Featured Post

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

ছবি
  "নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।  ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)।  আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব

প্রবন্ধ : সবিতা বিশ্বাস

বাঁচাও সবুজ বাঁচাও জীবন



প্রকৃতির প্রতি, পরিবেশের প্রতি অবহেলা যে কি
ভয়ানক প্রাকৃতিক দুর্যোগ বয়ে নিয়ে আসছে তা আমরা বারবার প্রত্যক্ষ করছি তবুও তার থেকে
শিক্ষা গ্রহণ করছি না।

সবুজ ধ্বংস করার ফলে বিশ্বের তাপমাত্রা ক্রমবর্ধমান। গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বিষুবীয় ও মেরু অঞ্চলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন ক্রমবর্ধমান উষ্ঞতার ফলে বিষুবীয় ও মেরু অঞ্চলের জমে থাকা বরফ গলে সমুদ্রের জলস্তর 30-40 সেন্টিমিটার বেড়ে যাবে। এর ফলে উপকূলের বিরাট অংশ সমুদ্রে তলিয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস 2019 র প্রতিপাদ্য"beat air pollution" বায়ু দূষণ প্রতিহত করো। গতবছর অর্থাৎ 2018 র  বিষয় ছিল " প্লাস্টিক দূষণ প্রতিহত করো"। এই দুটি বিষয় একে অন্যের সাথে সংপৃক্ত। এর সাথে সংপৃক্ত বর্তমান নিবন্ধটি |

বিশ্ব উষ্ঞায়নের জন্য যেমন সবুজ ধ্বংস দায়ী তেমনভাবে দায়ী প্লাস্টিক। ক্লোরিন যুক্ত প্লাস্টিক বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ নির্গত করে যা ভূগর্ভস্থ ও ভূপৃষ্ঠীয় জলের সাথে মিশে যায়। মাটিতে বিভিন্ন ধরনের অণুজীব বাস করে যা প্লাস্টিক অণুর ভাঙনে সাহায্য করে। এই অণুজীবের মধ্যে "সিউডোমোনাস(pseudomonas)" নাইলন খাদক ব্যাকটিরিয়া অন্যতম। এই ব্যাকটিরিয়া" নাইলোনেজ" এনজাইম ক্ষরণের মাধ্যমে নাইলন অণুকে ভেঙে ফেলে। জীবাণু বিয়োজ্য প্লাস্টিক ভাঙনের মাধ্যমে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয়। এই মিথেন গ্রীন হাউস গ্যাস। যা বিশ্ব উষ্ঞায়নের জন্য দায়ী।

গ্রীন হাউস গ্যাসে কার্বন ডাই অক্সাইড 50%, মিথেন 20%, সি এফ সি 10%, নাইট্রাস অক্সাইড 10%, এবং অবশিষ্ট 10% কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রোজেন পার অক্সাইড ও কিছু অন্যান্য গ্যাস থাকে।
রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার, পলিথিন, প্লাস্টিক ও রঙ তৈরির কারখানা থেকে ক্লোরোফ্লোরা কার্বন( সি এফ সি) নির্গত হয়। এই গ্যাস বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তরকে ধ্বংস করে।


 এই গ্যাস ওজোন স্তরে ছিদ্র সৃষ্টি করতে পারে। এটা হলে উদ্ভিদ জগৎ ও প্রাণী জগৎ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবার আশঙ্কা। ক্যানসার সহ বিভিন্ন রোগ অস্বাভাবিক
রকম বেড়ে যেতে পারে।

প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশে দীর্ঘস্হায়ী ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। প্রভাব ফেলে মানুষের শরীরেও। থাইরয়েড হরমোনের অতিরিক্ত ক্ষরণের জন্য প্লাস্টিক দূষণ পরোক্ষ ভাবে দায়ী।  পানীয় জলও প্লাস্টিক মুক্ত নয়।  2017 র সেপ্টেম্বরে আমেরিকার মিনসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক কলের জলের নমুনা পরীক্ষা করেন। তাদের হিসেবে আমরা ফি বছর গড়ে তিন থেকে চার হাজার আণুবীক্ষণিক প্লাস্টিক কণা পানীয় জলের সঙ্গে গলাধঃকরণ করছি।
বায়ুদূষনের জন্য ও দায়ী প্লাস্টিক। আর বায়ুদূষনের ফলে বিশ্বের 70 লক্ষ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে প্রতি বছর। বাতাসে অক্সিজেন ছাড়া অন্যান্য গ্যাস ও ধূলিকণার পরিমান বেড়ে গেলে বায়ু দূষিত হয়। আমরা সকলেই জানি প্রাণীকুল শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে অক্সিজেন গ্রহণ ও কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত করে। অন্যদিকে গাছ কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ ও অক্সিজেন নির্গত করে।
কিন্তু পৃথিবীতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও উন্নয়নের নামে নির্বিচারে সবুজ ধ্বংস করার ফলে বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে।
৩.৫ বিলিয়ন কিউবিক মিটার কাঠ ব্যবহার করে প্রতিবছর ৮ হাজার বর্গহেক্টর বনভূমি ধ্বংস করছে পৃথিবীর মানুষ | বনভূমি ধ্বংস হবার ফলে পৃথিবীর উত্তর দক্ষিন ও পূর্ব পশ্চিমের বহু বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হয়েছে | এশিয়া, আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকার বিস্তৃত এলাকায় ২০ হাজার হেক্টর ভূমিতে বন সৃজন করা
অত্যন্ত প্রয়োজন | বৃক্ষ আবহাওয়াকে নাতিশীতোষ্ণ রাখে | গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়া রোধ করে |

সম্প্রতি আমাজন, অস্ট্রেলিয়ায় দাবানলে মানুষ সহ বহু বন্যপ্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত | কিছু বন্যপ্রাণী বিলুপ্তির পথে |
একথা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখেনা, গাছ মানুষের প্রকৃত বন্ধু | মানুষের জীবন ও জীবিকার জন্য গাছের প্রয়োজন অপরিহার্য | বনভূমি জীবন রক্ষাকারী ভেষজ ওষুধের সরবরাহকারী | বিভিন্ন শিল্পদ্রব্যের কাঁচামাল যেমন রেয়ন, পেন্সিল, কাগজের মন্ড, দেশলাইয়ের কাঠি, রাবার ইত্যাদি বৃক্ষ থেকেই আসে |

একটি বয়স্ক বৃক্ষ দশ জন মানুষের বার্ষিক অক্সিজেনের চাহিদা পূরণ করে। বাতাস থেকে ষাট পাউন্ডের বেশি বিষাক্ত গ্যাস শোষণ ও দশটি এ সি র সমপরিমাণ তাপ নিয়ন্ত্রণ করে। গাছ শব্দদূষণ ও রোধ করে। এক হেক্টর পরিমাণ মাঝারি বন দশ ডেসিবল শব্দ হ্রাস করতে পারে। তাছাড়া সবুজ চোখকে আরাম দেয় ও মনকে উৎফুল্ল রাখে।
সবুজ ধ্বংস করার ফলে অনবরত ভূমিক্ষয় বাড়ছে | নদীর ভাঙন বাড়ছে | অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি,  খরা, ঝড়, বন্যা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের নিত্যসঙ্গী।

একটি ভারসাম্য পূর্ণ পরিবেশের জন্য জীব ও অজীব প্রতিটি উপাদান গুরুত্বপূর্ণ। ভৌতিক, রাসায়নিক ও জৈবিক কারণে উপাদানগুলির যে কোন একটির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটলে সামগ্রিক পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে ও পরিবেশ দূষণ হয়।
এ থেকে বাঁচতে হলে রেল, সড়কপথের পাশে, নদীবাঁধের দুপারে, বিলের ধারে, বসতবাড়ির আশেপাশে প্রচুর গাছ লাগাতে হবে।
নির্বিচারে গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। সড়ক সম্প্রসারণের প্রয়োজনে প্রচুর বৃক্ষ নিধণ চলছে | কিন্তু তার পরিবর্তে প্রয়োজনীয় বৃক্ষ রোপনে চূড়ান্ত গাফিলতি দেখা যাচ্ছে সর্বস্তরে | যার প্রভাব মারাত্মক |  চোরাইপথে বৃক্ষ নিধণ রোধে সতর্ক থাকতে হবে সরকারি বেসরকারি সব স্তরে | ইঁটভাটায় কাঠ পোড়ানো নিষিদ্ধ করতে হবে। বাড়িতে কাঠের বিকল্প হিসেবে গ্যাস ঘুঁটে ব্যবহার করতে হবে। পলিথিন ব্যাগের পরিবর্তে  পাটের তৈরি ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে।

সবুজ বাঁচাতে হলে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে গাছের চারা বিতরণ করে দায়িত্ব পালন করলে হবেনা। মনে রাখতে হবে একমাত্র গাছই পারে এই পৃথিবীকে বিভিন্ন দূষণের হাত থেকে বাঁচাতে।
সারা জীবনে একটিই গাছ লাগান । তার পরিচর্যা করুন।   প্রতি বছর হাজার হাজার গাছের চারা বিতরণ করা হয়। কিন্তু সঠিক পরিচর্যার অভাবে তারা শিশুকালেই মৃত্যুর কোলে আশ্রয় নেয়।
সরকারি,  বেসরকারি,  ব্যক্তিগত উদ্যোগে গাছ লাগিয়ে  তার দেখভাল করতে হবে। তবেই এই পৃথিবী আগামী শিশুর বাসযোগ্য হয়ে উঠবে।

আগেই বলেছি একটা পূর্ণ বয়স্ক বৃক্ষ দশটি মানুষকে অক্সিজেন সরবরাহ করে।
তাই কথা নয় কাজে দেখাই--

" গাছ  লাগাই গাছ বাঁচাই।" এই গাছ আমাদের মাথা উঁচু করে বাঁচার মন্ত্র শেখাবে |
             ----------------




সবিতা বিশ্বাস
প্রযত্নে – লন্কেশ্বর বিশ্বাস
গ্রাম + পোস্ট – মাজদিয়া (বিশ্বাসপাড়া)
(শুভক্ষণ লজের পাশে )
জেলা-নদীয়া পিন-৭৪১৫০৭
ফোন-৮৯০০৭৩৯৭৮৮
ভারত
ই মেইল- sraybiswas@gmail.com

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

জনপ্রিয় লেখা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৭তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৪তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩১ এপ্রিল ২০২৪

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৬তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩০ আগস্ট ২০২৩