google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re চন্দন মিত্রের কবিতা - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

সোমবার, ১৬ মার্চ, ২০২০

চন্দন মিত্রের কবিতা








নরকের দ্বার অথবা নাপাক তোমাকে


                   

জীবনের প্রতিটি পইঠায় ছায়া নিয়ে মায়া নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন
নাম ও ভূমিকায় দাঁড়িয়ে রয়েছ বলে মধুময় পৃথিবীর ধূলি
মধুময় আলো ও হাওয়া মধুময় চাঁদ ফুল পাখি গাছপালা
মধুময় মাঠ নদীনালা মধুময় বেদ বাইবেল ত্রিপিটক গীতা
মধুময় আবেস্তা কোরান মধুময় ঐশ্বরিক বাণী তবুও নিদান
দিয়ে নরকের দ্বার অথবা নাপাক তোমার জীবন যাতে
অনায়াসে জাহান্নম করা যায় অনায়াসে পালিত পশুর মতো
মুখাপেক্ষী করা যায়  তার আয়োজনে এইসব অনশ্বর
ঐশী লিপিমালা সাদরে গৃহীত হয় শতক গড়িয়ে যায় শুধু

ঐশী পুরুষগণ মায়াময় স্বয়ম্ভূ নয় কেউ মানবসন্তান
ভোগের জগতে তারা নেমে এসেছিল রমণীসঞ্জাত 
চিনেছিল দেহতরি রঙিলা মাঝির মতো এক বা অধিক  
সুরম্য হাল ধরে সোৎসাহে তরঙ্গ শিখরে উঠে বুঝেছিল 
প্রকৃতির ছিলা থেকে কেমন সটান ছিটকে যায়
সাধু ও শয়তান সম বেগে প্রেমের জোয়ার অভিমুখে 
ডুব দিয়ে বুঝে নেয় অধিক সত্য এই নশ্বর আয়ু
বানানো সত্যের থেকে মধুময় তবু তার অপার মহিমা
কীর্তনে গেলে তাচ্ছিল্য ছাড়া আর জোটে না কিছুই
সত্য আপাত স্বাদু নয় বলে মধুমধু বানানো সত্য মেনে 
মানুষেরা জানও দিতে পারে এই সত্য জেনে অবতারগণ
নিজ নিজ পাকশালে সত্য রেঁধে রেঁধে সুস্বাদু আচারের মতো    
অগণিত কানে কানে মগজে মগজে বাঁটোয়ারা করে 
বিনিময়ে পেয়ে যায় ঘি মধু খোবানি খেজুর পল পুরোডাশ 
তেলাদ্র বাদাম ও জলপাই যা আনে জেল্লা ও জোশ
দস্যুর মতো এক ঋকথ তরবারি ধরে তারা জিতে নেয়
তোমারই ঝরনাতলা যা রাখো গহীনে তুমি পরম আদরে 

তোমাকে সর্বোচ্চ মান দিতে গিয়ে মহামতি কোনো
এমন মলাট দেয় আপাদমস্তক যা তোমায় মোহময় 
অন্ধকারে নিয়ে গিয়ে পৃষ্ঠা থেকে ঘষে তোলে লিপিমালা
তুমি আঁধারের গায়ে চুমকি বসিয়ে তাকে নকশাদার
করেও ভেবেছ নরক-যাপন থেকে বুঝি অমরার আলো
উৎসারিত হবে একদিন কীভাবে বা উদ্ভাসিত হবে ভেবে
দিনরাত মন্থনের ক্লেদে ডুবে যেতে যেতে শেষে মধুময়
মেনে নিয়ে দিনগুলি অপেক্ষায় থেকে গেলে শেষ বিচারের
মাথায় মুকুট দিয়ে কেউ কেউ এমন উঁচুতে তুলে দিল
যেখানে কেবল দেবাংশীরা থাকে তুমি ভেবে নিলে সত্যি
সত্যি সব তোমাকে কেন্দ্রে রেখে ঘুরে যায় চক্রবৎ লীলা
অনাদিকালের একি লাবণ্যে পূর্ণ প্রাণ প্রাণেশ হে ভেবে নিলে
তোমাকে ছোঁয়ার সাধ্য রাখবে না কেউ আর যদি না সম্মতি
দাও তুমি অথচ যেদিন দাহ্য মাখিয়ে শোয়ালো তোমাকে
লেলিহান শিখার থাবায় তখনও তোমার ঘোর টিকে আছে
ভেবেছ বোধহয় ওভাবেও যাওয়া যায় অপাপ পদ্মের তলে   

এইসব বিধান প্রণেতা তোমাকে প্রিয়ম ভেবে পদ্য লেখেনি
তারা সব লিখে গেছে এমন সংহিতা যাতে তারা সুবিধার ক্ষীর
মন্থন করে বেশ মজা নিতে পারে দিতে পারে অলীকের ধাঁধা  
তোমাকেই বুঝে নিতে হবে তোমার আপন কোনো বিধাতাই নেই
সকলেই শিশ্নবাহী সুচতুর ঠগ ভাণ্ড ভেদ করে তারা অমৃত হাতাবে
তাই এত ছলাকলা মায়াময় স্তোকস্তুতি মধুমধু মন্ত্র-আয়াত    
এসব তোমার নয় তুমি জ্বালো আত্মদীপে অনিমিখ আলো 
তোমার জঠরে জন্মে মাতৃঘাতী সভ্যতা তোমাকেই মুছে দিয়ে
লিখে নিতে চায় নতুন কল্পকথা যেখানে তোমার ভূমিকা কেবল
গৌণ খেতের যে কেবল ফসল ফলিয়ে যাবে নির্বোধের মতো
তবু তুমি জীবনের প্রতিটি পইঠায় ছায়া নিয়ে মায়া নিয়ে
ভিন্ন ভিন্ন নাম ও ভূমিকায় দাঁড়িয়ে রয়েছ বলে মধুময় এ পৃথিবী 
 
=====০০০=====

চন্দন মিত্র
ভগবানপুর ( হরিণডাঙা )
ডায়মন্ড হারবার , দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ , ভারত
সূচক --- ৭৪৩৩৩১
চলভাষ --- ৯৩৩২৩৫৮৭৪৭