Featured Post

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

ছবি
   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন:  'লেখাটি স্বরচিত ও অপ্রকাশিত'। মেল আইডি :  printednabapravat@gm

গল্প ।। সুদীপ পাঠক



আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে  

সুদীপ পাঠক 


ব্রেকিং নিউজ ! 

নমস্কার আপনারা দেখেছেন নিউজ টোয়েন্টি ফার্স্ট আর সঙ্গে রয়েছি আমি তুহিনা । এই মুহূর্তে সবার আগে যে খবরের দিকে আমারা নজর রাখবো তা হলো আগরপাড়ানিবাসী বছর তেইশের তরুণী অঙ্কিতা দত্তের আত্মহত্যা । ইতিমধ্যেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় যথেষ্ট চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে । আমাদের সঙ্গে রয়েছে নিউজ টোয়েন্টি ফার্স্ট এর প্রতিনিধি রূপক পাত্র , সরাসরি তার কাছ থেকে বিস্তারিত জানবো । রূপক তুমি আমাদের  বলো ঠিক কি ঘটেছিল ? কেনো এই মর্মান্তিক পরিণতি হলো ?  

দেখো তুহিনা স্থানীয় পুলিশ সূত্রে প্রাথমিক ভাবে যা জানা যাচ্ছে তা হলো ঘটনার সূত্রপাত পাঁচদিন আগে অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার । মৃতা তরুণী অঙ্কিতা ও তার তিন সহপাঠী দেবলীনা সঞ্জয় এবং অর্ঘ্য এই চারজন বিকেলবেলা ব্যারাকপুরের মঙ্গল পান্ডে গার্ডেনের সংলগ্ন এলাকায় গঙ্গার ধারে বসে আড্ডা দিচ্ছিল বা গল্প করছিল । এরা সকলেই কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী । অঙ্কিতা এবং অর্ঘ্যর বাড়ী আগরপাড়ায় , দেবলীনা ও সঞ্জয়ের বাড়ী সোদপুরে। যেমনটা আমরা জানি যে দোল বা বসন্ত উৎসবে রং খেলাকে কেন্দ্র করে কলেজ ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টদের মধ্যে বিশেষ উন্মাদনা সৃষ্টি হয় । এই ব্যাপারটা চিরকালই ছিল । কিন্তু বর্তমানে যে ট্রেন্ড তৈরী হয়েছে তাতে দোল বা হোলির এক সপ্তাহ আগে থেকেই রং মাখানো শুরু হয়ে যায়। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি । বিশ্ববিদ্যালয়ে রং খেলার পর তারা আর কোনো ক্লাস এ্যাটেন্ড না করে সরাসরি চলে আসে ব্যারাকপুরে । সেখানে গঙ্গার ধারে বসে যখন তারা গল্প করছিল তখনই  হঠাৎ এক অপরিচিত যুবক এসে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ থেকে এক মুঠো আবির নিয়ে অতর্কিতে অঙ্কিতার গালে মাখিয়ে দেয় । ঘটনার আকস্মিকতায় ওরা চারজনেই যথেষ্ঠ হতচকিত হয়ে যায় । এর পর তারা ঐ যুবকের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে । কেনো সে একজন অপরিচিত মেয়ের গায়ে হাত দিলো এবং রং মাখালো এই নিয়ে কথা কাটাকাটি বচসা শুরু হয় যা চলতে চলতে প্রায় হাতাহাতির পর্যায় পৌঁছায় । তখন অঙ্কিতা বাকি তিন জনকে বাধা দেয় , ঝামেলা না বাড়িয়ে ছেলেটিকে ছেড়ে দিতে বলে । বাকিরা রাজি না হলেও অঙ্কিতা তাদের বোঝায় এর থেকে আরও বড়ো ধরনের অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে । অঙ্কিতার সন্মান রক্ষার্থেই তিন বন্ধু এতক্ষন ফাইট করছিল । তার কথাতেই তিনজন কিছুটা হলেও শান্ত হয় যদিও পুরোপুরি রাগ তখনও কমেনি। সেই সময় ঐ অপরিচিত যুবকটি আবার একটা অবাক করা কান্ড ঘটায় । সে সরাসরি অঙ্কিতাকে প্রপোজ করে বসে । সে বলে অঙ্কিতাকে তার খুব ভালো লেগেছে কারণ সে কাইন্ড হার্টেড সফ্ট স্পোকেন গুড হিউম্যান বিইং এন্ড অলসো ভেরি বিউটিফুল ইত্যাদি ইত্যাদি । তিনজন আবার ঐ যুবকের দিকে রে রে করে তেড়ে যায় ও তার ওপর চড়াও হয় । এবার অঙ্কিতা প্রথম থেকেই চুপ করে থাকে এবং বন্ধুদের সাংঘাতিক অবাক করে দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই সে ঐ যুবকের প্রেমের প্রস্তাবে সম্মতি জানায় । বন্ধুরা তাকে বারংবার বোঝাবার চেষ্টা করে সে খুব ভুল করছে কিন্তু সে তাদের  কথায় কর্ণপাত না করে ঐ যুবকের হাত ধরে হাঁটতে শুরু করে । অল্প কয়েক পা যাওয়ার পরই যুবকটি জানায় আসলে সে ও তার টিম তাদের নিজস্ব ইউ টিউব চ্যানেলের জন্য ফানি ভিডিও বানাচ্ছে । ইটস আ প্র্যাঙ্ক শ্যুটিং । এতক্ষণে পুরো বিষয়টা সকলের কাছে স্পষ্ট হয় এবং সবাই হাসতে থাকে । ঐ যুবকটি দেখায় কোথায় ক্যামেরা লুকিয়ে রাখা আছে । অঙ্কিতাকে কিন্তু খুবই বিমর্ষ হয়ে পড়তে দেখা যায় । সে বলে এটা কি ধরনের মজা ? আমি তো সিরিয়াসলি ভেবেছিলাম ! যুবকটি যখন তাদের সবাইকে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে ' হাই ' বলতে বলে ও হাত নাড়তে অনুরোধ করে তখন অঙ্কিতার মুখে এক চিলতে ম্লান হাসি লেগে ছিল বলে জানা যাচ্ছে । তুহিনা ... 

রূপক তাহলে কি একথা ধরে নেওয়া যেতে পারে যে মজার ছলে যে ভিডিও শ্যুট করা হয় এবং সেখানে অঙ্কিতার সঙ্গে যে প্র্যাকটিক্যাল জোকস্ করা হয় সেটা সে সহজে গ্রহণ করতে পারে নি ? তাকে ভীষণ মানসিক যন্ত্রণা বা আঘাত দেয় এবং তার জন্যই সে এরকম চরম সিদ্ধান্ত নেয় ? 

একেবারেই তুহিনা তুমি ঠিক বলেছ । শুধু তাই নয় অঙ্কিতার তিন জন ঘনিষ্ট বন্ধু অর্থাৎ দেবলীনা সঞ্জয় ও অর্ঘ্য ; ছেলেবেলা থেকে যারা একই স্কুল ও কলেজে পড়াশোনা করেছে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যাচ্ছে যে অঙ্কিতা বরাবরই নিজের চেহারা গায়ের রঙ মুখশ্রী ইত্যাদি নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগতো । তার কোনো প্রেমিক বা বয়ফ্রেন্ড ছিল না । আজ পর্যন্ত কেউ তাকে প্রপোজ করেনি বা সে করোর দিক থেকে কোনো এ্যাটেনশন পায়নি । ফলে মজা করে তাকে যে প্রস্তাব দেওয়া হয় সেটা তার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হয় ও সে সেটাকেই বাস্তব ভেবে আকঁড়ে ধরতে চায় । কিন্তু পরমুহূর্তেই সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায় । ভিডিও আপলোড হলে সেটি  ফেসবুক ও হোয়াটস এ্যাপের মাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হয় । শুক্রবার ইউনিভার্সিটিতে গেলে অঙ্কিতাকে তার ক্লাসমেটদের কাছ থেকে প্রবল ঠাট্টা ব্যঙ্গ বিদ্রুপের সন্মুখীন হতে হয় । সে মুখ বুজে সব সহ্য করে । পরের দিন শনিবার ছুটি ছিল কিন্তু সেদিনও রেহাই পায়নি সে , ফেসবুকে ও হোয়াটস এ্যাপে অসংখ্য ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য উড়ে আসতে থাকে । সারাদিন সে গুম মেরে ছিল । অপমান সহ্য করতে না পেরে ভোররাতে নিজের ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়নার ফাঁস গলায় দিয়ে ঝুলে পড়ে সে । তুহিনা ... 

আচ্ছা রূপক যে বিষয়টি জানা খুব জরুরী তা হলো যে বা যারা সেই প্র্যাঙ্ক ভিডিও শ্যুট করছিল অর্থাৎ সেই টিম ; তাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে কি ? 

তুহিনা শুরুতেই যে কথা বলা হয়েছে যে এই বিষয়টিকে ঘিরে এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে । এলাকার মানুষ যথেষ্ট ক্ষুব্ধ হয়ে আছে । তারা বেশ কিছুক্ষন থানা ঘেরাও করে রাখে ও পথ অবরোধ করে । তাদের অভিযোগ কি ভাবে বাইরে থেকে একদল উটকো চ্যাংড়া ছোঁড়ার দল এসে দিন দুপুরে সকলের চোখের সামনে এমন একটা বিদঘুটে কান্ড ঘটাতে পারে ? যার ফলে কি সাংঘাতিক খেসারতটাই না দিতে হলো ! এর জন্য প্রশাসনকে জবাবদিহি করতে হবে , এই দাবী তারা তোলে । পরে ব্যারাকপুর কমিশনারেট থেকে বড় সংখ্যায় বাহিনী এসে পরিস্থিতি সামাল দেয় । কিন্তু মুশকিল হলো যেহেতু ঐ ভিডিও শ্যুট করা হয়েছে সম্পূর্ণ খোলা আকাশের নীচে এবং গঙ্গার ধারে ফলে কোনো রকম সি সি টিভি ফুটেজের সাহায্য পাওয়ার আশা নেই । এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা যাচ্ছে ঐ ছেলেদের আগে কেউ এই অঞ্চলে দেখেনি । তারা এই এলাকায় পরিচিত মুখ নয় । অর্থাৎ তারা বহিরাগত এমনটাই মনে করা হচ্ছে । তুহিনা ...   

ধন্যবাদ রূপক ।
আজ রঙের উৎসবে সবাই যখন আনন্দে মেতে উঠেছে তখন বিবর্ণ হয়ে গেছে অঙ্কিতার পরিবার । নিছক পরিহাস বা তামাশার মূল্য চোকাতে গিয়ে অকালে ঝরে গেলো একটা তরতাজা প্রাণ। কিছু লাইকস আর শেয়ার পাবার লোভ কেড়ে নিলো নিষ্পাপ সহজ সরল একটা জীবন । যে জীবনের কাছে অঙ্কিতার অনেক প্রতিশ্রুতি ছিল হয়তো ? 

একটা ছোট্ট বিজ্ঞাপন বিরতীর পর ফিরে আসছি । সঙ্গে থাকুন দেখতে থাকুন ব্রেকিং নিউজ।
---------------------- 
সমাপ্ত  


 




SUDIP  PATHAK

Swapno Neer Apartment , 
3rd floor , flat no : 3 
321 , Purba Sinthee Road , 
Madhugarh , DumDum , 
Kolkata - 700030 .

Phone &  what's app number : 
9874919948







মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যার ডাউনলোড লিঙ্ক