google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re স্মৃতিকথা ।। গোবিন্দ বাবু ও টাইপরাইটার ।। সুশান্ত সেন - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩

স্মৃতিকথা ।। গোবিন্দ বাবু ও টাইপরাইটার ।। সুশান্ত সেন

 

গোবিন্দ বাবু  ও টাইপরাইটার

সুশান্ত সেন

 
গোবিন্দ বাবুর কথা হঠাৎ মনে পড়ে গেল। সাদা ধুতির ওপর একটা শার্ট চাপিয়ে সকাল দশটা সাড়ে দশটার সময় আমাদের বাড়িতে আসতেন। আর দাদুর নির্দেশ মত টাইপ করতেন একটা কালো রঙের টাইপরাইটারে। খুব বেশি কথা বলতেন না। আমাদের ভালোবাসতেন খুব।

এখন আর টাইপরাইটার এর কথা বেশির ভাগ নতুন প্রজন্ম জানেই না, এই যন্ত্রের ব্যবহার দিন দিন কমে যাচ্ছে । এটা একটা ছোটো যন্ত্র যার সাহায্যে এখন যেমন আমরা অক্ষর টাইপ করে ল্যাপটপে বা কম্পিউটারে বা মুঠোফোনে টাইপ করি , ঠিক সেই রকম টাইপ করে করে সাদা কাগজে লেখা হয়। সামনের দিকে একটা রোলার থাকে, আর যে কাগজটার ওপর টাইপ করা হয় সেই কাগজটা ওই রোলার এর ভেতর রোল করা থাকে। দুটো কি তিনটে কাগজ এক সঙ্গে ঢুকিয়ে আর মধ্যে কার্বন পেপার দিয়ে লেখার কপিও করে নেওয়া যায়।

আমাদের টাইপরাইটার টা  থাকতো একটা সুন্দর মাপ মত টেবিল এ। টেবিল এর এক পাশে
গোছান থাকত কাগজ আর কার্বন পেপার।

গোবিন্দ বাবু টাইপ করতেন আর আমরা , মানে আমি আর আমার দাদা , তখন আমাদের বয়স পাঁচ ছয় হবে , দাড়িয়ে দাড়িয়ে অবাক হয়ে সেই টাইপ করা দেখতাম।

কয়েক বছর পরে দাদুর টাইপ করার দরকার ফুরিয়ে গেল আর দাদু গোবিন্দ বাবুকে কলেজ স্ট্রিট এর এক প্রকাশকের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, আমরা জানলাম গোবিন্দ বাবু সেখানেই চাকরি করছেন।

একটু বড় হয়ে আমিও সেই টাইপরাইটার এ টাইপ করতে শিখলাম ,অবশ্য দু আঙ্গুলে। অনেকেই টাইপ করেই জীবিকা নির্বাহ করতেন, দ্রুত টাইপ করার ক্ষমতা চাকরির মাপকাঠি ছিল।

অনেকদিন পর বাড়ি সাফ করতে গিয়ে ঘরের এক কোণে সেই কালো টাইপরাইটার পড়ে আছে দেখে , এত কথা মনে পড়ে গেলো। গোবিন্দ বাবুর মত এত শান্ত সরল লোক ও বিরল হয়ে আসছে। গোবিন্দ বাবু মাঝে মাঝে আসতেন দাদুর সাথে দেখা করতে , কালের নিয়মে এক সময় তা বন্ধ হয়ে গেল।

--------------------------

সুশান্ত সেন
৩২বি, শরৎ বোস রোড কলিকাতা ৭০০০২০



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন