গদ্য : গৌর গোপাল সরকার - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

Friday, January 17, 2020

গদ্য : গৌর গোপাল সরকার



আধখানা দেওয়াল




ট্রেনে কালীঘাট থেকে রামপুরহাট আসছেন স্বামী কিনু শাসত্রী।  মাতৃসাধক, তান্ত্রি, বাক্ সিন্ধ পুরুষ। রামপুরহাটে নেমেছেন। সঙ্গে রহিত তার একমাত্র শিষ্য। অক্ষয়চন্দ্র সরকারের আন্তরিকতা কামনা করে টোটো গাড়ি করে তারাপীঠ।  শ্মশানে ঠাঁই নিলেন বামদেবের  সমাধির পাশে। গণক ঠাকুর মাঝে মাঝে ভক্ত আসে, হাত বা কপাল দেখে অনেক ভবিষ্যৎ বাণী করেন। বহু ভক্ত শিষ্য অবাক হয়ে যায়। খুব তাড়াতাড়ি নামছড়িয়ে পড়ে। অবাক হয়ে সবাই ভাবতে থাকে, কলি যুগের বামদের। শিষ্য বাড়ি আসা যাওয়া করে। জমে যায় তাঁর পশার। হটাৎ একদিন হাঁসন গ্রামে শিষ্য বাড়ি বেড়াতে আসে, শিষ্যদের মাঝে উপদেশ দিতে দিতে হটাৎ বলে, আমার তারাপীঠ আশ্রমে আগুন ধরে গেছে।  সত্যি দেখা যায়, তার আশ্রমে আগুন লেগেছে। বাবা কে ভক্তি শ্রদ্ধা দিয়ে  অম্লান মাস্টারের বৌ নিমন্ত্রণ করে।ভাতের ভিতর সব তরিতরকারিমাংস ভরে খাবার পরিবেশন করে। তিনি বলেন,আমি বাক্ সিন্ধ, আমাকে অপমান করা হচ্ছে। তখন মাস্টার মহাশয়ের বৌ বলেন, আপনি ধ্যানে,তারাপীঠ আশ্রমে আগুন লেগেছে বলতে পারছেন, আর এই সহজ সতসত্যটা বুঝতে পারছেন না, সব ভাতের ভিতর ভরা আছে।
বাবার মাথা নিচু হয়ে যায়।
সে কোনো রকমে সেখান থেকে পালা

সাধু মানুষের কথা আলাদা। কলি যুগে সাধু সমাজে নয়, সাধারণ সমাজের এর অভাব নেই। এদের কোনো জাত বা ধর্ম নেই। মানবতা কোন্ তলানিতে ঠেকেছে?
এক গরীব ভদ্রলোক তার মেয়ের জন্ম দিনে বহুভদ্রলোক কে নিমন্ত্রণ করেছিলেন। খাবার মেনুতে সব কিছুর সঙ্গে আইসক্রিম আছে। আমিও নিমন্ত্রিত ছিলাম। একজন করে লোক একটি করে আইসক্রিম নিয়ে পাশে একজন লাল শাড়ি পরা সুন্দরী সবাইকে কপালে একটি করে সিঁদুর দিয়ে তবে একে একে চলে যাচ্ছেন। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, দাদা, আপনাদের অতিথি পরায়ণতা খুব সুন্দর। বিষয় তো কোথাও দেখিনি। আরে, মশাই বলেন কি? সব অতিথি টোতিথি বাদ দিন। সবাই চার-পাঁচটা  করে আইসক্রিম নিয়ে নিচ্ছে। তাই।

কলিযুগে আধখানা দেওয়ালনা আঁচালে বিশ্বাস নেই
-------------------------------------------------

গৌর গোপাল সরকার, নতুন হাসপাতাল পাড়া, রামপুরহাট বীর ভূম 
ফোন নং ৭৬০২৫০১১৪৮
ফোন নং ৮১০১৪৮৪২১৫