Featured Post

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

ছবি
   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন:  'লেখাটি স্বরচিত ও অপ্রকাশিত'। মেল আইডি :  printednabapravat@gm

প্রবন্ধ : অরুণ কুমার সরকার



বাংলাভাষা তার অবক্ষয় এবং কিছু করণীয়

       

ভাষা হল মানব সংস্কৃতির উত্তরাধিকারের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ভাষা আবার সমস্ত বৈচিত্রের মধ্যে সৃজনশীলতার নির্দেশক এবং সমাজের মননশীল প্রতিবিম্ব। মুখের ভাষা হারালে ইতিহাস হারিয়ে যায়। হারিয়ে যায় সেই জনগোষ্ঠীর সমাজ ও সংস্কৃতি। অর্থাৎ, যখন কোনও একটা ভাষার মৃত্যু হয়, তখন মানবতার একটা অংশের অবলুপ্তি ঘটে। তাই, মানব জাতির সর্বাপেক্ষা মূল্যবান সম্পদ হল তার মাতৃভাষা। ভাষা মানুষের ভাবের বাহন। ভাষাই মানুষের চেতনাকে উন্নীত করে। ভাষাচেতনা আসলে মানুষের আত্ম-উদ্বোধনের হাতিয়ার। মাতৃভাষার অধিকার মানুষের জন্মগত ও মৌলিক অধিকার। এই অধিকার কেউ ছিনিয়ে নিতে পারে না। মাতৃভাষার অধিকার ছিনিয়ে নিতে গেলেই মানুষ রুখে দাঁড়ায় তার সর্বস্ব শক্তি দিয়ে। ১৯৫২ কিংবা ১৯৬১ সালের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস সে কথাই বলে।
     পূর্ববঙ্গে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে এবং বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার্থে যে ৫জন প্রাণ দিয়েছিলেন তাঁরা কার্যত যেকোনো দেশের মাতৃভাষাকামী মানুষের জেহাদি প্রতীক। ঠিক একই রকম ভাবে ১৯৬১ সালের ১৯ মে আসামের বরাক উপত্যকায় বাংলাকে দ্বিতীয় সরকারি ভাষা করার দাবিতে যে আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল তা এককথায় অভাবনীয়। ১১টি তাজা প্রাণের রক্তের বিনিময়ে সেদিন বাংলা ভাষার সরকারি স্বীকৃতি মেলে। এ জন্য বাঙালির গর্বের যেন শেষ নাই। কিন্তু তার পরেও সেই বাংলা ভাষাকে নিয়েই নানান প্রশ্ন থেকে যায়।
     সেসব প্রশ্নে যাওয়ার আগে দেখে নেওয়া যাক ভাষা আন্দোলনের পর, বাংলা ভাষার জন্য ঠিক কী করা হল। পূর্ব পাকিস্তানে ভাষা আন্দোলনের পর দুটি সংগঠন গড়ে উঠল। যার একটি হল বাংলা আকাদেমি এবং অপরটি হল বাংলা প্রবর্তন সমিতি। এদের কাজ কি ছিল? বাংলা আকাদেমির কাজ ছিল বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উন্নতিসাধন করা। আর বাংলা প্রবর্তন সমিতির কাজ ছিল সরকারি এবং বেসরকারি স্তরে বাংলা ভাষার সার্বিক প্রচলন। 
      একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, বাংলাদেশ গঠন হওয়ার পর সে দেশে বাংলা ভাষা সম্পর্কে ভাবনাচিন্তা অনেকটাই মজবুত হয়েছে। একুশে ফেব্রুয়ারি 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছে। এটা কম বড় কথা নয়। কিন্তু এ দেশে কি হল? বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষা ও বাঙালির কি উন্নতি হল? আদৌ কি উন্নতি হল, নাকি বাংলাভাষা বর্তমানে সংকটের সম্মুখীন?
     পূর্ববঙ্গে বাংলাভাষার প্রতি যে ভালোবাসার ঢেউ বইছিল, সে ঢেউ এক সময় কলকাতাতেও এসে পড়ে। বাংলা প্রবর্তন সমিতির প্রেরণায় কলকাতাতেও একটা সমিতি গড়ে ওঠে। সুভাষ মুখোপাধ্যায় ও সুনীল চট্টোপাধ্যায় ছিলেন সে সমিতির যুগ্ম সম্পাদক। সমিতির পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় এক স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু তা ওই পর্যন্তই। সরকারি এবং বেসরকারি স্তরে বাংলা ভাষার সার্বিক প্রচলন থাকল বিশবাঁও জলে।
     ভারত বহু ভাষাভাষীর দেশ। এদেশে হাজারো ভাষাভাষী মানুষের বাস। বাংলাভাষা এ দেশের দ্বিতীয় ভাষা। বাংলাভাষা সহ আরও সতেরোটি জাতীয় ভাষা আছে এ দেশে। সেজন্য অনেকে বলে থাকেন বাংলাদেশে যা সম্ভব বহু ভাষাভাষীর ভারতে তা তো সম্ভব নয়ই এমনকি এদেশের কোন একটি অঙ্গরাজ্য্যেও কি সম্ভব? আবার আন্তঃরাজ্য যোগাযোগের ক্ষেত্রে ইংরেজির তো কোনও বিকল্পই নেই। হিন্দিও আজকাল যেন অন্য ভাষার ঘাড়ে চেপে বসতে চায়। 
আমাদের রাজ্যের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, রাজ্য সরকার সরকারি কাজে বাংলাকে ব্যবহারের একটা চেষ্টা চালালেও বাস্তবে তা খুব একটা ফলপ্রসূ হয়নি। কিন্তু কেন হয়নি তার কারণ খুঁজতে গেলে দেখা যাবে অধিকাংশ আমলা এবং সরকারি কর্মচারী সরকারি কাজে বাংলা ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন না। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে গেলে সর্বপ্রথমেই আমাদের মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। বাংলা ভাষার প্রতি হতে হবে বেশি করে সচেতন। এক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি অবশ্য সাধ্যমতো কাজ করে চলেছে। বাংলা পরিভাষা এবং বানানবিধি নির্মাণে বাংলা আকাদেমির কাজ উল্লেখ করার মতো। 
     কিন্তু প্রশ্ন হল এতকিছুর পরেও বাংলাভাষা আজ সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে কেন? বাঙালি নিজেই কেন তাঁর মাতৃভাষাকে আজ অবজ্ঞা অবহেলা করে? এর কারণ বহুবিধ। প্রথমত, এক তো আন্তর্জাতিক স্তরে এমনকি জাতীয় স্তরেও যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ইংরেজির কোন বিকল্প নেই, তার উপর বর্তমান চারকিবাকরির বাজারে ইংরেজিটা যেন অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে সব কথা মাথায় রেখে চারিদিকে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে বা উঠছে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। এর ফলে অবস্থাপন্ন বাঙালি তো বটেই এমনকি মধ্যবিত্ত বাঙালিও তাঁদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য ছুটছে সে সব স্কুলে। ফলে, বাংলা ভাষা ও বাংলা মাধ্যম স্কুল দিন দিন উপেক্ষায় থেকে যাচ্ছে।
     দ্বিতীয়ত, বাংলা ভাষার বাচকসংখ্যা ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে। স্বাভাবিকভাবে, নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলা ভাষাটা দিন দিন আরও কম সঞ্চারিত হচ্ছে।   
     তৃতীয়ত, বাঙালি একটা বিরাট অংশের সন্তান নিজের মাতৃভাষাটাই পড়তে বা লিখতে পারে না। এমনকি বলার ক্ষেত্রেও হামেশাই ইংরেজি হিন্দি মিশিয়ে শব্দ উচ্চারণ করে। এতে তারা নিজেদেরকে তথাকথিত আধুনিক প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে। কিছু এ যে বাঙালি জাতির পক্ষে কতটা লজ্জার সে কথা বুঝতেও পারে না। 
     চতুর্থত, অন্ধ অনুকরণ, ইন্টারনেট, কম্পিউটারের ব্যাপক ব্যবহার এবং বিশ্বায়নের প্রভাব বাংলাভাষা সহ অন্যান্য মাতৃভাষার উপরও চরম কুঠারাঘাত প্রতিনিয়তই হয়ে চলেছে।
     পঞ্চমত, আধুনিক বিজ্ঞানে বাংলাভাষা বর্তমানে ব্রাত্য না হলেও শিক্ষিত বাঙালির অভিযোগ বাংলায় এখনও বিজ্ঞানের উপযুক্ত পরিভাষা নেই। ফলে, বাংলায় বিজ্ঞানচর্চা খুব বেশি সম্ভব নয়। 
ষষ্ঠত, সরকারের কঠোরতা না থাকার ফলে, প্রশাসনিক কাজকর্মে বাংলাকে এখনও অনুপযুক্ত বলেই ধারণা করা হয়ে থাকে। 
     সপ্তমত, আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনে ইংরেজি লেখকদেরই প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়। ভারতীয় সাহিত্যের প্রতিনিধি যেন তাঁরাই। বাংলা সাহিত্যের কবি লেখক গবেষকরা সেখানে বিশেষ প্রাধান্য পান না। 
অষ্টমত, আজকাল এই ধারনাটা অনেকের ক্ষেত্রেই বদ্ধমূল হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, ইংরেজি মাধ্যমে সন্তানকে লেখাপড়া না শেখালে সন্তানের ভবিষ্যৎ জীবন যেন মূল্যহীন হয়ে যাবে। ফলে, আজকাল বিশেষত শহরাঞ্চলের বাবা-মা'রা সন্তানকে ইংরেজি মাধ্যমে লেখাপড়া শেখাচ্ছেন। এতে, বাঙালি সন্তানের মুখ থেকে মাতৃভাষা বাংলাটাই হারিয়ে যেতে বসেছে।     
নবমত, পশ্চিম ইউরোপের ধনতান্ত্রিক বিকাশ এবং ঔপনিবেশিকতার মধ্য দিয়ে তাদের বিশ্বের দরবারে আধিপত্য কায়েম ভাষা সংকটের অন্যতম এক কারণ।
দশমত, ইংরেজিকে অধিক প্রাধান্য দেওয়া এবং মাতৃভাষার প্রতি অবজ্ঞা ও উদাসীনতার ফলে, বিশ্বের মিষ্টতম ভাষার প্রসার আজ রুদ্ধ হয়েছে বলা যায়।
     একাদশত, 'অফিসিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ' হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মিথ্যা প্রচার ও তার যথেচ্ছ প্রয়োগ এবং তা ব্যবহারের যে নানান কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে তাতে করে বাংলা ভাষা সহ অন্যন্য আঞ্চলিক ভাষা আজ সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে।
     দ্বাদশত, ভারতের অন্যান্য রাজ্যে যেমন শিক্ষার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে সেই রাজ্যের মূল ভাষাকে, আমাদের রাজ্যে সেই ধরণের বাধ্যতামূলক কোন ব্যবস্থা নেই। এ রাজ্যের প্রধান ভাষা বাংলা হওয়া সত্ত্বেও এখানে খুশি মতো যে কেউ অতি স্বাচ্ছন্দে হিন্দি নেপালি উর্দু কিংবা অন্য কোন ভাষার শিক্ষালাভ করে থাকে। 
     ত্রয়োদশত, সংবিধান স্বীকৃত দেশে আঠারোটি জাতীয় ভাষা থাকলেও ভাষার শ্রীবৃদ্ধি ও গবেষণার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কেবলমাত্র হিন্দি সহ অন্য এক দুটি ভাষার অর্থ ব্যয় করে থাকে। অথচ, বাংলা দেশের দ্বিতীয় ভাষা হওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার এ ক্ষেত্রে কোন অর্থ বরাদ্দই করে না।
     সময়ের দাবিকে মেনে নিয়েও এ কথা বলতে হয় যে, বিদেশি ভাষা-সর্বস্বতা কোন জাতির পক্ষেই গৌরবজনক নয়। ইংরেজি সারা বিশ্বের এমনকি সারা ভারতের যোগাযোগের ভাষা হয়ে উঠলেও আমাদের নিজেদেরকে জানার এবং বোঝার জন্য অবশ্যই চাই মাতৃভাষা বাংলাকে। মহাবিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু মতে, 'মানব জীবনে এমন কোন ভাব-চিন্তা নেই, যা বাংলা ভাষার মাধ্যমে প্রকাশ করা যায় না'। চীন, জাপান, সোভিয়েত রাশিয়া, বাংলাদেশ যদি তাদের মাতৃভাষায় সরকারি কাজকর্ম করতে পারে, তবে আমাদের রাজ্যে তা সম্ভব নয় কেন? এ প্রশ্ন আজ অনেকের।              
     তাহলে আমাদের করনীয় কি? বাংলা ভাষার এই সংকট কালে আমাদের কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত? আসলে, বাংলাভাষার উপর আক্রমণটা বহুমুখিন। আর আক্রমণটাও তীব্র। সুতরাং বাংলাভাষাকে রক্ষা করতে সর্বপ্রথমে বাঙালিকেই শিরদাঁড়া টানটান করে দাঁড়াতে হবে। অর্থাৎ ভাষা ব্যবহারকারী জনগোষ্ঠীকে হতে হবে সচেতন। এগিয়ে আসতে হবে ভাষাপ্রেমি মানুষকে। তাঁদের সক্রিয় এবং সম্মিলিত প্রয়াস ছাড়া তা সম্ভব নয়। তাই সমগ্র বাঙালি জাতিকেই হতে হবে একজোট। সঙ্গে নিতে হবে নতুন প্রজন্মকে। আর এ কাজটা করা দরকার একেবারে বিদ্যালয়ের প্রাথমিক স্তর থেকে। পাশাপাশি, বাংলাভাষার প্রতি আগ্রহ জাগাতে নতুন প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীদের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য আলোচনায় অংশগ্রহণে উৎসাহ জাগাতে হবে। তাদের অভ্যাস গড়ে তোলাতে হবে বাংলায় লেখালেখি করার। 
পাশাপাশি, চাই ভাষার জন্য অর্থের সংস্থান। চাই উপযুক্ত ডকুমেন্টেশন। আর চাই ভাষার বিশ্লেষণ এবং লিপিবদ্ধকরণ। মানুষ যাতে ভাষাকে পড়তে পারে তার ব্যবস্থা করা দরকার। এ জন্য উদ্যোগী হতে হবে ভাষাবিদদের এবং সর্বোপরি সংশ্লিষ্ট সরকারকে। সরকারের সদিচ্ছা এক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। 
       ইদানীং বাসে, ট্রেনে, অফিস-আদালতে, টেলিভিশনে, স্টেশনে বাংলা একেবারে কোণঠাসা। বাঙালির বারো মাসের তেরো পার্বণেও আজ অতীত ঐতিহ্য আর সেভাবে চোখে পড়ে না। সে সবে হিন্দি ইংলিশ সহ অন্যান্য ভাষার দাপট লক্ষ্য করা যায়। বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি আজ উপেক্ষিত। সুতরাং এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে গেলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। আর তা করতে হবে সরকারকেই। রাজ্যের প্রতিটি অফিসে, পঞ্চায়েত-পুরসভায়, ব্যাঙ্ক সহ অন্যান্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে, ডাক্তারি প্রেসক্রিপশনে এমনকি প্রত্যেকটি থানার কাজকর্ম যাতে বাংলায় হয় তা সুনিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া, অন্তঃরাজ্য বা কেন্দ্র–রাজ্য যোগাযোগের ক্ষেত্রে দোভাষীর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সর্বোপরি, সরকারি ও সরকার পোষিত সমস্ত বাংলা মাধ্যম বিদ্যালয়গুলির উপর পঠন-পাঠনের ক্ষেত্রে সরকারকে আরও বেশি করে নজর দিতে হবে এবং সরকারকে যা অবশ্যই করতে হবে তা হল, রাজ্যের সমস্ত স্কুলে বাংলাভাষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। এটা করতে পারলেই এ রাজ্যে বসবাসকারী বাঙালি তো বটেই অন্যান্য ভাষাভাষী মানুষেরও বাংলাভাষা না শিখে উপায় থাকবে না। মোটকথা, বাংলা ভাষায় দৈনন্দিন জীবন জীবিকার কাজকর্ম মাতৃভাষা বাংলাতেই আবশ্যিক করা প্রয়োজন। তা হলেই বাংলাভাষাকে বর্তমান সংকটের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। 



সূত্রঃ ১. মায়ের ভাষা- তহমিনা খাতুন ও প্রবীর দে 
    ২. ভাষা আন্দোলনে পঞ্চাশ বছর- আহমদ রফিক ও বিশ্বজিৎ ঘোষ
    ৩. বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি এবং অন্যান্য- অমলেন্দু দেবনাথ 

============================

অরুণ কুমার সরকার 
শিবমন্দির, বিধানপল্লী 
    শিলিগুড়ি 
ফোন- ৭০৭৬৭৮৭৫৮০ 




জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যার ডাউনলোড লিঙ্ক