Featured Post

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

ছবি
   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন:  'লেখাটি স্বরচিত ও অপ্রকাশিত'। মেল আইডি :  printednabapravat@gm

ছোটগল্প ।। স্যার ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল


স্যার

ভুবনেশ্বর মন্ডল


স্যারের মৃত্যু সংবাদ শুনে মর্মাহত হল দীপাঞ্জন।  অনার্সে তিন বছর ওনার কাছে বাংলা পড়েছে সে। কি অসাধারণ পড়াতেন স্যার! মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনত সবাই। পিন পড়লেও ক্লাসে আওয়াজ শোনা যেত। খুব রাশ ভারী ও অহংকারী ছিলেন স্যার। কথা কম বলতেন। এমনকি কলিগদের সঙ্গেও দূরত্ব রেখে চলতেন। ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গেও তেমন মিশতেন না। তবে পড়ানোটা ছিল অসাধারণ,ওনার পাঠ শুনলে আর বই পড়ার দরকার হতো না।
                 স্যার মানে রমেন স্যার, এই মফঃস্বল কলেজে পড়িয়েছেন প্রায় ৩৪ বছর। দীপাঞ্জন এর আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। তিনটে বাড়িতে টিউশনি পড়িয়ে পড়াশুনা ও মেশে থাকার খরচ যোগাড় করতে হতো। রমেন স্যার কয়েকজন স্টুডেন্টকে স্পেশাল করে বাড়িতে অর্থের বিনিময়ে পড়াতেন। যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো তারাই কয়েকজন ওনার কাছে পড়তো। স্যারের টিউশন ফি সে সময়ে অন্যান্য স্যারের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ছিল। দীপাঞ্জন এর ইচ্ছে ছিল স্যারের কাছে স্পেশাল কোচিং নিয়ে অনার্সে ভালো রেজাল্ট করবে। তাই একদিন সন্ধ্যেবেলা বন্ধু সমরেশকে নিয়ে হাজির হলো স্যারের বাড়ি। স্যার তখন চা খাচ্ছিলেন। স্যারকে বলতেই স্যার মৃদু মৃদু হেসে দীপের পিঠে হাত দিয়ে বললেন "বাবা দীপ সে কি করে সম্ভব! আমাকে অনেক বইপত্র কিনতে হয়। সময় ব্যয় করতে হয়। পড়াশুনা করতে হয়। ১০০ টাকা কম নিয়ে আমার পক্ষে পড়ানো সম্ভব নয়।"কথাটা শুনে চোখে জল আসে দীপের । সে অনেক আশা নিয়ে এসেছিল। তার আর্থিক অবস্থা বিবেচনা নিশ্চয়ই শেয়ার করবেন। কিন্তু তা তো হলো না। একটা ভীষণ মন খারাপ নিয়ে সেদিন মেশে ফেরে দীপ। জীবনে অর্থ যে কি পরমার্থ সেটা সে হাড়ে হাড়ে টের পায়।
                      সেই রমেন স্যার আজ মারা গেলেন। গলায় ফুলের মালা পরিয়ে, হরি ধ্বনি দিয়ে ,ধূপের গন্ধ ছড়িয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শ্মশানে। দীপের ভীষণ মন খারাপ করছে। যতই হোক স্যার তো! শিক্ষাগুরু, পিতৃ তুল্য। ওনার ক্লাসে পড়ানোর সেই কণ্ঠস্বর ভেসে আসছে কানে। এক একটি শব্দ যেন মন্ত্র। কানের ভেতর দিয়ে মরমে প্রবেশ করছে। তবে দীপ এখন একটা স্কুলে পড়ায়। ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে জনপ্রিয় শিক্ষক। এখন তার কোন অভাব নেই। বেশ কিছু দুঃস্থ মেধাবী ছেলেমেয়েকে সে এখন বিনা বেতনে পড়ায়। ওদেরকে পড়িয়ে ওর আত্মা তৃপ্ত হয়। আসলে ছাত্র জীবনের সেই দগদগে ক্ষতটা ভুলতে পারেনি দীপ। ওর মনে হয় তার মত অর্থের অভাবে পড়তে না পেয়ে আর কোন দীপ যেন চোখের জল না ফেলে। সেদিনের কথা ভাবলে খুব কষ্ট হয় দীপের। স্যারের তো অভাব কিছু ছিল না। একটু পয়সা কম নিয়ে, মানবিক হয়ে পড়ালেই পারতেন। এই যে দীপ এখন দুঃস্থ মেধাবীদের বিনা পয়সায় পড়াচ্ছে এটা যেন স্যারের হয়ে সে প্রায়শ্চিত্ত করছে। যতই হোক শিক্ষক তো পিতার মতো। শাস্ত্রে নাকি বলে পুত্র পিতাকে পূত নরক থেকে উদ্ধার করেন। স্যারের সেদিনের সেই ভুল সংশোধন করে যাবে দীপ আজীবন। যাতে ইহলোক বা পরলোকে স্যারকে কোন পাপ আর স্পর্শ না করে।
                  আর কিছুক্ষণ পরেই স্যারের নশ্বর দেহটা শ্মশানের চিতায় পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। ছাই হয়ে যাবে যত জাগতিক চাওয়া-পাওয়া। কিচ্ছু থাকবে না আর! সবই ক্ষণস্থায়ী বুদবুদ।একটা শূন্যতার গান এখন গ্রাস করছে দীপকে। তবু দীপের কানে এখনও বেজে চলেছে স্যারের সেই মন্ত্রের মতো কণ্ঠস্বর আর চোখের সামনে ভাসছে বিশ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া কলেজের সেই ক্লাসরুম।

______________________

ভুবনেশ্বর মন্ডল
সাঁইথিয়া লেবু বাগান
পোস্ট সাঁইথিয়া
জেলা বীরভূম
পিন নাম্বার ৭৩১২৩৪

                          

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যার ডাউনলোড লিঙ্ক