চিঠি ।। তপন মাইতি - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

Tuesday, December 19, 2023

চিঠি ।। তপন মাইতি



 চিঠি 

তপন মাইতি

 
প্রিয় বন্ধু মন,
মনের কথা বলার মত এখন আর কাউকে পাই না তেমন। আজ সুযোগ পেয়েছি। স্কুলের সেই দিনগুলো ছবির মত মনে পড়ে।আমি নতুন আর কি বলব তোকে? শীতের পোশাক নিয়ে বলতে গেলে কোন মানুষের শৈশব স্মৃতির সাথে মিলে যেতে পারে হুবুহু। জানিস মন, আমার বন্ধু তোর সাথে বড়দিনের পিকনিক। ধানকাটার দিন।দার্জিলিঙের তুষারপাত। পিঠে পুলির সংক্রান্তি। গাছের পাতা ঝরার দিনে নীল কলোনি লাল কলোনির মেলা পার্বণ। রোদের তেজ যত নরম হয়ে আসে। বলতে বলতে বছরের সবচেয়ে শীতলতম ঋতু চরম হয়ে পড়ে।থুত্থুরে বুড়ি তখন সবচেয়ে বেশি ঘরের ভেতর সময় কাটায়। তখন আমাদের কত হবে? পঞ্চম কি ষষ্ঠ! আমার দার্জিলিঙের মাসিমা সুন্দরবনে আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন। উনার হাতের কাজ ছিল দেখার মত।আসন বোনা, নক্সা কাঁথা, উলের সোয়েটার, মাফলার, মোজা, টুপি, কাগজের ফুল ঘর এসব তৈরিতে ওস্তাদ ছিলেন। আমার মায়ের ছেলেপুলে জন্মালে প্রথম প্রথম বাঁচতো না।তিন নম্বরে যখন আমি ভুমিষ্ট হলাম। তখন সবাই ভেবেছিল এও যাবে সকলকে কাঁদিয়ে। অনেক কষ্টে শিষ্টে মানসিক করে এক নম্বরে টিকে গেলাম এখনও পর্যন্ত সবার আশীর্বাদে। বুঝতে পারছিস কত যত্ন আত্তি আদর স্নেহে কোলে পিঠে মানুষ হয়েছি। মনে পড়ে। আমার মাসিমা শীতের একটা পুরো পোশাকের সেট দিয়েছিল। ছোটবেলায় ঠাণ্ডা লাগার ধাত ছিল আমার।হাতে বোনা গোলাপী হালকা সাদা টুপি হাত মোজা সোয়েটার  পাজামা মোজা। উফ কী আরাম! কী গরম তীব্র শীতে। মনে আছে আমার এসব দেখে সে কী আড়ি মনের। মনের  মা মেরেছিল খুব। আমি তোকে মাফলার দিয়েছিলাম তোর মা তা ফিরিয়ে দিয়েছিল। সেই সময় সাদা কালো তোলা ছবি দেখলে মনে হয় লাট সাহেব। সেই পোশাক গুছিয়ে রেখেছিলেন মা।এতদিনের পর কী একটা প্রয়োজনে...মনে পড়েছে পুরোনো জমিজমার দলিল কাগজপত্র খুঁজতে গিয়ে দেখতে পেলাম। বহু যত্নে আছে বাল্যকালের শীত পোশাক মায়ের হাতের ছোঁয়ায়। এখন মা এবং মাসির কথা লিখছি তোর মাধ্যমে। নিজের একান্ত সময়ে আপিসের অবসরের ব্যালকনিতে। উত্তরে মেসেজ করিস। 
 
==================
 
 
 

তপন মাইতি
গ্রামঃ পশ্চিম দেবীপুর; পোঃ দেবীপুর; থানাঃ মৈপীঠ কোস্টাল; জেলাঃ দঃ২৪পরগণা; পিন-৭৪৩৩৮৩; পশ্চিমবঙ্গ। ভারত।

No comments:

Post a Comment