাঁয়ের মেয়ে - জল জঙ্গলের মেয়ে - নির্যাতিতা মেয়ে - স্বজনহারা শুধু নারী বলে । প্রতিমাও ওকে চেনে । কত কত রিয়ার মতো প্রতিমাকেও একদিন দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে হাড়গিলা - ন্যুব্জ শরীর নিয়ে বসতে হবে।
চন্দনের ঠিক করা মহাজন এলো । এভাবেই আসে। দালাল পাঠিয়ে সময় থাকতে ঠিক করে। এসে যেন না ফিরে যায়। ইলিশ ধরা ট্রলারের মহাজন অর্থ সম্পদের অভাব নেই । দিনরাত ব্যবসা। কালনাগিনী নদীর ধারে ধারে ব্যবসার মধ্যে ব্যস্ত থাকে । সারাদিনের অনেক ক্লান্তি একঘেয়েমি কাটানোর জন্য একটু আরামবোধ বিলাসিতার সাথে মুক্ত মনের অবসর যাপন। সাথে সাথেই নারী মাংসের ভিন্ন স্বাদ । সে চট্টগ্রামী। বউ ছেলেমেয়ে আছে । নিরক্ষর প্রায় কিন্তু ব্যবসার মাথা মুন্ডু বোঝে। ম্যানেজার দশ- বারো জন আছে । বড় ব্যবসায়ী বলে নাম ডাকও আছে।
ঘাট ছেড়ে ইলিশ মাছ ধরার ট্রলারগুলি বেরিয়েছে সেই সুযোগে ম্যানেজারেরা অনেকে ঘরে ছুটি নিয়েছে । হাজার হোক মালিক -- মানের কিছুটা হলেও তো আছে ।
একটা গোল্ড ফ্ল্যাক প্যাকেট আদুরীর থেকে কিনে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে এগিয়ে গেল প্রতিমার কাছে । সে বসে আছে সেজেগুজে ।
----- বাপরে বাপ বড়বাবু !! আমিনা বলল ।
----- প্রতিমা কডে ? প্রতিমা ----
যেন ঘরের বউ । বিয়ে করা ভাতার এসেছে । সাতগ্রাম দূরে মজুর খেটেখুটে এসে ডেকে পাড়া উজাড় করছে। অনেকে চেনে নামি দামি ধনী বলে। নির্মলা বলল , কে সৌভাগ্যবতীরে ? বড়বাবুকে বাগে আইনেছে ? বড়বাবুর হুড়কো উঠে তো?
----- তা লাগিয়ারে চাইতি ? দিউম নে ?
----- নাগো বড়বাবু । মস্করা করছিলুম।
----- সিগ্রেট নিবি ? কনে লইবি লই যা। শরম কিঅর ?
সিগারেটের প্যাকেট একটা দিয়ে দিল । ওরা খুশি মনে নিয়ে ব্লাউজে বুকের মধ্যে রাখল। প্রতিমা বলল, আমার ঘরে চলুন । সে আমিনাকে চোখ মেরে ভাড়ার ঘরে বাবুকে নিয়ে গেল। বাবু রাত দশটার মধ্যে বেরিয়ে যাবে ।
আদুরী চা - দোকানের ডেকচি -কেটলি-সহ অন্যান্য তৈজস ধুয়ে সাজিয়ে রাখল । এরপর আঁচ রাখবে ঘুঁটে কয়লায় সাজিয়ে । ভোরের আলো পড়ার আগে আগুন দিয়ে নিত্যদিনের চা তৈরিতে রত হবে।
=================
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন