Featured Post
অণুগল্প ।। জর্দাপান ।। দীনেশ সরকার
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
জর্দাপান
দীনেশ সরকার
সাইকেল নিয়ে বাড়ির গেটে ঢোকার মুখে সুরেশবাবুর মনে পড়লো, 'এই যাঃ, সরমার জন্য তো জর্দা আনা হয় নি। বাড়িতে ঢুকলে আজ আর রক্ষে নেই! নির্ঘাৎ কুরুক্ষেত্র!' মনে মনে বললেন, 'হারামজাদা, দশটা না পাঁচটা না একটা মাত্র বউ, তার একটাই নেশা ---- জর্দাপান। কালকেই বলেছে জর্দা ফুরিয়ে গেছে। আর তুই সেই জর্দা আনতে ভুলে গেলি! তোর বউয়ের কাছে ঝাড় খাওয়াই ভালো।'
একবার ভাবলেন, 'সাইকেলটা ঘুরিয়ে আবার বাজারে যাই।' পরক্ষণে ভাবলেন, 'এই সত্তর বছর বয়সে কাঠফাটা রোদ্দুরে তিন তিন ছয় কিলোমিটার সাইকেল চালানো কি মুখের কথা। বলবো, ভুলে গেছি, কাল এনে দেবো। ঝাড় যদি একটু খেতে হয় তো খাব। ভুল তো আমারই। 'দুগ্গা দুগ্গা করে সুরেশবাবু বাড়ির ভিতরে ঢুকলেন।
ব্যাগপত্র নামিয়ে বারান্দায় রাখলেন। কি ব্যাপার, সরমা তো রান্নাঘর থেকে এলো না। তবে কি সরমা বাথরুমে। নাঃ, জলের কোনো শব্দ নেই। তবে কোথায়? এমন সময় শোবার ঘর থেকে ভেসে এলো, 'আঃ, উঃ, ওরে বাবারে, মরে গেলাম রে!'
সুরেশবাবু শোবার ঘরে ছুটলেন। সরমা হাত দিয়ে গাল চেপে কাত হয়ে শুয়ে আছেন। জিজ্ঞাসা করলেন, 'কি হ'লো সরমা?'
সরমা বললেন, 'দাঁত। কালরাত থেকে অল্প-অল্প যন্ত্রণা হচ্ছিলো। তোমায় বলিনি। আজ তুমি বাজারে যাওয়ার পর যন্ত্রণাটা বেড়েছে। কট্কট্ করে কামড়াচ্ছে। উঃ, আঃ,ওরে বাবারে!'
সুরেশবাবু বললেন, 'তাহলে তুমি জর্দাপান কি করে খাবে?'
সরমা ঝাঁঝিয়ে উঠলেন, 'আমি মরছি দাঁতের যন্ত্রণায় আর তুমি জর্দাপানের খোটা দিচ্ছো!'
সুরেশবাবু মনে মনে বললেন, 'যাক, বাঁচা গেল।' মুখে বললেন, 'আমি পেয়ারাপাতা এনে জলে ফুটিয়ে দিচ্ছি। তুমি কুলকুচো করো। ব্যথা ক'মে যাবে। মনে মনে বললেন, 'ব্যথাটা আজ যেন থাকে।'
************************
দীনেশ সরকার
১৪০ ডি, হিজলি কো-অপারেটিভ সোসাইটি,
প্রেমবাজার, খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর --- ৭২১৩০৬
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন